শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ব্যাংকপাড়ায় ভুয়া ঋণের ফাঁদ

দেখতে লাখ টাকার বান্ডিল, আসলে সবই ভুয়া

চলাফেরায় আভিজাত্যের ছাপ। হটাৎ দেখে কেউ ব্যাংকের কর্মকর্তাও মনে করতে পারেন। রবি থেকে বৃহস্পতিবার মতিঝিল এলাকায় সরব উপস্থিতি। কখনো বড় হোটেলে আবার কখনো ফুটপাতে। সব জায়গায় সরব উপস্থিতি। আসলে তারা কারা? তারা কোনো ব্যাংকের কর্মকর্তা বা কোনো স্থানে চাকরিও করে না। তারা ঋণ দেওয়ার নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে। শুধু কি প্রতারণা, ঋণগ্রহীতাকে নকল টাকা দিয়ে এমন কারসাজির মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়, তারা যেন কাউকে এ বিষয়ে না বলতে পারে।

এ রকম একটি সিন্ডিকেটের সন্ধান পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। প্রতারণার অভিনব সব পন্থা শুনে গোয়েন্দারাও চমকে উঠেছেন।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, ঋণগ্রহীতাদের এমনভাবেই তারা ফাঁদে ফেলে সেখান থেকে বের হতে পারে না। ঋণ গৃহীতাদের একভাবে আর্থিক ক্ষতির সন্মুখিন করে ফেলে। অন্যদিকে জাল টাকা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভয় দেখায়। যার কারণে ভুক্তভোগীরা বড় আর্থিক ক্ষতি হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শরণাপন্ন হতে চায় না।

যেভাবে প্রতারণা করেন তারা

ব্যাংকপাড়া বলা হয় রাজধানীর মতিঝিল এলাকাকে। এখানেই বেশিরভাগ ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা চলাফেরা করেন। অনেকে আর্থিক সংকটের কারণে ঋণ নিতে এসব এলাকায় বেশি যাতায়াত করেন। অনেক সময় সঠিক কাগজপত্র দিয়ে ঋণ পেতে অনেকের দেরি হয়। বেশি দেরি হওয়ায় অনেকে বিরক্ত হয়ে ওই ঋণের দিকে আর এগোতে চান না। এরপর অবৈধ পথে এবং অল্প নিয়মনীতিতে ঋণ পেতে অনেকে বিভিন্ন চেষ্টা চালান। অল্প সময়ে ঋণ পাওয়া ও অতিরিক্ত টাকা ঋণের আশায় প্রতারণার খপ্পরে পড়ছেন অনেকেই।

মতিঝিলের ব্যাংকপাড়ায় ঘুরে বেড়ান তারা। টার্গেট একমাত্র ঋণগ্রহীতা। তারা প্রতিশ্রুতি দেন অল্প সময়ে বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ পাইয়ে দেবেন বলে। সে অনুযায়ী পেপারস নিজেরাই তৈরি করে দেওয়াসহ প্রাথমিকভাবে খরচের টাকা নেন। এরপর পেপারস তৈরি হলে সেই সময় আরেকটি টাকা নেয় ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে। শেষ সময় হিসেবে ঋণের একটি তারিখ দিয়ে সে অনুপাতে কমিশনের পরিপূর্ণ টাকা নিয়ে নেন। প্রতারকরা ঋণগৃহীতাকে চেক নয়, ক্যাশ টাকা দেওয়ার কথা বলেন। ঋণ প্রদানের দিন টাকা নিয়ে তারা আবার নিজেরাই দেখা করেন গ্রাহকের সঙ্গে। ধরিয়ে দেন লাখ লাখ টাকার বান্ডিল। তবে বান্ডিল খোলার পর তাতে মেলে শুধু কাগজ। অভিনব এ প্রতারকচক্রের দুই সদস্যকে রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

যা বলছে গোয়েন্দা পুলিশ

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, দেখতে লাখ টাকার বান্ডিল মনে হলেও তাতে কোনো টাকাই নেই। পুরোটাই কাগজের। ওপরে এবং নিচে এক হাজার টাকার নোট। তাও আবার জাল। এক শ্রেণির প্রতারক অভিনব কায়দায় কাগজকে টাকা বলে চালিয়ে দিচ্ছে। তারা বলছেন, খালি চোখে দেখলে ১ হাজার টাকা নোটের বান্ডিলই মনে হবে। তবে ধারণা কেটে যাবে হাতে নিয়ে দেখলেই। ভেতরে কোনো টাকা নেই। টাকার মাপে কাগজ কেটে তৈরি করা হয়েছে বান্ডিলগুলো।

