মহাশ্বেতা দেবীকে নিয়ে সিনেমা, তার চরিত্রে গার্গী
ছবি: সংগ্রহ
প্রখ্যাত বাঙালি কথাসাহিত্যিক ও মানবাধিকার আন্দোলনের কণ্ঠস্বর মহাশ্বেতা দেবী। প্রান্তিক মানুষের জীবন ও সংগ্রাম নিয়ে মহাশ্বেতা দেবী লিখেছেন সাড়াজাগানো নানা গল্প ও উপন্যাস। এবার প্রয়াত কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীরই জীবন ও সংগ্রাম নিয়ে তৈরি হচ্ছে সিনেমা। অরিন্দম শীলের পরিচালিত ছবিটির নাম ‘মহানন্দা’। বছরের প্রথমদিনেই সামনে এল এই ছবির পোস্টার। পোস্টারে বয়স্ক মহাশ্বেতা দেবীর রূপে দেখা গেল গার্গী রায়চৌধুরীকে।
ভারতের একাধিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে এই ছবির ঘোষণা হয়েছিল। ২০২১ সালের গোড়ার দিকে ছবির শ্যুটিং শুরু করেও করোনা আবহে তা বন্ধ করে দিতে হয়। অবশেষে জুন মাস থেকে ফের শুরু হয়েছিল ‘মহানন্দা’-এর শ্যুটিং। অবশেষে নতুন বছরে এলো আনুষ্ঠানিক পোস্টার।
ফ্রেন্ডস কমিউনিকেশন-এর ছবিতে কথাসাহিত্যিক ও মানবাধিকার আন্দোলনকর্মী মহাশ্বেতা দেবীর ভূমিকায় দেখা যাবে গার্গী রায়চৌধুরীকে। বিজন ভট্টাচার্যের আদলে বিধান ভট্টাচার্যের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে দেবশঙ্কর হালদারকে।
জানা গেছে, সিনেমাটিতে ‘ঝাঁসীর রাণী’ উপন্যাসটির ভূমিকা থাকবে । ‘ঝাঁসীর রাণী’ উপন্যাস লেখার সময় মহাশ্বেতা দেবী ঝাঁসির বিস্তীর্ণ এলাকায় ঘুরে ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তা ছাড়া আদিবাসী সমাজের সঙ্গেও তার যোগসূত্র তৈরি হয়েছিল। মানবাধিকার রক্ষাতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন বাংলার প্রথম সারির কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী। সেসবই এই সিনেমায় উঠে আসবে বলে জানিয়েছেন পরিচালক।
১৯২৬ সালের ১৪ জানুয়ারি ব্রিটিশ-শাসিত অবিভক্ত ভারতের ঢাকায় জন্ম হয় মহাশ্বেতা দেবীর। তার বাবা ছিলেন কল্লোল আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত বিখ্যাত কবি মনীশ ঘটক। বিখ্যাত চিত্রনির্মাতা ঋত্বিক ঘটকের ভাইঝি ছিলেন মহাশ্বেতা দেবী। তার স্বামী নাট্যকার বিজন ভট্টাচার্যও ছিলেন ভারতে আইপিটিএ আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ।
তার লেখা ‘হাজার চুরাশির মা’, ‘তিতুমীর’, ‘অরণ্যের অধিকার’ ইত্যাদি অবিস্মরণীয় রচনা হিসেবে বাংলা সাহিত্যে স্বীকৃত। তার লেখা উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে ‘রুদালি’-র মত কালজয়ী সিনেমা।
প্রসঙ্গত, ১৯৬২ সালে মহাশ্বেতা দেবী ও বিজন ভট্টাচার্যের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। সেসময় ছেলে নবারুণ ভট্টাচার্যের কথা ভেবে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন মহাশ্বেতা দেবী। তিনি আত্মহত্যাও করতে যান। যদিও চিকিৎসকদের চেষ্টায় বেঁচে যান। আর 'মহানন্দা' ছবিতে মহাশ্বেতা দেবী, বিজন ভট্টাচার্যের পাশে নবারুণ ভট্টাচার্যের চরিত্রটিও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে।