রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

সত্যজিৎ রায়ের জন অরণ্যের ‘সোমনাথ’ চলে গেলেন

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা শহরে আজ ২৯ আগস্ট, কিংবদন্তী বাঙালি অভিনেতা প্রদীপ মুখার্জি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেছেন। তিনি নায়ক চরিত্রে অভিনয় করে অমর হয়ে থাকবেন সত্যজিৎ রায়ের ‌‘জন অরণ্যে’ ছবিতে। জনপ্রিয় ও ভিন্ন ধারার সাহিত্যিক শংকরের জন অরণ্যেকে চলচ্চিত্রে রূপ দিয়েছিলেন ১৯৭৬ সালে বেরুনো এই ছবিতে সত্যজিৎ। তার কলকাতা ট্রিলজি বা তিনটি ছবির একটি পূর্ণ গল্পের সিরিজের এই হলো শেষ ছবি। আগের দুটি হলো ‘প্রতিদ্বদ্বী’, ১৯৭০ সালে বেরিয়েছে; ১৯৭১ সালের সিনেমা তার ‘সীমাবদ্ধ’। সিরিজের শেষ ছবিতে ক্লাসিক সত্যজিৎ তুলে এনেছেন ১৯৭০’র দশকের ভারতের মধ্যবিত্ত শিক্ষিত শ্রেণীর তরুণদের নানা অথনৈতিক সংকট ও সংগ্রাম।
প্রদীপের ভালো নাম প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। জন্মেছেন দেশভাগের দুটি বছর আগে, তুমুল হিন্দু, মুসলাম ও অন্যান্য শ্রেণীর ওলটপালট জীবনে। ১৯৪৬ সালের ১১ আগস্ট। তিনি নাটকেও অভিনয় করেছেন, মঞ্চে গিয়েছেন। তবে তিনি মূল ধারার অন্য ছবিগুলোতে জন অরণ্যের মতো খ্যাতি লাভ করেননি। তবে মোটেও অখ্যাত থাকেননি। তার বিখ্যাত ছবিগুলোগুলো-বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ‘দূরত্ব’-১৯৮১ সালে বেরিয়েছে ও এই সময়ে ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘উৎসব’, মুক্তি পেয়েছে ২০০১ সালে।
যে মধ্যবিত্তের সংগ্রাম তিনি তার তরুণ কালে তুলে এনেছেন পুরো ভারতবর্ষের ছেলেমেয়েদের জীবনগল্প সিনেমার পর্দায়, তেমনই এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মেছেন প্রদীপ। অবশ্য ভারতের বাঙালি মধ্যবিত্তের বিকাশ কলকাতা শহরেই, ব্রিটিশদের হাত ধরে। তার বাবা ছিলেন শ্রী মোহন মুখোপাধ্যায় আর মা ভক্তি মুখোপাধ্যায়। তারা কুলীন ব্রাক্ষ্মণ পরিবার। তিনি বেড়ে উঠেছেন চোরবাগানে, শিমলায়। বহু পুরোনো হেয়ার স্কুল থেকে প্রদীপের মাধ্যমিক। ১৯৬৫ সালে পাশ করা এই ভালো ছাত্র এরপর কলকাতা সিটি কলেজে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সত্যজিতের ছবিতে কাজের মাত্র তিনটি বছর আগে ১৯৭৩ সালে পাশ। তিনি আইনে বিএ।
কলেজে পড়ার সময় থেকে আটপৌঢ়ে পরিবারের ছেলেটি গলায় গামছা ফেলে নাটকে চলে গেলেন। সেখানে তিনি অভিনয়ের বিদ্যালয়ে পড়েছেন। তার পড়ালেখা তপন থিয়েটারে। কলকাতা শহরেই। আইনে পাশ করে অবশ্য পরিবারের চাহিদা মেটাতে চলে গেলেন ওকালতির পেশায়। তবে অভিনয়ের পোকা তাকে কুঁড়ে, কুঁড়ে খেয়েছে। ছুটির দিনগুলোতে, অবসরে তিনি অভিনয়ে মেতে থাকতেন। মনের ও সংস্কৃতির ক্ষুধা মেটাতেন। কচিৎ পয়সা কড়ি আসতো।