একটি দুটি নয়, ৩২টি বান্ডিল যেগুলো দৈর্ঘ্য প্রস্থে এক হাজার টাকা নোটের সমান। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগ রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে এই বান্ডিলগুলো। গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুজনকে।

তবে এই চক্রের মাস্টারমাইন্ডসহ আরও কয়েকজনের তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা যার কারণে তারা সংবাদমাধ্যমে এসব চক্রের নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক রয়েছে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আরও বলছেন, এ প্রতারকেরা মতিঝিলের ব্যাংকপাড়ায় ঘুরতে থাকে। বেশ কয়েকজন আছে এই চক্রের সদস্য। কমিশনের বিনিমেয়ে বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও ও সমিতি থেকে ঋণ পাওয়ার নিশ্চয়তা দেন তারা। কাগজপত্র এবং অগ্রিম কমিশনের টাকা নেওয়ার পর ঋণগ্রহীতাকে জানানো হয় ঋণের অনুমোদন পাওয়া গেছে। নির্দিষ্ট দিনে লোনের টাকা নিয়ে তারা নিজেই হাজির হন। কাগজের এসব বান্ডিল বিশেষ প্যাকেটে মুড়িয়ে ধরিয়ে দেন ঋণগ্রহীতাকে। বাড়িতে গিয়ে প্যাকেট খোলার পরামর্শ দেন।

টাকা দ্বিগুণ করার ব্যবসাও করে চক্রটি

এদিকে পুলিশ বলছে, টাকা দ্বিগুণ করার ব্যবসাও করে চক্রটি। মূলত লোভ থেকেই মানুষ তাদের ফাদেঁ পা দেন। ভুক্তভোগী কয়েকজনের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, তারা লোনের জন্য মতিঝিল এলাকায় যাতায়াত করতেন। আর এ সময়ে পরিচয় ঘটে এ চক্রের সদস্যদের সঙ্গে। তাদের সঙ্গে কথা বলার প্রথম পর্যায়ে ভালোই মনে হয়েছিল। এরপর দেড়কোটি টাকা ঋণের প্রস্তাব করলে তারা রাজিও হয়। পরে কিছু ডকুমেন্ট তারা নেয়। এরপর তিন ধাপে ২২ লাখ টাকা নেয়। পরে লোনের প্রথম অংশ ৭৫ লাখ টাকা আছে বলে এটি ব্যাগ ধরিয়ে দেয়।

যা বলছেন ভুক্তভোগীরা

যেহেতু টাকার ব্যাগ। ভেতর থেকে একটা বান্ডিল দেখিয়ে তারা জানায়। রাস্তায় না খুলে বাসায় গিয়ে খুলতে। বাসায় নিয়ে আসার পর দেখা যায়, আসলে ব্যাগে কোনো টাকাই নেই। উপরে ১ হাজার টাকার একটি জাল নোট আর নিচের অংশে অপর একটি ১ হাজার টাকার জাল নোট। আর মাঝখানে সবগুলো কাগজ দিয়ে ভরা। ভুক্তভোগীরা বলছেন, এমন অবস্থায় নিজেকে খুব অসহায় লাগছিল। মানুষ এমনভাবেও প্রতারণা করতে পারে কল্পনা করা যায়নি।

বাবলু নামের এক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, তিনি এক কোটি টাকার লোনের জন্য তাদের মোট ৮ লাখ টাকা দিয়েছেন। তিনিও একইভাবে প্রতারণার শিকার হন।

তিনি আরও জানান, প্রতারিত হওয়ার পর তিনি শুনেছেন, মতিঝিল এলাকায় এলে এমন অনেক প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের প্রতারকদের কঠোর শাস্তিও দাবি করেন তিনি।

ব্যাংক কর্মকর্তার বক্তব্য

ব্যাংকের নাম বলতে অনিচ্ছুক ব্যাংক কর্মকর্তা নাজমুল আলম রানা জানান, দুই শ্রেণির ঋণগৃহীতা রয়েছে। যারা রানিং ব্যবসা করেন, তারা কিন্তু সঠিক নিয়ম মেনেই ব্যাংক ঋণের আবেদন করেন। তাদের প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। আরেক শ্রেণির ঋণগৃহীতা রয়েছে, যাদের পেপারসও ঠিকঠাক থাকে না, আবার ঋণ পরিশোধেরও চিন্তা থাকে না। অর্থাৎ ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ঋণ নিতে চায়। মূলত তারাই প্রতারিত হয়েছে বা হচ্ছে।

