কান ক্লাসিকস
‘দি কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’ বা কান চলচ্চিত্র উৎসব কান ক্লাসিকস প্রগ্রামে তাদের ছবিগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন তালিকাটি প্রকাশ করেছেন।
ফরাসি এই বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৫ বছর বা হিরকজয়ন্তী উপলক্ষে তৈরি ছবিগুলো কানের সেরা মানের ছবিগুলোর মধ্যে একটি যোগাযোগ তৈরি করবে, ফিচার ছবি এবং ছবি নিয়ে বানানো সাম্প্রতিক প্রামাণ্যগুলোর মধ্যেও সংযোগ স্থাপন করবে।
শুরুটি হয়েছে ফ্রান্সের স্বল্পদৈঘ্যের চলচ্চিত্র নিমাতা জঁ উস্তাশের বিতর্কিত ছবি ‘দি মাদার অ্যান্ড দি হোর’ দিয়ে। অল্প ক্যারিয়ারে তার বানানো এই সিনেমাটি ১৯৭৩ সালের ‘গ্রান্ড প্রাইজ’ বা কানের স্বণ পামের পরে সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কারটি জয় করে নেয়। দি মাদার অ্যান্ড হি হোর সেই সময়ের দাঙ্গাকে জোর দিয়ে তুলে ধরেছে।
প্রকল্পটিতে আরো আছে ভিত্তোরিও দে সিকা নামের ইতালির নিওরিয়ালিজম বা বাস্তবতা থেকে বিচ্যুত হয়ে বাস্তবতাকে চিত্রিত করার আন্দোলনের অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্বের চারটি অ্যাকাডেমি অ্যাওয়াড বা অস্কার জয় করা ছবির অন্যতম ‘শুশা’। এটি ভিত্তোরিওর প্রথম মাস্টারপিস হিসেবে বিশ্ব চলচ্চিত্রের ইতিহাসে স্বীকৃত। দুটি এতিম জুতো পালিশ ছেলের গল্প, যারা একটি ঘোড়া কিনতে গিয়ে পুলিশের সমস্যায় ভোগে।
১৯৭০ সালের ১০ অক্টোবর বেরুনো আমাদের অমর চলচ্চিত্রকার ও লেখক সত্যজিৎ রায়ের ছবি ‘প্রতিদ্বদ্বী’ আছে। তার কলকাতা ট্রিলজির প্রথম এই ছবিটি। গল্প সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে। তিনিই চিত্রনাট্য ও নির্মাণ করেছেন।
নিজের উদ্ভাবনী শক্তির জন্য আজো পূজনীয় মার্কিন পরিচালক, অভিনেতা, চিত্রনাট্যকার ও প্রযোজক ওরসন ওয়েলসের ‘দি ট্রায়াল’ আছে। ১৯৬২ সালের নাটকীয় সিনেমা।
মার্টিন স্করজেইজির ১৯৭৮ সালে ফিচারধর্মী প্রামাণ্যচিত্র হিসেবে তৈরি সিনেমাটি অসাধারণ রক তারকা বব ডিলান, ভ্যান মরিসন, এরিক ক্ল্যাপটন, জোওনি মিচেল এবং মাডি ওয়াটারসের পারফমেন্সেও সমৃদ্ধ। এটি কানাডিয়ান আমেরিকান রক ব্যান্ড দল ‘দি ব্যান্ড’র আমেরিকান থ্যাংকস গিভিং ডে ১৯৭৬ সালের ২৫ নভেম্বর ‘দি লাস্ট ওয়াল্টস’ নামের কনসার্ট। কনসার্টটির আয়োজন করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো শহরের উইন্টারল্যান্ড বলরুমে। এটিই তাদের দলের সদস্যদের একত্রে বিদায়ী কনসার্ট হিসেবে