বসন্তের আগেই দল মেলেছে পলাশ-শিমুল
শীতের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। শাখে শাখে দল মেলে ধরেছে শিমুল-পলাশ। মাঘ শেষ না হতেই সবুজ নগরী রাজশাহী সেজেছে বসন্তের সাজে। বাহারি ফুলের কুঁড়িগুলো মেলে ধরেছে নিজেদের। একদিকে হাল্কা শীত, অপরদিকে বাসন্তী মলয়। তাতে মিশে আছে ফুলের সুবাস। গাছে গাছে নব পল্লবের দেখা মিলছে।
দক্ষিণ দুয়ার গেছে খুলে। প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠেছে প্রকৃতির সন্তানেরাও। ফুলে ফুলে বেড়েছে মৌমাছির বিচরণ। বাতাসে কান পাতলে শোনা যায় তাদের গুঞ্জন, পাখিদের কলকাকলী। প্রকৃতিপ্রেমীরা ভিড় জমাচ্ছেন নগরীর পর্যটন স্পটগুলোতে। এরমধ্যে অন্যতম নগরীর হৃদপিণ্ড পদ্মাপাড় এলাকা।
রাজশাহী কলেজ, নিউ ডিগ্রি কলেজ, সিমলা পার্ক, কালেক্টর মাঠ, বুলনপুর, ভদ্রা রোড, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ পদ্মাপাড় ঘুরে দেখা যায়, মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে শিমুল-পলাশ ফুল। এরসঙ্গে রয়েছে আম মুকুলের সুঘ্রাণ। সঙ্গে রয়েছে পাখিদের কুজন। ঝরাপাতার উড়াউড়ি প্রাণে দোলা দেয়। যে সৌন্দর্যের মোহনায় হারিয়ে যায় প্রকৃতিপ্রেমীরা। মনে ভেসে আসতে পারে, কবি নজরুলের ‘বসন্ত মুখরিত আজি’, রবীন্দ্রনাথের ‘বসন্তের ফুল গাঁথল/ নীল দিগন্তে’ ‘ ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায়’, ‘ওরে ভাই ফাগুন লেগেছে বনে বনে’, ‘রাঙিয়ে দিয়ে যাও’ গানগুলো।
রাজশাহী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াসিন আলী জানান, রাজশাহী শহর পুরোটাই তার দেখা। আর রাজশাহীর শহরের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা পদ্মাপাড়, সিঅ্যান্ডবি মোড় ও তার আশেপাশের এলাকাগুলো। বসন্তের প্রারম্ভে এসব জায়গা অসাধারণ রূপ ধারণ করে। এখন যদিও শীতকাল। তবে বসন্তের যে ছোঁয়া প্রকৃতিতে বিদ্যমান তা সত্যিই উপভোগ্য।
পদ্মাপাড়ে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে এসেছিলেন তানিয়া খাতুন। তিনি জানান, বন্ধুদের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই পদ্মাপাড়ে আসেন তিনি। রাজশাহীর মানুষের কাছে বিনোদনের জন্য পদ্মাপাড়ই অগ্রগণ্য। আর এখন শীতকাল হলেও শীতের অনুভূতি এখন মলিন। প্রকৃতিতে এখনই বসন্তের আবহ। আর এই আবহের মধ্যে নজরুলের একটি গান মনে বারংবার ভেসে আসছিল তার। সেটা হলো- ‘হলুদ গাঁদার ফুল, রাঙা পলাশ ফুল, এনে দে এনে দে নইলে, বাঁধব না, বাঁধব না চুল। আর এই গান শুনিয়েই তার ক্লাসমেটের কাছে ‘সার্কিট হাউজে’ ফুটে থাকা ফুল থেকে নিজের জন্য একটা ফুলের আবদারও তুলেছিলেন তিনি। হাজারো ফুলের রূপ-সৌরভে অবগাহন করেছেন তিনি।
এসএন