নাজমুল আলম আরও জানান, ব্যাংকের কাজই ঋণ দেওয়া। আর গ্রাহক তা নিয়ে সময়মতো পরিশোধ করবেন। সুতরাং প্রকৃত ঋণগ্রাহক সরাসরি ব্যাংকে এলে কোনো ধরনের প্রতারণার সম্ভাবনা থাকে না। ব্যাংকে এলে তিনি ঋণগ্রহণের উপযুক্ত হলে ব্যাংক তাকে ফেরায় না।

চলছে অভিযান

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (রমনা) বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক জানিয়েছেন, এ প্রতারক চক্রটি প্রথমে চায়ের দোকানে আড্ডা দিয়ে কে ঋণ নিতে চায় এমন ব্যক্তি খুঁজে বের করে। পরে কী ধরনের ঋণ নিতে চায় সে বিষয়টি আগে তারা বোঝার চেষ্টা করে, তারপর তারা কৌশলে প্রতারণা করার পরিকল্পনা করে।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এরা মূলত প্রতারক। এ চক্রটি প্রথমে সবার সঙ্গে সখ্যতা তৈরি করে। পরে কীভাবে লোন ব্যাংক থেকে পাওয়া যাবে তার ব্যবস্থা করার কথা বলে। মানুষ ও লোভে পড়ে একারণে তারা ও প্রতারণা হয়।

ডিবি পুলিশের আরেক কর্মকর্তা বলেন, যে সব মানুষ যারা এভাবে লোন নিতে চায়, তারা মনে করেন কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই লোন পাওয়া যাচ্ছে এটাই ভালো পথ। এই সুযোগে এ প্রতারক চক্র লোন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে নানান সময় টাকা নেয় তাদের কাছ থেকে। যখন টাকা দেওয়ার সময় আসে তখন তারা জনসমাগম আছে এমন জায়গা বেছে নেয়, তারপর এ জাল নোটের বান্ডিলগুলো তাদের হাতে তুলে দেয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন

বিশ্লেষকরা বলছেন, যারা ঋণ নিতে চান তারা মূলত সেটি অল্প সময়ের মধ্যে পেতে চান। দেরি হওয়ায় তারা মনে করেন ব্যাংকের জটিলতা। এ কারণে তারা প্রতারকের সহযোগিতা নিতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হন। এজন্য অনেকে অর্থনৈতিকভাবে নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন। তবে সামান্য একটু সতর্ক ও লোভ-লালসা রোধ করতে পারলে এসব প্রতারণা থেকে তারা বাঁচতে পারেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিশেষজ্ঞ তৌহিদুল হক বলেন, ‘সম্প্রতি অনেক মানুষ ঋণের খপ্পরে পড়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছে। বৈধ পথে লোন নেওয়ার কার্যক্রম চলমান রাখলে তারা এমন প্রতারণার শিকার হতো না। অতিরিক্ত লোভ লালসার কারণে সাধারণ মানুষ এসব প্রতারকের খপ্পরে পড়েছে এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঋণ দেওয়ার নামে যারা মানুষের সর্বস্ব লুট করছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা উচিত এবং এ চক্র বা প্রতারকদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা দূরত্ব আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে হয়তো এমন অপরাধ কমে আসবে। প্রতারকরা ভয়ে থাকবে, এ থেকে মানুষও মুক্তি পাবে।’

কেএম/এসএ/

Header Ad

নতুন নির্বাচন কমিশন শপথ নেবে রোববার

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন। ছবি: সংগৃহীত

আউয়াল কমিশনের পদত্যাগের আড়াই মাস যেতেই অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান করে বেছে নেওয়া হয়েছে নতুন নির্বাচন কমিশন। আগামী রোববার শপথ নিতে যাচ্ছে এ কমিশন।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) নতুন নির্বাচন কমিশন বেছে নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর এ তথ্য জানান সুপ্রিম কোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম।

