সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

‘টুরিওয়ালি’ তছলিমা এখন সফল উদ্যোক্তা

হস্তশিল্প আঁকড়ে ধরেই জীবন সংগ্রামে এগিয়ে গেছেন পাবনার চাটমোহরের তছলিমা খাতুন। তালপাতা দিয়ে তৈরি নানা রকমের ঝুড়ি তৈরি করে তা বিক্রি করেই চলত ছতলিমার সংসার। তাই আশপাশের লোকজন অবহেলা করেই বলত ‘টুরিওয়ালি’। কিন্তু একদিনের অবহেলিত টুরিওয়ালি এখন হয়ে উঠেছেন সফল উদ্যোক্তা।

১৭ বছরের সংগ্রাম শেষে সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্যোক্তার খাতায় নাম উঠেছে তছলিমার নাম। তিনি শুধু নিজের জীবনমান বদলে ফেলেননি, বর্তমানে নিজ এলাকার দেড় শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থানে ভূমিকা রেখেছেন। নিজ এলাকার গ্রামীণ নারীর ক্ষমতায়নেও আলোকবর্তিকা হয়েই কাজ করছেন জীবন সংগ্রামে অদম্য এই নারী।

রাজশাহী বিভাগীয় উদ্যোক্তা সম্মেলন ও পণ্য প্রদর্শনী মেলায় ‘তছলিমা হ্যান্ডিক্রাফটস বিডি’ স্টলের স্বত্বাধিকারী তছলিমা খাতুন অংশ নিয়েছেন। সেখানেই কথা হয় তার সঙ্গে। এসময় নিজের সংগ্রামী জীবনের কথা জানান।

তাছলিমা খাতুনের বাড়ি পাবনার চাটমোহর উপজেলায়। অতি দরিদ্র একটি পরিবারে ১৯৭৫ সালে জন্ম তছলিমার। মায়ের সহযোগী হিসেবে ৭ বছর বয়স থেকেই হস্তশিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তছলিমা। তছলিমার মা অন্যের বাড়িতে ধান ভাঙানোর কাজ করতেন। এক মণ ধান ভাঙলে এক কেজি চাল পেতেন। তা দিয়েই খেয়ে না খেয়ে চলতো তাদের সংসার। এদিকে ধান ভানলে তার মায়ের পায়ের গোড়ালি ফেটে রক্ত বের হতো। পরে নানির পরামর্শে পরিত্যক্ত তালপাতা দিয়ে হস্তশিল্প বানিয়ে দিতেন মা। আর তা বিক্রির কাজ শুরু করেন তছলিমা। পঞ্চম শ্রেণির পাস করার পর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায় তছলিমার।

তিনি বলেন, ‘আমার জীবন অনেক কষ্টের। ৩ টাকার বইয়ের জন্য পড়াশোনা করতে পারিনি। পড়াশোনা তেমন জানি না বলে খুব বেশি উন্নতিও করতে পারিনি। তবে এখন অনেক ভালো আছি। ভাইদের পড়ালেখা করিয়েছি। বাবার চিকিৎসা করাচ্ছি। মা ২০১৫ সালে মারা গেছেন।’

১৯ বছর বয়সে বিয়ে হয় তছলিমার। যৌতুক দিতে না পারায় তার উপর চলত শারীরিক মানসিক নির্যাতন। এক পর্যায়ে অসহ্য হয়ে তিন ছেলেমেয়ে নিয়ে ফিরে আসেন বাবার বাড়ি। স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। বড় ছেলে পাবনায় কলেজে পড়েন। ছোট ছেলে এবার এসএসসি তে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।

এই উদ্যোক্তা বলেন, আমি চাই, আমার ছেলেরা শিক্ষিত হোক। মানুষের দ্বারে দ্বারে চাকরির জন্য না ঘুরে এই হস্তশিল্পকে পুঁজি করে উদ্যোক্তা হোক। বিদেশে এগুলো বিক্রি করে বড় হোক। কারণ এটা আমার কাছে লক্ষ্মী। আমি চাই আমার ছেলেরাই যেন মানুষের কর্মসংস্থান করতে পারে। ছেলেরাও এবিষয়ে আগ্রহী।

তিনি বলেন, ‘সাত বছর বয়সে মায়ের বানানো তালপাতার ঝুড়ি বিক্রি করেছি ট্রেনে। এরপর নিজের বানানো ঝুড়ি বিক্রি করতে বাবার সঙ্গে গেছি চাপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, খুলনায়। সারাদিন শহরে বিক্রি করে হোটেলে খেয়ে প্ল্যাটফর্মে ঘুমাতাম। চাঁপাইনবাবগঞ্জে একটি কড়ইগাছের নিচে আমাকে রেখে বাবা সারাদিন এসব জিনিস বিক্রি করতেন। সারাদিন পরে সন্ধ্যা বেলায় এসে বাবা ১ টাকা দিয়ে ভাত কিনে খাওয়াতেন। এভাবেই কষ্টে দিন গেছে।’

১৯৯১ সালে ঢাকা হ্যান্ডিক্রাফট ও এটিএম নামে কোম্পানি তছলিমার হস্তশিল্প পছন্দ করে তারা বড় অর্ডার দেয়। কিন্তু অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে সে সময় কিছু সমস্যা হয়ে যায়। পরে ১৯৯৬ সালে তার মা ঢাকায় গিয়ে ওই অফিসে যোগাযোগ করে আবারও কাজ শুরু করেন। এখনো তাদের সঙ্গে কাজ করছেন।

