মানবতার জয় হোক স্লোগানে সাকিবের সাইকেল যাত্রা
মানুষ প্রকৃতি জয়ের নেশায় মত্ত হয়েছিল। আর প্রকৃতিকে জয় করতে পারলেও অবসান হলো না সে নেশার। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণে জলে, স্থলে, অন্তরীক্ষে, মহাশূন্যে আধিপত্য বিস্তার শুরু করল। মানুষের এই বিজয় রথ মানুষকে এক ভয়ংকর গভীর সংকটে ফেলে দিল। এ সংকট বিশেষ কোনো দেশের নয়, নয় বিশেষ কোনো জাতির। এ সংকট এককভাবে মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির। যত দিন যাচ্ছে ততই প্রাণ, প্রকৃতি ধ্বংসে ব্যস্ত মানবজাতি।
তবে প্রাণ, প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে ব্যতিক্রমী এক নেশায় মত্ত হয়েছেন এক যুবক। তিনি মানবতার জয় হোক স্লোগানে বাংলাদেশের জেলায় জেলায় সাইকেল যাত্রা করে সাধারণ মানুষের মাঝে প্রাণ ও প্রকৃতি রক্ষণের বার্তা পৌঁছে দেন। তিনি হলেন চট্টগ্রামের ২০ বছর বয়সী সাইদুর রহমান সাকিব। তিনি চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র। সাইদুর রহমান সাকিব চট্টগ্রামের লৌহগড়া উপজেলার দরবেশহাট এলাকার সফিক আহমেদের ছেলে।
উত্তরের জনপদ জয়পুরহাটের রাস্তার পাশ দিয়ে সাইকেল চালাচ্ছেন সাকিব। পথে সাইকেল থামিয়ে অনেকের সঙ্গে কথা বলছেন, আবার সাইকেল চালাচ্ছেন। কেউ তাকে চা পানের আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ তাকে দাঁড় করিয়ে কথাও বলছেন। তাকে ঘিরেই যত আগ্রহ সবার।
সাইদুর রহমান সাকিবের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি টেকনাফ থেকে তেতুঁলিয়া পর্যন্ত ৬৪ জেলা সাইকেলে ভ্রমণ করবেন। নিজ জেলা চট্টগ্রাম থেকে গত ১৬ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করে তেতুঁলিয়া হয়ে ৩২ জেলা ভ্রমণ করে বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে জয়পুরহাট পরিভ্রমণ শেষ করেন তিনি।
সাইদুর রহমান সাকিব বলেন, মানবতার জয় হোক। অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষেরও প্রাণ আছে। আবার রাস্তার পাশে অসহায় প্রাণীদেরও জীবন আছে। কিন্তু তাদের আর্তনাদ কেউ বুঝে না। রাস্তায় যেসব অসহায় প্রাণী আছে, অনেক সময় মানুষ তাদেরকে নানাভাবে নির্যাতন করে। আবার নির্মমভাবে হত্যাও করে। এর প্রতিবাদে সাইকেল যোগে দেশের সব জেলা ভ্রমণের জন্য ২৩ দিন আগে নিয়ে বের হয়েছি। গত ১৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম থেকে সাইকেল নিয়ে ৩৩ দিন অতিক্রম করে ৯ ফেব্রুয়ারি জয়পুরহাট জেলা অতিক্রম করে নওগাঁ জেলার পথে রওনা হয়েছি। চলার পথে প্রকৃতির সৌন্দর্য আর উঁচু-নিচু পথ পাড়ি দিয়ে ৩৩ জেলার পথে সাইকেল চালিয়ে বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে জয়পুরহাট পৌঁছায়।
এরপর সেখান থেকে তিনি নওগাঁ জেলার দিকে রওনা হন। সাকিব বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় সংস্কৃতিতে ভিন্নতা খুঁজে পাচ্ছি, এই বিষয়টা অনুভব করছি।
বিভিন্ন জেলা ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, এই পর্যন্ত ৩২টি জেলা ঘুরেছি। এর মধ্যে সিলেট ও জয়পুরহাট জেলার মানুষ বেশি আন্তরিক। তারা অনেক বেশি অতিথিপরায়ণ। এখানকার মানুষের জীবনযাপন ও সংস্কৃতি দারুণ। পথে পথে মানুষ দাঁড় করিয়ে চা পানসহ আপ্যায়ন করেছে।
এসজি