‘নজরুল পুরস্কার’-এ ভূষিত ওস্তাদ ইয়াকুব আলী খান
বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে ওস্তাদ ইয়াকুব আলী খানের জীবিতাবস্থায় দেখা হয়নি। গ্রাম থেকে যে বছর ওস্তাদ ইয়াকুব আলী খান রাজধানীতে এলেন, তার কিছুদিন পরই কাজী নজরুল ইসলাম মারা যান। তাকে এক নজর দেখার জন্য সেই সময় তিনি পিজি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। কবি কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে ওস্তাদ ইয়াকুব আলী খানের সরাসরি স্মৃতি এতটুকুই।
কিন্তু কবির প্রতি রয়েছে ইয়াকুব আলী খানের গভীর শ্রদ্ধা থেকেই সুদীর্ঘ সময় ধরে শুধুই নজরুল সঙ্গীতকে বুকে লালন করে যাচ্ছেন তিনি।
১৯৭৯ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ আয়োজিত ‘আশরাফ স্মৃতি স্বর্ণপদক’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সারা দেশের নজরুল সংগীতশিল্পীরা এতে অংশ গ্রহন করেন, কারণ এটি ছিল মূলত নজরুল সংগীতশিল্পীদের নিয়ে একটি বড় প্রতিযোগিতা। সেই প্রতিযোগিতায় ওস্তাদ ইয়াকুব আলী খান প্রথম স্থান অর্জন করেন।
আবার ২০০০ সালে চট্টগ্রাম মুসলিম হলে উচ্চাঙ্গ সংগীত সম্মেলনে দেশ বিদেশের অনেক ওস্তাদদের সামনে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে অসাধারণ পারফর্ম্যান্সের কারণে তাকে ‘ওস্তাদ’ উপাধিতে আখ্যায়িত করা হয়। দেশ বরেণ্য নজরুলসংগীত শিল্পী, উচ্চাঙ্গ সংগীত শিল্পী ওস্তা ইয়াকুব আলী খানকেই সবদিক বিবেচনায় ২০২০ সালের ‘নজরুল পুরস্কার’-এ ভূষিত করা হয়। গেলো ৩১ মে রাজধানীর শাহবাগের ‘জাতীয় জাদুঘর সুফিয়া কামাল’ মিলনায়তনে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ তার হাতে এই সম্মাননা তুলে দেন। মূলত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবন, সাহিত্য ও সঙ্গীত গবেষনায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ইয়াকুব আলী খানের হাতে এই সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।
এ সম্পর্কে ওস্তাদ ইয়াকুব আলী খান বলেন, ‘১৯৭৯ সালে যখন নজরুল সংগীত প্রতিযোগিতায় প্রথম হই তখন ভীষণ আনন্দিত হয়েছিলাম। সেই আনন্দের সঙ্গে উচ্ছ্বাস ও ছিল মনে। তবে একটি কথা না বললেই নয়, আমরা শুধু আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেই যেন থেমে না যাই, তার জন্য নিবেদিত হয়ে কাজ করে যেতে হবে। যাই হোক, নজরুল পুরস্কারে আমাকে ভূষিত করায় আমি আনন্দিত। সেই আনন্দের সঙ্গে পরিতৃপ্তি ও প্রশান্তির ব্যাপারও কাজ করছে। যারা আমাকে নির্বাচিত করেছেন তাদের প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা।’
এএম/এমএমএ/