তছলিমা বলেন, আমাদের তৈরি পণ্য কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে যায়। আমাকে তারা কম্পিউটারে বিদেশি ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী নকশা দেখায়, সেটি আমি বানিয়ে দিই। আমাকে যে ডিজাইনই দেওয়া হোক আমি বানাতে পারব।

তছলিমা খাতুন আরও বলেন, মে ও জুন মাসে পাকশির চর থেকে সংগৃহীত কাশিয়া, তালপাতা, জুট, চুল বাঁধার ফিতা ও প্লাস্টিকের সংমিশ্রণে নানা ডিজাইনে পণ্য তৈরি করেন তিনি। শিক্ষিত না হওয়ায় সরকারি বা বেসরকারি কোনো প্রশিক্ষণ নিতে পারেননি।

এসএন

 

Header Ad
Header Ad

নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করেছেন এনসিপির মূখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে নাহিদ ইসলামের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, "শুভ জন্মদিন। বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী নাহিদ ইসলাম।" তার এই মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

 

Header Ad
Header Ad

কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ছবি: সংগৃহীত

বিশেষজ্ঞদের সুপারিশের ভিত্তিতে দেশে কিছু লোডশেডিং চালু রাখার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, কিছু লোডশেডিং না দিলে ভর্তুকির পরিমাণ বেড়ে যাবে। তবে লোডশেডিং যাতে সহনীয় পর্যায়ে থাকে, সে চেষ্টা করা হবে। তিনি জানান, শহর ও গ্রামে সমানভাবে লোডশেডিং কার্যকর করা হবে।

সচিবালয়ে গ্রিড বিপর্যয় নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা জানান, বর্তমানে দেশে সাড়ে ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। গরমের কারণে আগামী দিনে বিদ্যুতের চাহিদা ১৮ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তখন চাহিদা মেটাতে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন আরও বাড়ানো হবে। তিনি আরও বলেন, যে হারে এসি স্থাপন করা হচ্ছে, সে হারে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হয়নি। অনেকে অকারণে লাইট, ফ্যান ও এসি চালু রাখায় বিদ্যুৎচাহিদা বেড়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল ও খুলনায় ২৬ এপ্রিল যে গ্রিড বিপর্যয় ঘটে, তার তদন্তে আট সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে বুয়েটের উপ-উপাচার্য আবদুল হাসিব চৌধুরীকে। কমিটি সাত কর্মদিবসের মধ্যে গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ, দায়ী ব্যক্তিদের ভূমিকা ও ভবিষ্যতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে সুপারিশ করবে।

মেট্রোরেল এক ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকার কারণও তদন্তে নেওয়া হয়েছে। বুয়েটের অধ্যাপক শামসুল হককে প্রধান করে একটি আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপদেষ্টা বলেন, মেট্রোরেল বন্ধ থাকার মূল কারণ ছিল বিদ্যুৎ সংকট।

এ সময় মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, দেশে গ্যাসের উৎপাদন কমে যাচ্ছে এবং এলএনজি আমদানির আর্থিক সামর্থ্যও কমে গেছে। ফলে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।

পিজিসিবি ও পিডিবি জানায়, আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ সার্কিট লাইনের ৪০০ কিলোভোল্টের দুটি তার কাছাকাছি আসায় শর্ট সার্কিট হয় এবং সমস্যার সৃষ্টি হয়। এর ফলে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ১৫টি জেলা—খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, ভোলা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী—প্রায় ১৫ মিনিট থেকে ৯৬ মিনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। তবে সন্ধ্যার পর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে এবং রাত সাড়ে আটটার পর পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়।

Header Ad
Header Ad

গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের পূবাইলের হায়দরাবাদ এলাকায় একাধিক শিশু-কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগে এক মসজিদের ইমাম গণপিটুনির শিকার হয়ে পরে কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত ইমামের নাম রহিজ উদ্দিন (৩৫), তিনি চাঁদপুর জেলার মতলব থানার বাদশা মিয়ার ছেলে এবং হায়দরাবাদ আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সকালে গাজীপুর মহানগরীর হায়দরাবাদ এলাকায় এক কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগ ওঠে রহিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এতে উত্তেজিত এলাকাবাসী তাকে গাছে বেঁধে ব্যাপক মারধর করে, এমনকি তার গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে এবং নির্যাতিত এক কিশোরের বাবার দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়।

পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। একই রাতের (২৭ এপ্রিল) দিবাগত ৩টার দিকে রহিজ উদ্দিন কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জেলা কারাগারের জেল সুপার রফিকুল কাদের জানান, মৃত ইমামের শরীরে গণপিটুনির চিহ্ন ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, গণপিটুনিতে গুরুতর আহত হওয়ার ফলেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মৃত্যুবরণ করেন।

পূবাইল থানার ওসি এসএম আমিরুল ইসলাম বলেন, রহিজ উদ্দিন স্থানীয় স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছেলেদের নিজের থাকার কক্ষে এনে কম্পিউটার গেমস ও মোবাইল গেম খেলার সুযোগ দিতেন এবং কোমল পানীয় খাওয়াতেন। ওই পানীয় সেবনের পর অচেতন হয়ে পড়লে তিনি তাদের বলৎকার করতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এক কলেজছাত্রের কাছ থেকে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে তাকে গণধোলাই দেয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য
ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়াতে লিগ্যাল নোটিশ
পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে ৭টি অস্ত্রবাহী বিমান পাঠালো তুরস্ক
বিএনপির ৩ সংগঠনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু
জামিন পেলেন মডেল মেঘনা আলম
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন করলো সরকার
নিরীহ কাউকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না: আইজিপি
পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস
ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি