আইসের সিন্ডিকেটকে আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে র্যাব
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থেকে অবৈধ মাদক আইসের (ক্রিস্টাল মেথ) সর্ববৃহৎ চালান ১২ কেজি আইস, ১ লাখ পিস ইয়াবা ও ২টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্রসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বুধবার (২ মার্চ) মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর র্যাব জানায়, সারাদেশে আইসের সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে কাজ করছে তারা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মো. জসিম উদ্দিন ওরফে জসিম(৩২), মকসুদ মিয়া (২৯), মো. রিয়াজ উদ্দিন (২৩), শাহিন আলম (২৮) ও মো. সামছুল আলম (৩৫)।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) কাওরান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
র্যাব গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় র্যাব-১৫ এর একটি অভিযানিক দল মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করেন। এসময় তাদের থেকে ১২ কেজি আইস (ক্রিস্টাল মেথ) যার আনুমানিক মূল্য ৫০ কোটি টাকা, ১ লাখ পিস ইয়াবা, ৪ হাজার ৬০০ পিস চেতনানাশক মাদক সিডাকটিভ ইনজেকশন, ২টি বিদেশি পিস্তল, ৯ রাউন্ড গোলাবারুদ, ২টি টর্চলাইট, বার্মিজ সিমকার্ড, ১ লাখ ৬৪ হাজার বাংলাদেশি টাকা ও ১ লাখ বার্মিজ মুদ্রা ও ৫টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত মাদক হলো আইস বা ক্রিস্টাল মেথ। ক্রিস্টাল মেথ বা আইসে ইয়াবার মূল উপাদান এমফিটামিনের পরিমান অনেক বেশী থাকে। তাই মানবদেহে ইয়াবার চেয়েও বহুগুণ ক্ষতিসাধন করে এই আইস।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি আইসের মাধ্যমে নেশার প্রচলন বৃদ্ধি পাওয়ায় র্যাব এই মাদক কারবারির সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে নজরদারি বৃদ্ধি করেন। এরই প্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে ৫ কেজি আইসসহ ২ জনকে গ্রেপ্তার করেন র্যাব। এ ছাড়া বিভিন্ন সূত্র ধরে পরবর্তীকালে আরও বেশ কয়েকজনকে আইসসহ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র্যাব।
আইস সিন্ডিকেটের তৎপরতারোধে ও জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেপ্তারকৃতরা মায়ানমারের মাদক চক্রের যোগসাজশে দেশে অবৈধ আইস কারবারের সঙ্গে জড়িত। বাংলাদেশে গ্রেপ্তারকৃত জসিমের নেতৃত্বে মাদক সিন্ডিকেটের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
মিডিয়া পরিচালক বলেন, দেশে ওই চক্রের সদস্য সংখ্যা ১২ থেকে ১৫ জন। এই চক্রটি মূলত সোনাদিয়া কেন্দ্রিক একটি মাদক চোরাকারবারী চক্র। এ চক্র ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, বরিশাল ইত্যাদি এলাকায় বিভিন্ন কৌশলে মিয়ানমার থেকে নিয়ে আসা অবৈধ মাদক ক্রিস্টাল আইস ও ইয়াবা পৌঁছাত। তারা মূলত নৌপথ ব্যবহার করে বিভিন্ন কৌশলে পার্শ্ববর্তী দেশ মায়ানমার থেকে মাদক নিয়ে আসত।
কমান্ডার মঈন বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সম্প্রতি তারা নৌপথকে প্রাধান্য দিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে মাদক সরবরাহ করে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
কেএম/টিটি