অনলাইনে জুয়া চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার
অনলাইন ওয়েবসাইট ভার্চুয়াল কারেন্সি ব্যবহারকারী ও অবৈধভাবে ই-ট্রানজেকশনের মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার চক্রের এজেন্টসহ ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সিআইডির সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির অ্যাডিশনাল ডিআইজি ইমাম হোসেন।
বুধবার (২ মার্চ) তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সিআইডি দক্ষিণের একটি বিশেষ টিম কেরানীগঞ্জ থানা এলাকাসহ ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মো. তোফায়েল ইসলাম রাসেলকে (২৭) গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া তথ্য মতে অপর চার আসামি মো. শাকিল খান (৩৫), মো. পারভেজ (২৪), মো. সাগর (৩০), মো. জিয়াউল হক রনিকে (৩৯) গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির তথ্য মতে, এ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে একাধিক চক্র আইপিএল, বিপিএল, সিপিএলসহ বিভিন্ন খেলায় বাজি/বেটিং এর মাধ্যম হিসেবে বেট ৩৬৫, ৯ উইকেটস সহ বিভিন্ন অনলাইন ওয়েবসাইট ব্যবহার করে ভার্চুয়াল কারেন্সি ব্যবহার করে জুয়া খেলার আয়োজন করে আসছে। তারা অবৈধভাবে ই-ট্রানজেকশনের মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার, যুব সমাজের নৈতিক অবক্ষয় এবং উন্নয়নের ধারাকে বাধাগ্রস্ত করে আসছে। অবশেষে তাদের ধরা পড়তে হয়েছে।
অ্যাডিশনাল ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, মো. তোফায়েল ইসলাম রাসেল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সত্যতা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। সে অনার্সের ছাত্র। তার ইংরেজি ভাষায় বিশেষ দক্ষতা থাকায় অনলাইন গ্যাম্বলিং এ ভার্চুয়াল ডলার সংগ্রহ করে, তা বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে বাংলাদেশি মুদ্রায় পরিণত করার জন্য নিটেলার, স্ক্রিল নামক ভার্চুয়াল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে থাকে। এ ছাড়াও সে নিজে ইংল্যান্ডভিত্তিক বেট ৩৬৫ নামক অনলাইন গ্যাম্বলিং অ্যাকাউন্ট বিশেষ প্রক্রিয়ায় সংগ্রহ করে অর্থের বিনিময়ে অন্যান্যদের মধ্যে সরবরাহ করে এবং তাদের নিকট নিটেলার, স্ক্রিল নামক ভার্চুয়াল মুদ্রা সরবরাহ করে।
ইমাম হোসেন আরও বলেন, অনলাইন গ্যাম্বলিং চক্রের এজেন্ট প্রধান আসামি মো. তোফায়েল ইসলাম রাসেল ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও হোয়াটস অ্যাপ ব্যবহার করে বিভিন্ন মেসেঞ্জার গ্রুপে যুক্ত হয়ে সারাদেশের যুব সমাজের মানুষকে অল্প সময়ে প্রচুর অর্থ উপার্জনের লোভ দেখিয়ে অনলাইন বেটিং এ আসক্ত করে আসছে।
তিনি বলেন, সে নিজে এই বিষয়ে বিশেষভাবে পারদর্শী হওয়ায় বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডলার 'বাই অ্যান্ড সেলিং' বিভিন্ন গ্রুপের এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এই লক্ষ্যে ভার্চুয়াল ইউএস ডলার অনলাইন জুয়াড়িদের মধ্যে কমিশন ভিত্তিতে সরবরাহ করে। কোনো কারণে ভার্চুয়াল ইউএস ডলার অনলাইনে আটক হলে আসামি রাসেল তাদের ছাড়াতে বিশেষভাবে পারদর্শী।
সিআইডি জানায়, আসামি শাকিলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, সে আসামি রাসেলের বিশেষ সহযোগী মাহিম খানের (ছদ্মনাম) বিজনেস হোয়াটস অ্যাপ নং এ যোগাযোগ করে ৯ উইকেটস নামক অপর একটি অনলাইন জুয়ার ওয়েবসাইট ও বেট ৩৬৫ নামক ওয়েবসাইটে অনলাইন গ্যাম্বলিং করে থাকে। শাকিল নিজেকে ৯ উইকেটস এর স্থানীয় এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দেয়।
ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, এ চক্রের বিরুদ্ধে যুব সমাজের নৈতিক অবক্ষয় ও ধ্বংসের উদ্দেশ্যে অনলাইনে জুয়া খেলার মাধ্যমে ডিজিটাল ও ইলেক্ট্রনিক প্রতারণার মাধ্যমে অবৈধ ই-ট্রানজেকশন এবং সহায়তা করে কোটি কোটি টাকা লেনদেন করাসহ চক্রের সদস্যরা নিজেদের নাম-পরিচয় গোপন রেখে ছদ্মবেশ ধারণ করে মিথ্যা তথ্য প্রদান করায় তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কেএম/টিটি