সম্মানিত। ১২ জনেরও বেশি বিশেষ অতিথি তাদের সঙ্গে গেয়েছেন, বাজিয়েছেন। আছেন সাবেক সদস্য রনি হকিন্স, বব ডিলান। এসেছেন পল বাটারফিল্ড, ববি চার্লস, এরিক ক্লাপটন, নিল ডায়মন্ড, ড. জন (স্টেজ নাম), জোওনি মিচেল, ভ্যান মরিসন, রিঙ্গো স্টার, মাডি ওয়াটারস, রনি উডস ও নেইল ইয়ং। কনসার্টের সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন তাদের আসল রেকর্ড প্রডিউসার জন সাইমন। এই কনসার্টের চলচ্চিত্র পরিচালক ছিলেন মার্টিন স্করসেইজি। তিনি ১৯৭৮ সালে এই নামেই ছবিটি করেছিলেন। তাতে দি ব্যান্ডের ইতিহাস এবং তাদের সাক্ষাৎকারও আছে।
“সিংইন’ ইন দি রেইন”র ৭০তম প্রতিষ্ঠাবাষিকী উপলক্ষে ১৯৫২ সালের মাকিন এই রোমান্টিক কমেডির একটি নতুন ৪ কে মাস্টার যুক্ত করে তাকে তালিকাতে রাখা হয়েছে।
কান চলচ্চিত্র উৎসবের তালিকাটি হলো-
পুণপ্রতিষ্ঠা
১. দি মাদার অ্যান্ড দি হোর, জঁ উস্তাশ, ১৯৭২।
২. প্রতিদ্বদ্বী, সত্যজিৎ রায়, ১৯৭০।
৩. সিংইন’ ইন দি রেইন : জিন কেলি ও স্টানলি ডোনেন, ১৯৫২।
৪. ভিত্তোরিও দে সিকা, শুশা, ১৯৪৬।
৫. ট্রাম্প ( দি সার্কাস টেন্ট), অরবিন্দন গোবিন্দন, ১৯৭৮।
৬. দি ট্রায়াল, ওরসন ওয়েলস, ১৯৬২।
৭. ইফ দেয়ার ইজ অ্যা স্পাই..., বার্টান্ড ব্লিয়ের, ১৯৬৭।
৮. পয়েল ডে কারাট, জুলিয়েন ডুভিভিয়ে, ১৯৩২।
৯. দি লাস্ট ওয়াল্টস, মার্টিন স্করসেইজে, ১৯৭৮।
১০. ইটিম, মাইক ডি লিওন, ১৯৭৬।
১১. দেওস ই উ বি আবু নাতে হাদুস সোও, গ্লাউবার রশা, ১৯৬৪।
১২. সেডমেক্রাসকি, ভেরা চিটেলেভা, ১৯৬৬।
১৩. ভিভা লা মার্টেই, ফারনান্দো অ্যারাবাল, ১৯৭১।
প্রামাণ্যচিত্রগুলো
১৪. দি লাস্ট মুভি স্টারস, এথান হক, পর্ব ৩ ও ৪।
১৫. রোমি, অ্যা ফ্রি ওম্যান, লেখা : লুসি ক্যারিস ও ক্লেইম্যান টাইন ড্যারুডেল, পরিচালনা : লুসি ক্যারিস।
১৬. জেইন ক্যম্পিয়েন, সিনেমা ওম্যান; জুলি বেতুচেল্লি।
১৭. জেরার ফিলিপে, লে দারলিয়ে আইভার দু চিদ, প্যাত্রিক জেউদি।
১৮. প্যাত্রিক ডিউওয়্যারে, মাই হিরো; আলেকসান্দ্রে মোই।
১৯. ওমেজ দুনে ফিলে অ্যা সম প্যার, ফাতু সিসসে।
২০. ল’ওম্বারে দে গয়া পার জেইন-ক্লদে ক্যারিয়েরে; হোসে লুইস লোপেজ-লিনারেস।
২১. থ্রি ইন দি ড্রিফট অব দি ক্রিয়েটিভ অ্যাক্ট, ফার্নান্দো সোলানাস।
অলিম্পিক স্পটলাইট
২২. ২০২০ সালের টোকিও অলিম্পিক গেমসের প্রাতিষ্ঠানিক ছবি-প্রথম অংশ, নাওমি কাওয়াসে।
২৩. ভিশনস অব এইট : মিরশ ফোরমান, ইয়েরি ওজেরফ, ক্লদ লেলুশ, মাই জেটলিং, মাইকেল ফ্ল্যাগার, কন ইচকাওয়া, আর্থার প্যান ও জন শ্ল্যাশিনজার (আট চলচ্চিত্রকার)।