নতুন জীবনের খোঁজে তনুশ্রী দত্ত
৩৮ বছরের বলিউড অভিনেত্রী ও মডেল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী নাগরিকত্ব আছে। ঝাড়খন্ডে জন্ম নেওয়া নারী। অনিন্দ্য সুন্দরী তনুশ্রী দত্ত ২০০৪ সালে ‘ফেমিনা মিস ইউনিভার্স'। তখন তার বয়স ২০। সে বছরই ‘মিস ইউনিভার্স’-এর বিশ্ব আসরে তার দেশ ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সেরা ১০ জনের মধ্যে ছিলেন। লাতিন আমেরিকার দেশ ও আমাজনের অংশ ইকুয়েডরে হয়েছে ১৩৩টি দেশের সেরা সুন্দরীদের মেলাটি।
এরপর থেকে বলিউডে অভিনয়। ২০০৫ থেকে পরের পাঁচটি বছর অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে হিন্দি ছবিগুলোতে অভিনয় করে গিয়েছেন। এখনো একটি আকর্ষণ। ২০১৮ সাল থেকে কটি বছর ধরে বলিউডের আলো থেকে দূরে আছেন তিনি। কারণ হলো, জুম টিভিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তনুশ্রী দত্ত অভিযোগ করেছেন, নানা পাটেকর তাকে ২০০৯ সালে “হর্ণ ‘ওকে’ প্লিস” ছবির সেটে যৌন নিপীড়ন করেছেন। ভারতে মিটু আন্দোলনের অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে এই সংকট।
প্রসঙ্গত, বিশ্বনাথ পাকেটরের নামটি হারিয়ে গিয়েছে নানা পাটেকরের আড়ালে। এখন ৭১ বছর অসাধারণ অভিনেতার। ১৯৯৯ সালে ভারত ও পাকিস্তানের কারগিল সীমান্ত যুদ্ধে মহারাষ্ট্রের মারাঠি পরিবারের সন্তান নানা পাটেকর মারাঠা লেফট ইনফ্যান্টিতে একজন ‘সম্মানসূচক’ মেজর হিসেবে তার দেশকে সেবা দিয়েছেন। এর আগে একজন সম্মানসূচক ক্যাপ্টেন ছিলেন ভারতীয় আঞ্চলিক বাহিনীতে। এই কমিশন র্যাংক তাকে দেওয়া হয়েছে ১৯৯০ সালে। তিনি তিন বছরের সেনা প্রশিক্ষণও গ্রহণ করেছেন তার ‘পাহাড়’ ছবিটি বানানোর জন্য। কাজ করেছেন ভারতের সেনাবাহিনীর চার তারকা জেনারেল ভি. কে. সিংয়ের সঙ্গে। তিনি বর্তমানে মোদী সরকারের সড়ক মন্ত্রী। অত্যন্ত খ্যাতিমান এক আর্মি অফিসার। তাকে কর্ণেল পদবীটি দিয়েছেন। হিন্দি ও মারাঠি সিনেমার এই অভিনেতাকে ভারতের অন্যতম সেরা অভিনেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নানা পােটেকরের ১৯৮৮ সালের সুপারহিট ছবি ‘সালাম বম্বে’ অস্কারের নির্বাচনে লড়েছে। তিনি এই ছবির জন্য ভারতের জাতীয় পুরস্কার জয় করেছেন সেরা পার্শ্বাভিনেতার। ফিল্মফেয়ারও আছে তার একই। ১৯৯৫ সালে সেরা অভিনেতার জাতীয় পুরস্কারটি জয় করেছেন আগের বছরের ‘ক্রান্তিবীর’ সিনেমায় অসাধারণ অভিনয়ের সুবাদে। ফিল্মফেয়ারও একই সেরা অভিনেতার পুরস্কার-স্ক্রিণ অ্যাওয়ার্ড ফর বেস্ট অ্যাক্টর দিয়েছে। তিনটি ছবিতে তিনি প্লেব্যাক করেছেন।
গতকাল ২০ জুলাই সিনেমা সিটি মুম্বাইতে মি টু হ্যাশট্যাগের আগুনে আবার ঘি ঢেলেছেন তনুশ্রী। তিনি অভিযোগ করেছেন, তাকে টার্গেট করা হয়েছিল ও এরপর হয়রানী করেছে বলিউডের মাফিয়া এবং মুম্বাইয়ের রাজ্য মহারাষ্ট্রের পুরোনো রাজনৈতিক চক্র। কারণ, তিনি অবিচারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
তনুশ্রী বলেছেন, ‘বলিউড মাফিয়াটি এবং মহারাষ্ট্রের পুরোনো রাজনৈতিক চক্র, তাদের এখনো আমাদের সিনেমার ভুবনে প্রভাব আছে; জঘন্য দেশবিরোধী অপরাধীরা একত্রে একই ধরণের কাজ করে বিপদে পড়া মানুষদের ওপর।’
সাবেক ‘মিস ইন্ডিয়া’ তার ইনস্ট্রাগ্রামে বুধবার একটি দীর্ঘ পোস্টের মাধ্যমে আবার অভিযোগ করেছেন।
তার ছবিগুলো থেকে জীবনের ওপর নাশকতার প্রচেষ্টার কথা বলে তিনি জানিয়েছেন, একটি নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে তাকে টার্গেট করা হয়েছিল।
‘যে মিটু হ্যাশট্যাগের বিপক্ষে থাকা অপরাধীরা ও এনজিওকে বলেছিলাম, তারা আমাকে এই সমস্যাগুলোতে ফেলেছেন।’ তবে তিনি অপরাধীদের কারো নাম উল্লেখ করেননি এবার।
‘আমি খুবই নিশ্চিত যে, তারাই এই কাজগুলোর পেছনে আছে। কেন এরপর আমি টার্গেট ও হয়রানির শিকার হবো’-তার প্রশ্ন।
‘আশিক বানায়া আপনে’ ছবির সুপারহিট নায়িকা এবং ‘চকলেট’র অসাধারণ সুন্দরী বলেছেন, যারা তাকে ফেলে দিতে চেষ্টা করেছেন, সফল হতে পারেননি।
‘আমি আত্মহত্যা করবো না’- জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
‘আমি অন্য কোথাও চলে যাবো না (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র), কোথাও না (বলিউড ছেড়ে)। আমি এখানে থাকবো (মুম্বাই) এবং আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালোভাবে আমার শিল্পীর পেশাজীবনকে উন্নত করবো’, ঘোষণা করেছেন তনুশ্রী দত্ত।
অনেক আগে থেকে জীবনের নানা ঘটনা, সেগুলোর ক্রিয়া, প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন বলে ভক্তরা তাকে ফেলে চলে যাবেন না, বলেছেন বুদ্ধিমতী অভিনেত্রী।
এখন নিজের ভালো থাকা, নতুন ব্যবসা ও কাজের সুযোগের দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন, উল্লেখ করেছেন তনুশ্রী দত্ত।
ওএস।