এর মধ্যে জীবনের বাঁক বদলে গেল প্রদীপের সত্যজিতের দেখা পেয়ে। উপেন্দ্র কিশোরের নাতি ও সুকুমার রায়ের একমাত্র সন্তান সুবিখ্যাত, অনন্য মেধাবী সত্যজিৎ রায় ও প্রদীপ মুখার্জি মুখোমুখি হলেন ১৯৭৪ সালে। তার অভিনয় দেখে খুব খুশি বাঙালি বিশ্বখ্যাত সিনেমা মেকার। তখন নকশা তারা থিয়েটার দলে অভিনয় করছিলেন প্রদীপ। ফলে তিনি নায়ক পেয়ে গেলেন তার জন অরণ্যের জন্য। ছবিটি প্রদীপ মুখার্জিকে ১৯৭৬ সালের পূবের সেরা অভিনেতা বা ‘বেস্ট অ্যাক্টর ফর ফিল্ম ফেয়ার অ্যাওয়ার্ড ইস্ট’ এনে দিল। এছাড়াও তিনি অসাধারণ সম্মান লাভ করলেন ১৯৪৮ সাল থেকে চেক রিপাবলিকের দেওয়া ‘কারলভি ভারি শহরে ‘ক্রিস্টাল গ্লোব’ নামে খ্যাত সিনেমা পুরস্কারটি লাভ করে। ‘কারলভি ভারি ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’র প্রধান পুরস্কার। মধ্য ও পশ্চিম ইউরোপের সেরা চলচ্চিত্র পুরস্কার হিসেবে বিবেচিত, বিশ্বের অন্যতম পুরোনো চলচ্চিত্র পদক।
জন অরণ্য বেরুনোর পর জীবনটি পুরোপুরি বদলে গেল প্রদীপের। পরের বছর ১৯৭৭ সালে তিনি বিয়ে করলেন। তার একটি ছেলে ও মেয়ে আছে। আয়কর আইন বিশেষজ্ঞ প্রদীপ মুখার্জিকে ওকালতি ব্যবসাও চালিয়ে যেতে হয়েছে। কলকাতার পূবের অংশ লেক টাউনের পতিপুকুরে তার নামকরা চেম্বার ছিল।
তবে অভিনয় কম করেননি এই সুবিখ্যাত ও ভালো অভিনেতা। মোট ৪০টি ছবি তার। এর মধ্যে ১৯টি সুপারহিট। এই তিনি চলে গেলেন আজ ২৯ আগস্ট কলকাতার একটি হাসপাতালে। পরিবার জানিয়েছে, তিনি ছিলেন ৭৬। তার স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও তাদের পরিবার রেখে গিয়েছেন।
তারা বলেছেন, একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল তিন দিন আগে এই সিনেমা ও টিভি তারকাকে ফুসফুসে প্রদাহের জন্য। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য চলে যেতে হয়েছে একটি রাজ্য হাসপাতালে। তবে জীবনপ্রদীপ থাকেনি বরেণ্য এই কীর্তিমানের। সেখানে তার অবস্থার আরো অবনতি ঘটেছে এবং সকাল আটটা ১৫ মিনিটে প্রাণবায়ু নিভে দিয়েছে জন অরণ্যের নায়কের।
শক্তিমান, বিখ্যাত অভিনেতা প্রদীপ মুখার্জিকে হারিয়ে কাঁদছে পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক ভুবন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন বাংলায় একটি রাষ্ট্রীয় শোকবাণীতে, ‘হঠাৎ পেলাম প্রদীপদার মৃত্যুর খবর। তিনি তার অভিনয়ের সীমা এবং সকল প্রশংসার উর্ধ্বে উঠেছেন ওই তিনটি ছবিতে। প্রদীপ মুখার্জির মৃত্যু একটি গভীর শূণ্যতা তৈরি করল।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার শোক তার পরিবারের প্রতি তার গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন ও ভক্তদের মিছিলে শামিল হয়েছেন।
