চলনবিলের মাছের শুঁটকির চাহিদা ব্যাপক
খাল, বিলসহ নিচু অঞ্চল থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু হয়েছে। এই সময়টাতে মাছ ধরতে ও শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন উল্লাপাড়ার শুঁটকি ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা।
জানা গেছে, চলনবিল অধ্যুষিত উল্লাপাড়া উপজেলার বড়পাঙ্গাসী, উধুনিয়া ও মোহনপুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকার নানা স্থানে শুঁটকি উৎপাদনে চাতাল তৈরি করেছেন শুটকি ব্যবসায়ীরা। অনেকে আবার বাড়ির উঠানে মাছ রোদে শুকিয়ে শুঁটকি প্রস্তুত করছেন। স্থানীয় নারী-পুরুষ মাছ পরিষ্কার করে চাতালে দিয়ে শুকিয়ে, আবার তা পরিষ্কার করে খাবার উপযোগী করছে। গ্রামাঞ্চলের নারী-পুরুষ শুটকি তৈরিতে কাজ করছে। তবে এ সব কাজে নারী শ্রমিকই বেশি। কারণ নারী শ্রমিকরাই বেশি দক্ষ বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
শুঁটকি ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম জানান, এ ব্যবসায় অনেক লাভ। দেশব্যাপী চলনবিলের মাছের শুঁটকির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বিল এলাকায় এ বছর প্রচুর পরিমাণে টেংরা, পুঁটি, বাতাসী, চেলা, মলা, ঢেলা, টাকি, চিংড়ি, বোয়াল, চিতল, শিলং, রুই, কাতলাসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া এখন মাছের দামও অনেক কম। তাই সবাই শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
আরেক ব্যবসায়ী সাত্তার বলেন, ৩ কেজি কাঁচা মাছ থেকে এক কেজি শুঁটকি তৈরি হয়। প্রতি মণ কাঁচা মাছ তিন হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা মূল্যে কেনা হয়। এ সব শুঁটকি প্রকারভেদে প্রতি মণ ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হয়। মাছগুলো চাতালে নেওয়ার পর বাজারজাত করতে মাসখানেক সময় লাগে।
শ্রমিক ছুরমান হোসেন বলেন, এই সময়টাতে আমরা মাছ পরিষ্কার ও চাতালে শুকানোর কাজ করি। এখন চলনবিল অঞ্চলের শুঁটকি শ্রমিকরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শুঁটকি তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। এ কাজে পুরুষ শ্রমিকদের ২৫০-৩০০ টাকা দেওয়া হয়।
গৃহবধু মালেকা, জোসনাসহ অনেকে জানান, শুঁটকির মৌসুমে আমরা মাছ কাটা, শুকানো, বাছাইয়ের কাজ করে থাকি। এতে আমাদের বাড়তি কিছু আয় হয়। একজন নারী শ্রমিককে এই কাজে ১৫০-২০০ টাকা মজুরি দেওয়া হয়।
উল্লাপাড়া উপজেলা মৎস কর্মকর্তা বায়েজিদ আলম জানান, উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে এখন পুরোদমে শুঁটকি প্রস্তুত হচ্ছে। এ সব অঞ্চলের নারী-পুরুষ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শুঁটকি তৈরির কাজ করছেন। এ বছর উপজেলায় ৬৫ মেট্রিক টন শুঁটকি উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
আরএ/