আজ থেকে সত্যজিৎ রায়ের ১০১
১. আজ ২ মে, ১৯২২ অমর বাঙালি, বিশ্ববরেণ্য চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ১শ পেরিয়ে এক বছর জন্মবার্ষিকী।
২. নানামুখী নব উদ্ভাবন ও প্রয়োগে এবং অসাধারণ লেখক হিসেবে তিনি সবসময়ই পূজনীয়।
৩. এখনো বাংলা ভাষায় তার চেয়ে আধুনিক ও স্মার্ট লেখকের জন্ম হয়নি।
৪. প্রফেসর শঙ্কু, ব্রেজিলের কালো বাঘের তুলনাহীনতা সবসময় বাঙালি পাঠককে আকুল, বিস্মিত করে চলেছে।
৫. ভারতীয় সিনেমার বিশাল ভুবনে উপেন্দ্রকিশোরের নাতি, সুকুমার রায়ের ছেলের অবদান নিয়ে বলার মতো ভাষা খুঁজে পান না অন্যতম সেরা এই চলচ্চিত্র ভুবনের নামী কর্মীরাও।
৬. নিজের পরিচালনার জাদুতে তিনি দেশের নামকে বিশ্বের দরবারে এঁকে দিয়েছেন।
৭. তার জীবনবোধ ভবিষ্যতমুখী।
৮. সব কাজেই ভীষণ স্মার্ট।
৯. এই মানুষটির জীবনের এই তথ্যটি সবারই জানা, কলকাতা শহরের রায় পরিবারের সবচেয়ে বড় কীর্তিমানটির জন্ম ১৯২১ সালের ২ মে।
১০. মোটে তিন বছর বয়সে বাবা বাংলা ভাষার সবচেয়ে বড় ছড়াকার, উপেন্দ্রকিশোরের ছেলে সুকুমার রায়ের মৃত্যু হলো বলে সত্যজিৎ এতিম হয়ে গেলেন।
১১. এরপর থেকে মা সুপ্রভা রায়ের কাছে মানুষ। রায় পরিবারের বিরাট ছায়ায়।
১২. পড়ালেখা করেছেন কবিগুরুর বিশ্ববিদ্যালয় শান্তিনিকেতনে।
১৩. তার কর্মজীবনের শুরু হয়েছিল ব্রিটিশ ভারতে একটি ব্রিটিশ বিজ্ঞাপনী সংস্থার জুনিয়র ভিজ্যুয়ালাইজার হিসেবে।
১৪. সত্যজিতের জীবনের সিনেমাতে বাঁক? একজন স্বাধীন চলচ্চিত্রকার হওয়া সোজা কথা নয়। বাংলাদেশে কাজী হায়াৎ আছেন। আর বিশ্ব সিনেমায় সত্যজিৎ। ফরাসি চলচ্চিত্রকার জঁ রেনোয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের পর। পাশাপাশি ভিত্তোরিও দে সিকার ইতালিয়ান নতুন ধারার সত্যিকারের ছবি বিশ্বসেরা ‘বাইসাইকেল থিভস’ বানানোর সময় দেখা ও শেখার পর।
১৫. তখন লন্ডনে ছিলেন সত্যজিৎ।
১৬. এরপর থেকে রঙিন ভুবনে নামলেন এই বরণ্যে গল্পকার, আর্ট কলেজের নামী ছাত্র।
১৭. জীবনের প্রথম চলচ্চিত্র তার পথের পাঁচালি। ১৯৫৫ সালের এই সিনেমাটিই তার জীবনের সেরা। বিশ্ব চলচ্চিত্রেরও অন্যতম।
১৮. তার পথের পাঁচালির প্রযোজক পশ্চিম বাংলা রাজ্য সরকার নিজে।
১৯. তারা চেয়েছিলেন আরো পজেটিভলি তিনি তার ছবিটির শেষ দৃশ্যগুলো করুন। তবে সত্যজিৎ রায় নিজের পথে চলেছেন।
২০. এই ছবিটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়েছে মহাত্মা গান্ধীর আজীবনের সঙ্গী, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ১৭ বছরের প্রধানমন্ত্রী, ভারত স্বাধীনতার অন্যতম নায়ক জওয়াহারলাল নেহেরুর মাধ্যমে।
২১. সত্যজিৎ রায়ই বিশ্বের চলচ্চিত্রের ভুবনে প্রথম টিজারের নিমাতা। পথের পাঁচালির বিজ্ঞাপনের সময় বানিয়েছেন একার বুদ্ধিতে।
২২. ১৯৬১ সাল থেকে তিনি তার সবগুলো ছবির পোস্টার তৈরি করে বাজারে ছেড়েছেন। এটিও অনন্য কীর্তি।
২৩. ১৯৬১ সাল থেকে সত্যজিৎ রায় নিজের সবগুলো ছবির মিউজিক কম্পোজার হয়েছেন।
২৪. প্রথম বাংলা রঙিন ছবিটি সত্যজিতেরই করা। নাম কাঞ্চনজঙ্ঘা, মুক্তি দিয়েছেন ১৯৬২ সালে।
২৫. সত্যজিৎ আজকের বহুল ব্যবহৃত কম্পিউটার ও বিজ্ঞাপন ফ্রন্টের দুটির জনক। তিনি এই দুটি ফ্রন্টের সত্বাধিকারী। তাতে চার ধরণের রোমান ফ্রন্টকে বাংলায় নিয়ে এসেছেন তিনি। সেগুলোতে ভারতীয় মোটিভ আছে, ক্যালিওগ্রাফির মিশেলও। নাম-‘রায় রোমান ফ্রন্ট’ ও ‘রায়ের উদ্ভট ফ্রন্ট’।
২৬. সারা জীবনে তার কাজের জন্য অসংখ্য পুরস্কার জয় করেছেন। এর মধ্যে ৩৬টি ভারতীয় চলচ্চিত্র পদক আছে, একটি গোল্ডেন লায়ন, একটি গোল্ডেন বিয়ার, দুটি সিলভার বিয়ার ও মৃত্যুযশয্যায় আজীবন কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ‘অস্কার’। আরো অনেক আন্তর্জাতিক পদক আছে সত্যজিতের ঝুলিতে।
২৭. ভারত সরকার তার জীবনের শেষ বছরে দেশের সবচেয়ে বড় পুরস্কার ‘ভারতরত্ন' নিয়ে নিজেরা সম্মানিত হয়েছেন।
ছবির ক্যাপশন : মৃত্যুর দুই বছর পর সত্যজিৎ স্মরণে ভারত সরকারের স্মারক ডাকটিকেট।
ওএস।