ভারতের প্রথম অলিম্পিক পদক জয়ীকে নিয়ে হচ্ছে সিনেমা
রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের মালিকানাধীন ভারতীয় কনটেন্টের জিও স্টুডিওস নতুন ছবি প্রযোজনা করতে যাচ্ছে। তারা বিখ্যাত মারাঠি পরিচালক নাগরাজ মানজুলির সঙ্গে কাজ করছেন তার আঞ্চলিক ভাষায় একটি ছবি নির্মাণের জন্য।
সিনেমাটি ভারতের প্রথম অলিম্পিক পদক জয়ী ফ্রিস্টাইল কুস্তিগীর কাসাবা’র (কাসাবা দাদাসাহেব যাদব) উপর বানানো হবে।
১৯৫২ সালের হেলসিংকি গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে ভারতকে প্রথম বোঞ্জপদক এনে দিয়েছেন কাসাবা। তিনি এই অলিম্পিকে আরেকটি বিভাগে অংশগ্রহণ করেছেন। তবে মোটে ১ পয়েন্টের জন্য ব্রোঞ্জ পদক জয় করতে পারেননি।
এর আগে ১৯৪৮ সালের লন্ডন অলিম্পিকে তিনি ফ্লাইওয়েট বিভাগে ষষ্ঠ হয়েছিলেন।
কাসাবা ১৯২৬ সালের ১৫ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ব্রোঞ্জজয়ের আগে একই অলিম্পিকে ভারতীয় হকি দল দেশের জন্য প্রথম স্বর্ণপদক জয় করে। তবে কাসাবাই হলেন ভারতের একমাত্র অলিম্পিকে পদকজয়ী যিনি কোনোদিন কোনো ‘পদ্মশ্রী’ পদকে ভূষিত হননি। তবে তাকে কুস্তিতে অসামান্য অবদানের জন্য ২০০০ সালে ‘অর্জুনা’ পদকে ভূষিত করা হয়েছে। মাত্র ৫৮ বছর বয়সে ১৯৮৪ সালের ১৪ আগস্ট কাসাবা মারা যান।
ভারতের বিখ্যাত কুস্তিগীর দাদাসাহেব যাদবের ছেলে কাসাবা দাদাসাহেব যাদব। তার বাবা ব্রিটিশদের ভারত থেকে হটাও আন্দোলনের অন্যতম কর্মী। তার এই ছেলেও ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলনের কর্মী।
তাকে লন্ডন অলিম্পিকের জন্য অর্থ দিয়েছেন মারাঠি খোলাপুরের মহারাজা সাহাজি ২।
কাসাবা পেশাগত জীবনে পুলিশ বিভাগে সাব-ইনসপেক্টর হিসেবে যোগ দিয়েছেন ও ২৭ বছর বিভিন্ন দায়িত্ব পালন শেষে সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে অবসর নিয়েছেন।
অনেকগুলো পদক এনে দিয়েছেন তিনি ভারতীয় পুলিশ বাহিনীকে। তবে অবসর নেবার পর তাকে পেনশনের জন্য লড়তে হয়েছে ও ভারতীয় স্পোটর্স ফেডারেশন তাকে উপেক্ষা করায় শেষ জীবন দারিদ্রতার মধ্যে কাটিয়েছেন। একটি সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান।
২০১০ সালের দিল্লী কমনওয়েলথ গেমসের জন্য তৈরি কুস্তিগীরদের স্টেডিয়ামটি তার নামে রাখা হয়েছে।
জিও স্টুডিওসের সঙ্গে এই ছবিটি যৌথভাবে প্রযোজনা করবে নাগরাজ মানজুলির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আতপাত প্রডাকশন। সিনেমাটি আত্মজৈবনিক হবে।
ছবিটির পরিচালক মানজুলি বলেছেন, ‘এই ছবিটি দর্শকদের একজন সাহসী ও অন্যরকম অ্যাথলেট যিনি ভারতকে বিশ্বের সবখানে গর্বিত করেছেন তাকে দর্শকদের সঙ্গে পরিচিত করাবে। তার অবিশ্বাস্য যাত্রা সব ভারতীয়কে চাক্ষুস করানোই আমার লক্ষ্য।’
তার প্রথম ছবি মারাঠি ভাষার ‘ফানড্রাই’ ২০১৪ সালে ভারতের মর্যাদাপূর্ণ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা ছবি হয়েছে। ২০১৭ সালের ছবি ‘সাইরাট’ বার্লিন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে মুক্তি পেয়েছে।
জিও স্টুডিওস সম্প্রতি রাজ্যগুলোতে বিভিন্ন ভারতীয় ভাষা ও ধারায় ১০০ বেশি ছবি ও টিভি প্রযোজনা করার কথা ঘোষণা করেছে।
ওএফএস/