বাংলা গানের এক কিংবদন্তির বিদায়
‘ওরে নীল দরিয়া’, ‘হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস’, ‘আমি একদিন তোমায় না দেখিলে’, ‘চাঁদের সাথে আমি দেব না’, ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, কী জাদু করিলা’-এ গানগুলো শোনেননি বাংলা ভাষাভাষী এমন মানুষ হয়তো খুঁজেও পাওয়া যাবে না। এমন অসংখ্য কালজয়ী গান যিনি সৃষ্টি করেছেন তার নাম আলম খান।
আজ শুক্রবার (৮ জুলাই) সকাল ১১টায় ৩২ মিনিটে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন কিংবদন্তি এই সুরকার ও সংগীত পরিচালক। তিনি দীর্ঘদিন ক্যান্সারসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে সংগীত পরিচালক আরমান খান।
আরমান খান জানান, আজ বাদ আসর এফডিসিতে আলম খানের জানাজা হবে। আগামীকাল ৯ জুলাই শ্রীমঙ্গলে তার দাফন হবে। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তিনি পপ সম্রাট খ্যাত আজম খানের আপন বড় ভাই।
আলম খান ১৯৪৪ সালে সিরাজগঞ্জের বানিয়াগাতি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৩ সালে রবিন ঘোষের সহকারী হিসেবে ‘তালাশ’ চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালনা করেন আলম খান। চলচ্চিত্রের গানে এন্ড্রু কিশোরের অভিষেক আলম খানের হাত ধরে।
১৯৭০ সালে প্রথম চলচ্চিত্রকার আব্দুল জব্বার খান পরিচালিত ‘কাচ কাটা হীরে’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে এককভাবে সংগীত পরিচালনা শুরু করেন। এরপর ১৯৭৭ সালে আবদুল্লাহ আল মামুন তার পরিচালিত ‘সারেং বৌ’ চলচ্চিত্রের গান নিয়ে কথা বলার সময় তার ১৯৬৯ সালের সুর করা একটি মুখরা শোনালে ছবির পরিচালক তা নিতে আগ্রহী হন। ১৯৭৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সেই ছবির আবদুল জব্বারের কণ্ঠে ‘ওরে নীল দরিয়া’ গানটি এক অনন্য সৃষ্টি তার। ‘বড় ভালো লোক ছিল’ চলচ্চিত্রের জন্য আলম খান অর্জন করেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ১৯৮৫ সালে তার সুর করা ‘তিন কন্যা’ চলচ্চিত্রের ‘তিন কন্যা এক ছবি’ গান দিয়ে প্লেব্যাক শুরু করেন বলিউডের এখানকার নাম করা সংগীতশিল্পী কুমার শানু। নন্দিত সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলম খানের মৃত্যুতে সংগীত অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এএম/এসআইএইচ