ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন সিআইডির
অজ্ঞাত নারীর লাশ চিহ্নিত করে মূল আসামি গ্রেপ্তার
গত (২৫ ফেব্রুয়ারি) আশুলিয়ায় ১ নং শিমুলিয়া ইউনিয়নের রাঙ্গামাটি এলাকার সড়কের পাশ থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় কাঁথা দিয়ে মোড়ানো এক অজ্ঞাতনামা নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর সিআইডি ঘটনাটি তদন্ত শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা অজ্ঞাত সেই নারীর পরিচয় শনাক্ত এবং হত্যাকান্ডের মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
ওই নারীর নাম আঁখি আক্তার নাজনীন (৩০)। সিআইডি জানায়, বুধবার (২ মার্চ) দিবাগত রাতে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী এলাকা থেকে আসামি আব্দুল্লাহ শেখ (২৫) কে গ্রেপ্তার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সিআইডি সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, এ ঘটনায় আশপাশ এলাকার বিভিন্ন উৎস হতে প্রয়োজনীয় তথ্য সরেজমিনে সংগ্রহ করা হয়। তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ভিকটিম আঁখি আক্তার নাজনীনের ঠিকানা পাওয়া যায়। এবং তাকে হত্যার ঘটনায় তার কথিত স্বামী আব্দুল্লাহ শেখ এর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি এই অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার কথা স্বীকার করেছে। আবদুল্লাহ জানায়, আঁখির প্রাক্তন স্বামী মো. আলমগীর হোসেন (৩১) গার্মেন্টসের সুইং অপারেটর হিসেবে কাজ করে আসছিল। তাদের ১০ বছরের সাংসারিক জীবনে ৬ বছর বয়সী একজন সন্তান রয়েছে। ফ্যাক্টরীতে একই পদে কাজ করত আব্দুল্লাহ শেখ। তার সঙ্গে কাজ করার সুবাদে আঁখি ও আব্দুল্লাহর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে বিয়ের আশ্বাসে প্রায় ১ বছর যাবৎ তারা স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে বসবাস শুরু করে। পরবর্তীতে আব্দুল্লাহ শেখের পরামর্শে আঁখি তার স্বামী মো. আলমগীর হোসেন আলম এর নিকট হতে প্রায় ৯ মাস পূর্বে ডিভোর্স নিয়ে শ্রীপুর এলাকায় বসবাস করত।
পুলিশ সুপার জানান, আঁখি আক্তার তাদের বিয়ের কথা কাবিন রেজিস্ট্রি করার জন্য আব্দুল্লাহ শেখকে বললে সে বিভিন্ন অজুহাতে টালবাহানা করতে থাকে। আঁখি বিয়ের কাবিন রেজিস্ট্রি করার বিষয়ে বার বার তাগিদ দিলে আসামি ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে গলায় ওড়না পেচিয়ে হত্যা করে লাশটি ঘরের ভিতর রেখে অপেক্ষা করতে থাকে। রাত গভীর হলে সে সুযোগ বুঝে অপর ব্যক্তির সহযোগিতায় তাকে আশুলিয়া থানাধীন রাঙ্গামাটি এলাকায় সড়কের পাশে কাঁথা মোড়ানো অবস্থায় ফেলে দ্রুত ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় নিহতের দুলাভাই মো. শফিকুল ইসলাম (৪১) বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার প্রেক্ষিতে আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরে বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে বলে জানান সিআইডি কর্মকর্তা।
কেএম/এএস