অটোরিকশা ছিনতাই চক্র গ্রেপ্তার
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার লাইসেন্স না থাকায় এটাকে টার্গেট করে সারাদেশে কয়েক ভাগে ভাগ হয়ে অপরাধ করে আসছে একটি চক্র। ভাড়ার কথা বলে নির্জনে নিয়ে ছিনতাই করে লাইসেন্স বিহীন অটোরিকশা বিক্রি করে দেয় তারা। ছিনতায়ে বাঁধা দেওয়ায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে খুনের ঘটনাও ঘটছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
বুধবার (২ মার্চ) রাতে রাজধানীর গাবতলী টার্মিনাল, বংশাল, ঢাকা মেডিকেল, যাত্রাবাড়ি, শনির আখড়া ও মাতুয়াইলে অভিযান চালিয়ে এ চক্রের প্রধান রাফসান হোসেন রুবেলসহ সিএনজি ছিনতাই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
সিআইডি জানায়, এ চক্রের প্রধান রাফসান হোসেন রুবেল ওরফে পাওয়ার রুবেল (৩২) সহ তার দুই সহযোগী আবুল কালাম (৫০) ও ইমন আলী (২২) গ্রেপ্তার হন। পরে তাদের দেওয়া তথ্যে গ্রেপ্তার হন- মাসুদ রানা রনি (৩২) ও রকিবুল হাসান আলিফ (৩২)। তাদের কাছ থেকে ছিনতাই করা সিএনজি উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার লাইসেন্স না থাকায় এবং ইঞ্জিন ও চেচিস নাম্বার না থাকায় তা ছিনতাই করে সহজেই বিক্রি করে দেওয়া যায়, ভালো দামও মেলে। পাশাপাশি সিএনজি ছিনতাইয়ের পরে মালিকের কাছে মুক্তিপণও দাবি করে চক্রটি।
সিআইডির তদন্তে বেরিয়ে আসে এই চক্রটি বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলে বিভক্ত হয়ে অপরাধ কর্মকাণ্ড সংঘটিত করে আসছে। প্রথম দলের সদস্যরা সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালককে টার্গেট করে, তার বাসা-বাড়ি, মোবাইল নম্বর ও গাড়ির গ্যারেজের অবস্থানসহ সব তথ্য সংগ্রহ করে। পরে তারা দ্বিতীয় দলকে এই সব তথ্য বুঝিয়ে দেয়। এই দলের সদস্যরা গাড়ির গ্যারেজের আশপাশে অবস্থান নেয়, সারাদিন গাড়ি চালিয়ে চালক রাতে গাড়ি গ্যারেজে জমা দিতে যাওয়ার সময় ছিনতাইকারীরা যাত্রীবেশে গাড়িতে ওঠে, অধিক ভাড়ার কথা বলে নির্জন এলাকায় নিয়ে যায়। পরে চালককে মারধোর করে রাস্তার পাশে ফেলে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়। ওখান থেকে গাড়ি ছিনিয়ে নিয়ে তৃতীয় দলের কাছে পৌঁছে দেয়। পরে তৃতীয় দলের সদস্যরা চালককে ফোন নিয়ে নিদিষ্ট অর্থের বিনিময়ে সিএনজি ও অটোরিক্সা ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব করেন। অর্থ পেলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সিএনজি ফেরত পায় ভূক্তোভোগী চালক।
বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে সিআইডি এ ধরনের চোর চক্রের উপর নজরদারি বৃদ্ধি করে। অবশেষে সিআইডির একটি চৌকস টিম এ চক্রের সদস্যদের সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এবং এ অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত থাকার কারণে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মুক্তা ধর আরও বলেন, মাসুদ রানা প্রথম দলের সদস্য হিসেবে ছিনতাইয়ের জন্য টার্গেট করা সিএনজির চালক ও তার গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেন। পরে চক্রেটির টিম লিডার রাফসান হোসেন রুবেল পাওয়ার রুবেলকে জানায়। দ্বিতীয় দলের নেতৃত্বে থাকা রকিবুল হাসান আলিফ ও তার অপর সহযোগীরাসহ যাত্রীবেশে লোভনীয় ভাড়া দেওয়ার কথা বলে নির্জন এলাকায় নিয়ে যায়।
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, চক্রটির প্রধান রাফসানের নামে নয় থেকে দশটি মামলা আছে সারাদেশের বিভিন্ন থানায়। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।
কেএম/এএস