কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ৪৬টি কচ্ছপের বাচ্চা অবমুক্ত
কক্সবাজারের উখিয়ার সোনারপাড়া সৈকতে অবস্থিত বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের হ্যাচারিতে কাছিমের ডিম থেকে ফোটা ৪৬টি বাচ্চা সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে।
একযোগে ডিম পাড়তে আসার জন্য বিশ্ব বিখ্যাত অলিভ রিডলি কাছিম বা জলপাই রঙা সামুদ্রিক কাছিমের ডিম থেকে দেশে প্রথম বারের মতো ইনসিটু বা স্বস্থান পদ্ধতিতে সফলভাবে বাচ্চা ফুটিয়েছে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বোরি) বিজ্ঞানীরা।
মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টায় সৈকতে কাছিমের ছানাগুলো সাগরে অবমুক্ত করার সময় উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব প্রকৌশলী জিয়াউল হাসান, বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ও সমুদ্র বিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হাসিবুল ইসলাম, সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া ও তরিকুল ইসলামসহ বোরির অন্যান্য বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা ও মিডিয়াকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব প্রকৌশলী জিয়াউল হাসান বলেন, বঙ্গোপসাগরে কাছিমের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য বোরির বিজ্ঞানীরা চলতি বছর কাছিম নিয়ে গবেষণা শুরু করেছে। তারা দেশে প্রথমবারের মতো ইনসিটু বা স্বস্থান পদ্ধতিতে সফলভাবে হ্যাচারিতে বাচ্চা ফুটিয়েছে। এরমধ্যে হ্যাচারিতে ফুটে বের হওয়া ৪৬ বাচ্চা সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে। আর সবগুলো বাচ্চাই সৈকতে অবমুক্ত করার পর সফলভাবে পায়ে হেঁটে সাগরের পানিতে চলে যায়।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ও সমুদ্র বিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর বলেন, আগের দিনও হ্যাচারিতে ফোটা একটি বাচ্চা পরীক্ষামূলকভাবে সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে এবং সেটি সৈকত থেকে হেঁটে সাগরের পানিতে যাত্রা করেছে। এ ছাড়া দুইদিন আগে সমুদ্রযাত্রায় অক্ষম আরও দুটি বাচ্চা বোরির ক্যাম্পাসে অবস্থিত গবেষণাগারের হ্যাচারিতে অবমুক্ত করা হয়েছে এবং বাচ্চাগুলো সুস্থ ও সবল রয়েছে।
তিনি জানান, গত ২১ মার্চ কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণে সোনারপাড়া সৈকতে তিনটি কাছিম ডিম পাড়ে। এরমধ্যে দুটি কাছিমের ডিম একদল লোক চুরি করে বিক্রি করে দেয়। খবর পেয়ে বোরির বিজ্ঞানীরা একটি কাছিমের ডিম স্বস্থান পদ্ধতিতে বা যেখানে ডিম পেড়েছে সেখানেই সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে, যেখানে ছিল ৯০টি ডিম। আর এসব ডিম থেকে গত তিনদিনে এ পর্যন্ত ৪৯টি বাচ্চা ফুটেছে। বাকি বাচ্চাগুলো ফোটার পর ধীরে ধীরে সাগরে অবমুক্ত করা হবে।
বোরি মহাপরিচালক জানান, কাছিম নিয়ে গবেষণার জন্য বোরিতে কোন প্রকল্প বা বরাদ্দ নেই। তবে কক্সবাজারের জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বোরির বিজ্ঞানীরা কাছিম নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন। আশা করা যায়, পরবর্তী অর্থবছরে এবিষয়ে একটি গবেষণা প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
এসএন