জর্জ হ্যারিসনকে নিয়ে বই লিখেছেন স্ত্রী ওলিভিয়া
বিশ্বখ্যাত ব্রিটিশ ব্যান্ডদল বিটলসের অমর গিটার বাদক ও বেশিরভাগ গানের লেখক জর্জ হ্যারিসন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জন্য ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ করে তিনি আমাদের প্রিয়।
তার বিধবা স্ত্রী ওলিভিয়া হ্যারিসন। পুরো নাম ওলিভিয়া ত্রিনিদাদ হ্যারিসন। ১৯৭০ দশকের মাঝে জীবনের প্রথম গানের চাকরি মার্কিন রেকড লেবেল এ অ্যান্ড এমে বাংলাদেশের বন্ধু ও তার আগেই সর্বকালের সেরা ব্যান্ডদলের জাদুকর গিটার বাদক, গীতিকার জর্জ হ্যারিসনের সঙ্গে দেখা হয় তরুণীটির। তিনি তাদের বিপনন বিভাগে চাকরি করতেন। এই প্রতিষ্ঠানটিই হ্যারিসনের ‘ডার্ক হাউজ লেবেল’র বিক্রির দায়িত্বে ছিল। হ্যারিসন তার রেকর্ড লেবেল কম্পানিটি ১৯৭৪ সালে তৈরি করেছেন।
তারা বিয়ে করেছেন ১৯৭৮ সালের মাঝে। তাদের একমাত্র ভালোবাসার ধন ‘ধ্বনি’। ধ্বনি হ্যারিসনও গান করেন, লেখেন ও কম্পোজার। ব্রিটিশ নাগরিক। তার বাবা ২০০১ সালের ২৯ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলস শহরে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইয়ে জিততে না পেরে সারা দুনিয়াকে কাঁদিয়ে চলে গিয়েছেন।
ওলিভিয়া হ্যারিসনের এখন ৭৩ বছর বয়স। বাস করেন মাকিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে।
ওলিভিয়া একজন মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক, দাতা ও লেখক। তিনি ১৯৯০ সালে কমিউনিজমের পতনের পর রোমানিয়ার হাজার, হাজার ফেলে রাখা এতিমের সাহায্যের জন্য ‘নো বডিজ চাইল্ড : রোমানিয়ান অ্যাঞ্জেল আপিল’ নামের একটি দাতব্য অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন। তবে সব পরিচয়ের উধ্বে তিনি জর্জ হ্যারিসনের স্ত্রী।
বিখ্যাত সংবাদ মাধ্যম এপি জানিয়েছে, ওলিভিয়া ত্রিনিদাদ হ্যারিসন তার স্বামীকে নিয়ে লেখা ‘কাম দি লাইটেনিং (বজ্রধারাটি এসো)’ বইটি প্রকাশ করতে যাচ্ছেন।
সেখানে দেবার জন্য ২০টি কবিতা লিখেছেন তিনি।
এই বছরের ২১ জুন বইটি স্বামীকে নিয়ে লেখা কবিতাগুলোসহ প্রকাশিত হবে।
বইতে আরো থাকবে ওলিভিয়া হ্যারিসনের কাছে স্বযত্নে রক্ষিত তাদের ছবিগুলো, নানা স্মৃতিচিহ্ন।
বইয়ের ভূমিকা লিখবেন বিশ্বখ্যাত মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার মার্টিন স্করসেইজি। তিনি অস্কার জয় করেছেন।
২০১১ সালের ৫ অক্টোবর তার পরিচালিত জর্জ হ্যারিসনের বিখ্যাত প্রামাণ্যচিত্রটি বেরিয়েছে। নাম-‘জর্জ হ্যারিসন : লিভিং ইন দি ম্যাটেরিয়াল ওয়াল্ড।
হ্যারিসনের স্ত্রীর স্বামীকে নিয়ে লেখা বইটি নিয়ে স্করসেইজি বলেছেন, ‘ওলিভিয়া তার ও আমাদের সবার স্মৃতিতে জাগিয়ে তুলেছেন তাদের সবচেয়ে ক্ষণস্থায়ী মুহূর্তগুলোকেও তার আবেগময়, ব্যাঞ্জনাভঙ্গিতে; প্রতিটি তাৎক্ষণিক ক্ষণগুলোর পাশাপাশি সুনিদিষ্ট সময়গুলোও তিনি লিখেছেন। নিজের জীবনের খাতা থেকে স্বযত্নে রক্ষিত সময়ের এই স্রোতধারাকে তিনি মেলেছেন সবার সামনে-জর্জ হ্যারিসন ও তার নিজের। তাদের স্মৃতিগুলো তার কাছে জীবন্ত। এবার আমাদের ভুবনে আসছে। জর্জ ও ওভিলিয়া হ্যারিসনের দাম্পত্য এবং ভালোবাসার জীবন তার জাদুকরী ভাষায়, তাদের জীবনের তাল ও ছন্দে ফুটেছে বইটিতে।’
‘তিনি হয়তো আমি যতটুকু বুঝেছি একটি কথ্য ইতিহাসকে তুলে আনছেন অথবা আজন্ম লালিত একটি স্মৃতিভান্ডারকে স্মৃতিকথা হিসেবে দিচ্ছেন’, জানিয়েছেন মার্টিন স্করসেইজি। আরো বলেছেন, ‘ওলিভিয়া একটি কাব্যিক আত্মজীবনী তিলে, তিলে গড়ে তুলেছেন।’
ছবির ক্যাপশন : বিটলসের রিঙ্গো স্টারের বিয়েতে স্বাক্ষ্য দেবার পর ১৯৮১ সালের ২৭ এপ্রিল সুপারস্টার স্বামী জর্জ হ্যারিসনের হাত ধরে বেরিয়ে আসছেন লন্ডনের মেলবোর্ন রেজিস্ট্রি অফিস থেকে ওলিভিয়া হ্যারিসন।
ওএস।