প্রদীপ মুখার্জির বিখ্যাত ছবিগুলোর মধ্যে আছে-১৯৯২ সালের ‘হীরের আংটি’, বানিয়েছেন ঋতুপর্ণ। ২০০২ সালে তাকে নিয়ে বানিয়েছেন কীর্তিমান-বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত ‌‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’। তার এই প্রতিটি ছবিই ইংরেজি সাব-টাইটেলে বিশ্বের নানা দেশে উৎসব ও হলে প্রদর্শিত হয়েছে। জন অরণ্যে তার চরিত্রটি বিখ্যাত ‘সোমনাথ’।। প্রধান ও মূল চরিত্র।
শেষ অভিনয় করেছেন এই দুঁদে অভিনেতা গেল বছর দেব রায় পরিচালিত ‘তরুলতার ভূত’। ফলে সারাজীবনই তিনি অভিনয় করে গিয়েছেন ভালোবেসে। তার মৃত্যুর পর প্রেস ট্রাস্ট্র অব ইন্ডিয়া (পিটিআই)কে সত্যজিতের ছেলে ও বরেণ্য চলচ্চিত্রকার সন্দীপ রায় বলেছেন, “বাংলা সিনেমার ভুবনে তিনি আমার বাবা সত্যজিৎ রায়ের মাধ্যমে অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন। প্রদীপদাকে একটি মঞ্চ নাটকে দেখে সত্যজিৎ রায় আটকে গিয়েছেন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন, জন অরণ্যের নায়ক করবেন। অসাধারণ ও অনবদ্য অভিনয় করেছেন তিনি সিনেমাটিতে। কেবল তাই নয়, সত্যিকারের একজন শুভাকাংখী ছিলেন প্রদীপ মুখার্জি ‌‘রায় পরিবার’-এর। আমাদের অনেক আপদে, বিপদে তিনি ছায়া হয়েছেন। ফলে আমরা একজন পরিবারের সদস্যকে আজ হারালাম।”
সত্যজিৎ রায়ের ১৯৯০ সালের ছবি ‌‘শাখা-প্রশাখা’ সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন প্রদীপ মুখার্জি। তার ছেলে সন্দীপ রায়ের তিনটি ছবির তিনি অন্যতম সেরা অভিনেতা। ২০১০ সালের ‘গোরস্থানে সাবধান’, ২০১২ সালের ‘যেখানে ভূতের ভয়’, ‌‘বাদশাহী আংটি’-২০১৪, ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
জীবদ্দশায় একটি মাত্র ছবি প্রদীপ মুখার্জির হিন্দি সুজয় ঘোষের ‘কাহিনী ২: দুর্গা রাণী সিং'। ছবিটি ২০১৬ সালে হলে, হলে গিয়েছে।
সম্প্রতি প্রদীপের অন্যতম ছবি হলো-নির্মল চক্রবর্তীর দীর্ঘদিন দেরী করে বানানো শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সেই ‘দত্তা’ উপন্যাস অবলম্বে বানানো ছবিটি। এই ‘দত্তা’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। ছবিটির নায়ক বাংলাদেশের ‘ফেরদৗস’।
এই নামী পরিচালক বলেছেন, ‘প্রদীপদা বিশ্ব থেকে চলে গেলেন। তিনি একজন মাটির মানুষ ছিলেন। ভদ্রলোক ও সাংস্কৃতিবান ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি ভালো স্বাস্থ্যের মানুষ ছিলেন না। তবে সব সামলেছেন তার অভিনয়ের প্রতি তুমুল নিবেদন ও ভালোবাসা দিয়ে। তিনি এমন একজন মানুষ ছিলেন, যিনি তার অভিনয় দিয়ে মানুষকে খুশি করতে চাইতেন। সবসময় আমি তার অভিনয়ে সন্তুষ্ট কী-না জানতে চাইতেন।’

ছবি : জন অরণ্যে সোমনাথ ও গুরু সত্যজিতের সঙ্গে ছবিটির শুটিংয়ে।
ওএফএস।

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি