‘আমার স্বামী অধ্যবসায়ী ছিলেন’ : তরুণ মজুমদারের স্ত্রী সন্ধ্যা রায়
নামকরা অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায় তরুণ মজুমদারের সঙ্গে প্রথম অভিনয় করেছেন ১৯৬৩ সালে, তার ‘পালাতক’ ছবিতে। এরপর থেকে ক্যারিয়ারে মোট ২০টি ছবিতে অভিনয় করেছেন তার পরিচালনায়। ‘গণদেবতা’র জন্য তিনি পূবের সেরা অভিনেত্রীর অ্যাওয়ার্ড জয় করেছেন ফিল্ম ফেয়ারের। ছবিটি ১৯৭৮ সালের। তরুণ মজুমদারের অপূর্ব সৃষ্টি।
১৯৬০’র দশকের শেষের দিকে এই জুটি বিয়ে করেছেন। আজ ৯১ বছরে ভারতের সবোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ লাভ করা তার স্বামী চলে যাওয়ার পর শোকে আকুল হয়ে গিয়ে এই পরিচালকের সঙ্গে তার যাত্রা স্মরণ করেছেন তিনি।
কীভাবে তিনি তাকে একজন অভিনেত্রী হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করেছেন জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন প্রথমে, ‘পিতামাতা, সন্তান ও স্বামী স্ত্রীই হলেন আসল আত্মীয়। তারাই আপনার অনুপ্রেরণা। অন্যেরা প্রয়োজনে আসেন ও কাজ সেরে চলে যান। তবে তারা আপনার জীবনের খুঁটি। আজ আমি আমার এইজন স্বামীকে হারিয়ে ফেললাম। আমার এই শোক প্রকাশের কোনো উপায় নেই। অত্যন্ত ব্যাথা অনুভব করছি বেদনাকে সইতে গিয়ে।’
তরুণ মজুমদারকে তিনি একজন ‘অধ্যবসায়ী’ শিল্পব্যক্তিত্ব হিসেবে বর্ণনা করেছেন-‘আমি তাকে একজন অধ্যবসায়ী পরিচালক বা চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে দেখেছি। তিনি তেমন একজন লেখক ছিলেন। উপরন্তু তিনি তরুণ শিল্পীদের সিনেমার জন্য উপযোগী করে গড়ে তুলতেন ভালোবাসা ও যত্ন নিয়ে। আমার ক্যারিয়ারে যথেষ্ট পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছি। তার চেয়ে অধ্যবসায়ী আর কাউকে দেখিনি।’
তিনি তার অভিনয় দক্ষতার একজন পূর্ণ সমঝদার ছিলেন। তাদের ছবিগুলোর কয়েকটি পুরস্কার জয় করেছে, জাতীয় পর্যায়েও। ফিল্ম ফেয়ারের গণদেবতাতে আরো ছিলেন সৌমিত্র চ্যাটার্জি, অজিতেষ ব্যানার্জি, রবি ঘোষ ও অনুপ কুমার। অত্যন্ত প্রশংসিত ছবিটি। ‘সেরা জনপ্রিয় সিনেমা’র পুরস্কার জয় করেছে হোলসাম এন্টারটেইনমেন্টের। ‘সেরা শিশু শিল্পী’র জাতীয় পুরস্কারটি জয় করেছেন কাঞ্চন দে বিশ্বাস।
‘তিনি আমাকে একজন শিল্পীর স্বাধীনতাটুকু দিয়েছিলেন। আমার অভিনয় ক্ষমতার ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছেন। আমাকে বেড়ে ওঠার সুযোগ দিয়েছেন। আমাকে আমার দক্ষতার বিকাশ ঘটানোর স্বাধীনতা দিয়েছিলেন-বলেছেন সন্ধ্যা রায়।
তারা ১৯৯০’র দশকে আলাদা হয়ে যান। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে ভারতে তৃণমূল কংগ্রেসে কাজ করেন সন্ধ্যা। তিনি নির্বাচিত সংসদ সদস্য।
তাদের বিখ্যাত সিনেমাগুলো হলো রাহগির, কুহেলী, শ্রীমান পৃথ্বিরাজ, নিমন্ত্রণ, ফুলেশ্বরী, তাজিনী ইত্যাদি।
ওএস।