হলিউডে অভিনয় করার বিষয়ে যা বললেন জায়েদ খান
অভিনেতা জায়েদ খান। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকাই সিনেমার আলোচিত অভিনেতা জায়েদ খান। নিজের ক্যারিয়ারে অভিনয়ের চেয়ে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বেশি আলোচনায় থাকেন তিনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তীব্র হওয়ার আগেই দেশ ছাড়েন ঢালিউডের এই অভিনেতা। এখন তিনি অবস্থান করছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে।
সম্প্রতি তাকে দেখা গেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ও ঢালিউড নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মিত ‘৮৪০’ ছবিতে। দেশে কবে ফিরছেন, নতুন কোনো কাজ করছেন কিনা—এমন নানান প্রশ্নের উত্তর একটি গণমাধ্যমে দিয়েছেন অভিনেতা জায়েদ খান। তারই চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
অভিনেত্রী নিপুণকে বহিষ্কার করেছে শিল্পী সমিতি। এ বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া জানতে চাই।—এ প্রশ্নের উত্তরে জায়েদ খান বলেন, শিল্পী সমিতি যা করেছে, তা অনেক আগেই করা উচিত ছিল। ইন্ডাস্ট্রির মানুষের তার সঙ্গে সম্পর্কই রাখা উচিত না। একটা ইন্ডাস্ট্রির শিল্পীদের সম্মান তিনি কোথায় নিয়ে গেছেন! নায়িকারা হচ্ছেন— ভালোবাসার প্রতীক, তারা মানুষের সঙ্গে সাবলীল থাকবে, ভালোভাবে থাকবে।
তিনি বলেন, মৌসুমী আপাও তো নির্বাচন করেছিলেন, তার বেলায় তো এমনটি হয়নি! একটা মানুষ কত নোংরা হতে পারে যে, চলে যাওয়ার পরও শিল্পী সমিতির প্যাড ব্যবহার করে তিনি বিবৃতি দিয়েছেন। আমি তো একাধিকবার ছিলাম, এ রকম অন্যায় করিনি। জোর করে একটা মানুষ নির্বাচিত প্রতিনিধিকে বসতে দেয় না, কত বৈষম্য যে আমার সঙ্গে হয়েছে! তার এসব কাজে শিল্পী হিসেবে নিজেরই লজ্জা লাগে।
দেশে ফিরছেন না কেন, আপনি কি ভয় পাচ্ছেন?—এমন প্রশ্নের উত্তরে জায়েদ খান বলেন, না না, আমি ভয় পাচ্ছি না। দেশে তো আর বাবা-মা নেই, ভাইবোনও নেই। আমি এই জায়গায় (নিউইয়র্কে) একটা কোম্পানির সঙ্গে কাজ করছি। যেহেতু দেশে অনেক দিন কাজ করলাম, দেশে কাজও কম, রাজনৈতিক পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে অনেক শিল্পী কাজ পাচ্ছেন না— সবাই তো বিদেশে এসে কাজ করছেন। আমিও বিভিন্ন জায়গায় শো করছি। এখানে আমি বসে নেই।
তিনি বলেন, দেশে ফেরার ব্যাপারে আমার ভয়ের কোনো কারণ নেই। আমি তো কোনো অন্যায় করে আসিনি, কোনো অপরাধ করে আসিনি। শিল্পীরা কখনো অন্যায়-দুর্নীতি করতে পারে না। আপনি কোনো একটা দলকে পছন্দ করতে পারেন, সেটা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
তিনি আরও বলেন, আমি কষ্ট করে শৈল্পিক লাইন দিয়ে অর্থ উপার্জন করেছি, কোনো অন্যায় কাজ করিনি। অন্যায়ের কাছে মাথা নত করিনি। যদি করতাম, তাহলে শিল্পী সমিতিই আমার অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলত। আমি যখন সমিতিতে ছিলাম, দুপুরের খাবারও নিজের টাকায় খেয়েছি। চার বছরে কোনো দিন সমিতির টাকায় খাইনি।
আপনি বলছেন শিল্পীরা অন্যায় করে না। কিন্তু অনেক শিল্পীই তো ছাত্র-আন্দোলনের বিপক্ষে ছিলেন এবং কাজ করেছেন। তাদের কথা কেন এড়িয়ে গেলেন? এ অভিনেতা বলেন, আমি তাদের কথা কখনো বলব না। দলীয় মতাদর্শের হয়ে যে কেউ, যে কোনো কিছু করতে পারে। সেটি তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। সেটি নিয়ে কথা বলার অধিকার আমার নেই। আমি আমারটা বলতে পারব— কারও কোনো ব্যক্তিগত বিষয়ে আমি বলতে পারি না। এ ব্যাপারে আমার কোনো মন্তব্য নেই। রাজনৈতিক ব্যাপারে জিজ্ঞেস করবেন না প্লিজ।
আপনাকে ‘৮৪০’-এ দেখা গেছে। পরিচিতরা আপনার অভিনয় দেখে কোনো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কি?—এর উত্তরে জায়েদ খান বলেন, সবাই ভালো বলছেন। আমি আসলে ডিরেক্টরিয়াল ম্যাটেরিয়াল। আমাকে পরিচালকরা সুন্দর করে ব্যবহার করলে ভালো কাজ করতে পারি। তার প্রমাণ ‘৮৪০’। দেশে একটা রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। এটা নিয়ে আর বলার কিছু নেই। এখন অনেক কাজ কম। আশা করি আঁধার কেটে যাবে। আমি একটা জিনিস বুঝে গেছি, যারা ভালো পরিচালক, তাদের সঙ্গে কাজ করতে হবে। যারা আপনার কাছ থেকে অভিনয়টা বের করে নেবে, তাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই।
যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। হলিউডের কোনো কাজে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছেন কি?—এ বিষয়ে অভিনেতা বলেন, না ভাইয়া মিথ্যা কথা বলে কোনো লাভ নেই। হলিউড গেছে পুড়ে। পুরো ক্যালিফোর্নিয়া, যেখানে হলিউডের শুটিং হয়, সেখানে দাউদাউ করে আগুনের দাবানলে সব আর্টিস্টের বাড়ি পুড়ে গেছে। তারা এখন খারাপ সময় পার করছেন। এখন তাদের এগুলো মাথায় নেই, আর আমারও ট্রাই করার সুযোগ নেই। পরিবেশ-পরিস্থিতি নরমাল হলে আর আল্লাহ যদি হলিউড কপালে লেখে— হয়ে যেতে পারে কোনো দিন। মানুষের অসাধ্য কিছু নেই, আল্লাহর ইচ্ছা।