লকডাউনে চাকরি হারানো ৭ শতাংশ এখনো বেকার
করোনায় ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ৭০ শতাংশই ক্ষতির মুখে পড়েছে। এর মধ্যে হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসায় ৬০ ও পরিবহন খাতে ৭০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ ছাড়া লকডাউনে (৫ এপ্রিল থেকে ১০ আগস্ট-২০২১) রাজধানীতে পরিবহন, দোকানপাট এবং হোটেল-রেস্তোরাঁ খাতে চাকরি হারিয়েছিলেন ৮৭ শতাংশ কর্মী। তাদের ৭ শতাংশ এখনো বেকার। করোনা মহামারিতে লকডাউনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পরিবহন, হোটেল-রেস্তোরাঁ ও ক্ষুদ্র শিল্প-প্রতিষ্ঠান।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) ‘ঢাকা শহরের পরিবহন, দোকানপাট ও হোটেল-রেস্তোরাঁ খাতের শ্রমিকদের ওপর সাম্প্রতিক লকডাউনের প্রভাব নিরূপণ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) রাজধানীর ধানমণ্ডির বিলস-এর সেমিনার হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন বিলস উপ-পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম। প্রতিষ্ঠানটির ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল হক আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক কোহিনূর মাহমুদ ও নাজমা ইয়াসমীন।
এ সময় আমিরুল হক আমিন বলেন, ‘বাংলাদেশে পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল হলেও শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তায় কিছু করা হয়নি। আগে ট্রাফিক সিগন্যালে এক-দু’জন ভিক্ষুক দেখা গেলেও এখন ১০ থেকে ১৫ জনের বেশি ভিক্ষুক দেখা যায়। দেশে উন্নত হলেও শ্রমিকদের জন্য কিছু হয়নি।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, লকডাউনে (৫ এপ্রিল থেকে ১০ আগস্ট-২০২১) চাকরিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৮৭ শতাংশ শ্রমিক। তাদের মধ্যে পরিবহন খাতে ৯৫, দোকানপাট খাতে ৮৩ ও হোটেল-রেস্তোরাঁ খাতে ৮২ শতাংশ কর্মী কাজ হারান। লকডাউন-পরবর্তী সময়ে ৯৩ শতাংশ শ্রমিক চাকরিতে পুনর্বহাল হয়েছেন। তবে ৭ শতাংশ এখনও বেকার। যদিও লকডাউনের সময়ে এসব খাতে শ্রমিকদের খণ্ডকালীন কর্মসংস্থান বেড়েছিল ২১৫ শতাংশ।
ঢাকা শহরে ৪০০ শ্রমিকের ওপর এ গবেষণা চালিয়েছে বিলস। শহরটিকে ছয় ভাগে ভাগ করে প্রতি জোনে ৬৬ জনের মতামত নেয়া হয়েছে।
লকডাউনে তিন খাতের শ্রমিকদের আয় গড়ে ৮১ শতাংশ কমেছে। সবচেয়ে বেশি পরিবহন খাতে শ্রমিকদের ৯৬ শতাংশ ও হোটেল-রেস্তোরাঁ খাতে শ্রমিকদের ৮৩ শতাংশ আয় কমেছে। লকডাউনের আগে মাসিক গড় আয় ১৩ হাজার ৫৭৮ টাকা হলেও পরবর্তীতে আয় দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৫২৯ টাকা। অর্থাৎ লকডাউন-পরবর্তী সময়েও আয়ে ৮ শতাংশ ঘাটতি থাকছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৩৬ শতাংশ শ্রমিক কোভিডের টিকা নিয়েছেন। বাকি ৬৪ শতাংশ এখনও টিকার বাইরে রয়ে গেছে।
বিলস-এর গবেষণা প্রতিবেদনে একইসঙ্গে পরিবহন, হোটেল-রেস্তোরাঁ ও দোকান শ্রমিকদের সুরক্ষায় ১০ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
জেডএ/এমএমএ/