দাদুর হাতে বাঁশের লাঠি, নাতির হাতে কাঠের ব্যাট
কংক্রিটের খাঁচায় বন্ধী জীবনে দাদুর সঙ্গ পাওয়া আর হয়ে ওঠে না অনেক নাতি-নাতনিরই। তাঁদের সঙ্গে সময় কাটানোরও প্রয়োজন রয়েছে তাদের। বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে নওগাঁ স্টেডিয়াম মাঠে 'দাদুর হাতে বাঁশের লাঠি নাতির হাতে কাঠের ব্যাট' নিয়ে মাঠে প্রবেশের দৃশ্য ধরা পড়ে। নাতি সিমান্ত পাবলিক স্কুলের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ। দাদু শহরের সরদার পাড়া এলাকার মৃত উদা সরদারের ছেলে আহম্মদ হোসেন (৮৫)।
কথা হয় নাতি আব্দুল্লাহ'র সঙ্গে। ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, 'ছুটির দিন বাদে আম্মু স্কুলে নিয়ে যায় আসে। স্কুল শেষে বাড়িতে খাওয়া দাওয়া করে বিকেল বেলা দাদুর হাত ধরে গত তিন সপ্তাহ ধরে নওগাঁ বেসিক ক্রিকেট একাডেমি (এনবিসিএ) জিল্লুর রহমান স্যারে কাছে ক্রিকেট প্র্যাকটিস শিখছি।
দাদু আমাকেও দেখে রাখছে অন্য দিকে দাদুও আমাদের খেলাধুলা দেখে অনেক আনন্দে সময় কাটছে'। আরোও বলেন, 'সাকিবুল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম আমার প্রিয় খেলোয়াড়। বড় হয়ে তাদের মতো হতে চাই। এই কারণে মাঠে ক্রিকেট প্র্যাকটিস করছি'।
দাদু আহম্মদ হোসেন বলেন, আমাদের শৈশব টা কেটেছে অনেক কষ্টে ও অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে। ছোট থেকেই কাজের মধ্যে ছিলাম। খেলাধুলা করতে না পারার যে কষ্ট সেই কষ্ট আমার নাতিরা যেন না পায় সে কারণেই প্রতিদিনই সঙ্গে করে মাঠে নিয়ে আসছি। ইট-পাথরের খাঁচায় বন্ধী জীবনে বাড়িতে বসে মোবাইল টেপার চাইতে মাঠে গিয়ে খেলাধুলা করুক। আর আমিও বাড়িতে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠেছি নাতির সঙ্গে এখানে এসে খোলা আকাশের নিচে মুক্তবাতাসের গন্ধ নিতে পারছি।
এ প্রসঙ্গে নওগাঁ সিভিল সার্জন মেডিকেল অফিসার ডা. আশীষ কুমার সরকার ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, বর্তমান সময়ের এই কঠিন বাস্তবতায় শিশুরা যেখানে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসে (মোবাইলে) আসক্ত হয়ে বিভিন্ন ধরনের মানসিক, শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে এবং বয়োবৃদ্ধরা বয়সের ভারে নুইয়ে পরছেন, একাকীত্ব বরণ করছেন সেখানে দাদু-নাতির বন্ধুর মত এগিয়ে চলা হয়তোবা আমাদের এই সমাজ ব্যবস্থাকে পরিবর্তনে আশা জাগানিয়া বার্তা দেবে।দুই প্রজন্মের দুজনের এভাবে এগিয়ে চলা আমাদের রোগ-শোক মুক্ত সুস্থ শরীর ও মন গঠনে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করবে।
এএজেড