সিদ্ধান্ত মোতাবেক রোববার (২৪ নভেম্বর) বেলা দেড়টায় নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার কমিশনারকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণ অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক মাস পর গত ৫ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করে হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। এর আড়াই মাস যেতেই এবার অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ভার ন্যস্ত থাকবে এ কমিশনের ওপর।

নতুন নির্বাচন কমিশনে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন ছাড়াও কমিশনার হিসেবে থাকছেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমানেল মাসুদ, সাবেক যুগ্ম সচিব বেগম তহমিদা আহমদ এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা বিধান অনুযায়ী সার্চ কমিটি গঠন করার পর ওই কমিটির প্রস্তাবিত ১০ নামের তালিকা থেকে এই নির্বাচন কমিশন বেছে নিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।

দেশের চতুর্দশ সিইসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া নাসির উদ্দীনক স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার।

নিয়োগ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নাসির উদ্দীন বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার, তা তা করব, ইনশাআল্লাহ। যে দায়িত্ব এসেছে, তা আমাদের সুষ্ঠুভাবে পালন করতে হবে সবার সহযোগিতা নিয়ে।

Header Ad

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার

ছবি: সংগৃহীত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭১ জন নিহত হয়েছেন। এতে চলমান যুদ্ধে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা ৪৪ হাজার ছাড়িয়ে গেল।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে আনাদোলু এজেন্সি জানায়, দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর হামলার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৪৪ হাজার ৫৬ জন নিহত এবং ১ লাখ ৪ হাজার ২৬৮ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বোমা ও গুলিতে ৭১ জন নিহত এবং ১৭৬ জন আহত হয়েছেন।

তবে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ অনেক মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে এবং সেগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়।

এদিকে, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থার কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি এক্স পোস্টে বলেছেন, গাজা উপত্যকার ৮০ শতাংশই এখন উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। ওইসব এলাকার মানুষেরা নিরাপত্তা ও অস্তিত্বহীনতার মধ্যে বসবাস করছেন।

অনিরাপদ রুটের কারণে গাজাজুড়ে সামান্য ত্রাণ সরবরাহ করা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে জানিয়ে ফিলিপ লাজারিনি বলেন, গাজার উত্তরাঞ্চলে মানুষ কঠোর অবরোধের মধ্যে রয়েছে। যুদ্ধের দুষ্টচক্রে পড়ে তারা জীবন বাঁচাতে ছুটাছুটির মধ্যে রয়েছেন। ৪০ দিনেরও বেশি সময় ধরে ওই অঞ্চলটি মানবিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। উপত্যকায় নাগরিক শৃঙ্খলা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।

অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসসাম ব্রিগেডের দীর্ঘদিনের নেতা মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধেও পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।

আইসিসির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আদালত দুই ব্যক্তি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং ৮ অক্টোবর, ২০২৩ থেকে ২০ মে, ২০২৪ পর্যন্ত সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের জন্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করছে।

বিবৃতি অনুযায়ী, নেতানিয়াহু ও গ্যালান্ত ‘ইচ্ছাকৃতভাবে ও জ্ঞাতসারে গাজার বেসামরিক জনগণকে খাদ্য, পানি, ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহের পাশাপাশি জ্বালানি ও বিদ্যুৎসহ তাদের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য বস্তু থেকে বঞ্চিত করেছেন বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে’।

পৃথক এক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত জানায়, দেইফ, পুরো নাম মোহাম্মদ দিয়াব ইব্রাহিম আল-মাসরিও গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামি। বিবৃতি মতে, আদালত ‘সর্বসম্মতভাবে’ তার বিরুদ্ধে ৭ অক্টোবর, ২০২৩ থেকে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

দেইফের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে আরও রয়েছে- ইসরাইলি ভূখণ্ডে রকেট নিক্ষেপ এবং ৭ অক্টোবর হামলা চালানো হামলায় সহস্রাধিক ইসরাইলি নিহত হয়। তবে৭ অক্টোবর হামলার কয়েক মাস পর চলতি বছরের জুলাইয়ে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসসাম ব্রিগেডের দীর্ঘদিনের নেতা দেইফকে এক বিমান হামলায় হত্যার দাবি করেছে ইসরাইল। বিমান হামলাটি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের তাঁবুতে এবং একটা পানি শোধনাগারে আঘাত হানে। এতে কমপক্ষে ৯০ জন নিহত ও ৩০০ জন আহত হয়।

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নতুন নির্বাচন কমিশন শপথ নেবে রোববার
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী