‘ঢাকা রিজেন্সি’র ৫৮ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি
‘ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেড’ এর বিরুদ্ধে তদন্ত করে ২ মাসে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকার গোপন বিক্রয়ের তথ্য উদঘাটন করেছে এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর। তদন্তশেষে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ৫৭ লাখ ৯২ হাজার টাকার ভ্যাট ফাঁকির মামলা দায়ের করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ।
ভ্যাট ফাঁকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভ্যাট গোয়েন্দার উপ-পরিচালক অথেলো চৌধুরী এর নেতৃত্বে একটি দল গত ২৮ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান পরিচালনা করে। এতে ভ্যাট গোয়েন্দারা ব্যাপক ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পায়। (ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিঃ, প্লট-৪, ৬, ৩১ ও ৩৩ নিকুঞ্জ-০২, খিলক্ষেত, ঢাকা এ অবস্থিত, যার মুসক নিবন্ধন নং- ০০০০০২২১১-০১০২।)
অভিযানের শুরুতে কর্মকর্তাগণ প্রতিষ্ঠানের মূসক সংক্রান্ত ও বাণিজ্যিক দলিলাদি প্রদর্শনের অনুরোধ করলে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক (অর্থ) মো. মিজানুর রহমান সিদ্দিকী মূসক সংক্রান্ত নথিপত্র প্রদর্শন করেন। এছাড়া প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত কম্পিউটারসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক দলিলাদি তল্লাশি করে বাণিজ্যিক বিক্রয় চালান এবং বিক্রয় রেজিস্টার জব্দ করা হয়।
জব্দকৃত কাগজপত্রে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে মোট ৫ কোটি ৬ লাখ ৭০ হাজার ৭৯২ টাকার বিক্রয় তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু এ সময় প্রতিষ্ঠান দাখিলপত্রে ৪ কোটি ৫৯ লাখ ২৬ হাজার ১৭৮ টাকা বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করে। দাখিলপত্রে ৪৭ লাখ ৪৪ হাজার ৬১৪ টাকার বিক্রয়তথ্য গোপন করা হয়েছে, যার উপর পরিহারকৃত মূসক ৭ লাখ ১১ হাজার ৬৯২ টাকা। এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২% হারে সুদ ৫ লাখ ১২ হাজার ৪১৮ টাকা প্রযোজ্য।
তদন্তে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে মোট ৫ কোটি ৭৩ লাখ ২০ হাজার ৯৭৪ টাকার বিক্রয় তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু এ সময় প্রতিষ্ঠান দাখিলপত্রে ৩ কোটি ৮০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৮৭ টাকা বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে। এতে দাখিলপত্রে ১ কোটি ৯২ লাখ ৭৩ হাজার ১৮৭ টাকা বিক্রয়তথ্য গোপন করেছে, যার উপর পরিহারকৃত মূসক ২৮ লাখ ৯০ হাজার ৯৭৮ টাকা। এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২% হারে সুদ ১৬ লাখ ৭৬ হাজার ৭৬৭ টাকা প্রযোজ্য।
অভিজাত হোটেলটিতে মাত্র ২ মাসে মূসক বাবদ ৩৬ লাখ ২ হাজার ৬৭০ টাকা এবং সুদবাবদ ২১ লাখ ৮৯ হাজার ১৮৬ টাকাসহ সর্বমোট ৫৭ লাখ ৯১ হাজার ৮৫৬ টাকার ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে।
তদন্তে উদঘাটিত পরিহারকৃত ভ্যাট আদায়ের আইনানুগ পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে মামলাটি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা উত্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। একইসাথে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম অধিকতর মনিটরিং করার জন্যও সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে অনুরোধ করা হয়েছে।
/এএস