পথের ধারে সাদা স্পাইডার লিলির দেখা
বসন্ত বিদায় নিচ্ছে। মাথার উপর গনগনে সূর্য বলে দিচ্ছে গ্রীষ্মের আগমনী বার্তা। শিল্পী কিশোর কুমারের একটি গানের কথা মনে পড়ে গেল- “নাম না জানা অনেক ফুলই পথের ধারে ফোটে, জীবনটা যায় ঝরে ঝরে ফুলদানি না জোটে, দু’পায়েতে মাড়িয়ে গেলেও নেই যে অভিমান।” তেমনই নয়নাভিরাম ফুল সড়কের পাশে অবহেলায় বেড়ে উঠেছে আনারস সদৃশ। ডগায় মাকড়সার জালের মতো ফুটেছে দুধ সাদা রঙের ফুল। ফুলটি বিলুপ্তির পথে নাম স্পাইডার লিলি।
রবিবার (৯ এপ্রিল) সকালে নওগাঁ-নাটোর মহাসড়কের পাশে দেখা মিলে ফুলটির। রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়ায় সড়কের পাশ থেকে মিষ্টি ঘ্রাণ ছড়িয়ে। মূলত বর্ষা মৌসুমের ফুল স্পাইডার লিলি।
ফুলের হরেক প্রজাতির মধ্যে লিলি শুভ্র শোভন ফুল। অনেক জাতের লিলি ফুল রয়েছে, তবে বেশির ভাগ লিলির বাংলা নাম নেই। নানা ধরনের লিলি ফুলের মধ্যে স্পাইডার লিলির দেখা মেলে কম। স্পাইডার লিলি ফুলের আদিনিবাস আমেরিকা। তবে আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় কষ্ট সহিষ্ণু এই ফুলগাছটি এ দেশের বন-জঙ্গল, পাহাড়ি টিলা, রাস্তা-ঘাটে অপ্রতিরোধ্য ভাবে বেড়ে ওঠে। মিষ্টি ঘ্রাণ ও সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য বাগান, অফিস, পার্ক, উদ্যান, সড়ক-রাস্তা-ঘাট ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান শোভা পায় এই ফুল গাছ।
স্পাইডার লিলি গাছ দেখতে অনেকটা আনারস গাছের মতো। তবে গাছের পাতা আনারস গাছের পাতার মতো শক্ত ও কাঁটাযুক্ত নয়। স্পাইডার লিলির মসৃণ পাতা অনেক পুরু সুচালো হয়।
ফুটন্ত স্পাইডার লিলি গাছের ডাঁটার অগ্রভাগে মাকড়সার জালের মতো ফুল ফুটে। ফুলের আগায় ফিতার মতো সরু ছয়টি পাঁপড়ি থাকে। ফুটন্ত ফুল দেখতে অনেক নজরকাড়া। কন্দ ও কন্দ চারার মাধ্যমে স্পাইডার লিলি গাছের বংশ বিস্তার হয়। এর চারা কোনো স্থানে একবার রোপণ করা হলে দ্রুত গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ঝোপ আকার ধারণ করে।
আমাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ ফুলের স্থানীয় পরিচিতি গো-রসুনের ফুল। এ ফুলগাছ ঔষধি উদ্ভিদ হিসেবে কবিরাজরা ব্যবহার করেন। কবিরাজরা লিভারের চিকিৎসায় স্পাইডার লিলি গাছের গোড়ার কন্দ ব্যবহার করেন। নয়নাভিরাম ফুলটি বিলুপ্তির পথে হাঁটলেও আজকাল সৃজিত উদ্যান ও শখের বাগানে দেখা মেলে।
এসএন