জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা দ্রুত শেষ করতে রাজি নয় বিএনপি। দলটি মনে করে, এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাড়াহুড়ো নয়, প্রয়োজন ধাপে ধাপে ও গভীরভাবে আলোচনা। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির তৃতীয় দিনের বৈঠকে এ কথা বলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং প্রতিনিধিদলের প্রধান সালাহউদ্দিন আহমেদ।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা আলোচনাটি দ্রুততার সঙ্গে শেষ করতে চাই না। কারণ, এটি রাষ্ট্র, সংবিধান এবং রিপাবলিকের ব্যাপার—তাড়াহুড়োর বিষয় নয়।”
তিনি আরও জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া স্প্রেডশিট নিয়ে আলোচনার বিষয়ে এখনো কোনও অগ্রগতি হয়নি। “এ নিয়ে কিছু ধোঁয়াশা রয়েছে, কমিশনও তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় আগ্রহ দেখায়নি,” বলেন সালাহউদ্দিন। তবে তিনি জানান, রিপোর্ট অনুযায়ী ধারাবাহিকভাবে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা চলছে এবং আজকের মধ্যে আলোচনার একটি ধাপ শেষ করার আশা রয়েছে।
সংবিধান সংশোধন ও সংস্কারের বিষয়ে বিএনপি কিছু বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে বলে জানান তিনি। এর মধ্যে রয়েছে সংবিধানের ৮, ৯ ও ১০ অনুচ্ছেদ বাতিলের প্রস্তাব—যার মাধ্যমে ধর্ম নিরপেক্ষতা সংক্রান্ত ধারাগুলো বাদ দেওয়ার বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে একমত হয়েছে দলটি।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতায় আমরা বিশ্বাসী। সুপ্রিম কোর্টের জন্য আলাদা সচিবালয় গঠনের যে প্রস্তাব এসেছে, তা আমরা ইতিবাচকভাবে দেখছি। তবে সব কিছুই হতে হবে আইনানুগ ও সাংবিধানিকভাবে।”
তৃতীয় দিনের আলোচনায় বিএনপি পক্ষ থেকে বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত বিষয়ের ওপর আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিএনপির চার সদস্যের এই প্রতিনিধিদলে সালাহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে রয়েছেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাঈল জবিউল্লাহ, আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং সাবেক সচিব আবু মো. মনিরুজ্জামান খান।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, বিচারপতি এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।