যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সঙ্গে 'আর্টেমিস অ্যাকর্ডস' চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ, ফলে বাংলাদেশ এখন ৫৪তম দেশ হিসেবে এই বৈশ্বিক উদ্যোগে যুক্ত হলো। আর্টেমিস অ্যাকর্ডস শান্তিপূর্ণ, স্বচ্ছ এবং টেকসই মহাকাশ অনুসন্ধানকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে একটি বহুপাক্ষিক চুক্তি সিরিজ, যা নাসার নেতৃত্বে মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে শক্তিশালী করে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের উপস্থিতিতে প্রতিরক্ষা সচিব মো. আশরাফ উদ্দিন আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তিতে সই করেন।
২০২০ সালে প্রতিষ্ঠিত আর্টেমিস অ্যাকর্ডস চুক্তি একটি অ-বান্ধনযোগ্য বহুপাক্ষিক ব্যবস্থা, যার লক্ষ্য মহাকাশ অনুসন্ধানে শান্তিপূর্ণ, স্বচ্ছ এবং টেকসই সহযোগিতা নিশ্চিত করা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণায় অংশগ্রহণের পাশাপাশি মহাকাশ ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও মহাকাশ সম্পদের দায়িত্বশীল ব্যবহারকে সমর্থন করবে, যা দেশের জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যগুলোর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
বাংলাদেশের পক্ষে সই করা চুক্তির পর, চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, "এটি বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন সুযোগের দ্বার উন্মুক্ত করেছে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ তার মহাকাশ গবেষণা কার্যক্রমকে আরও ত্বরান্বিত করতে পারবে।"
প্রতিরক্ষা সচিব আশরাফ উদ্দিন জানান, আর্টেমিস অ্যাকর্ডস মহাকাশের শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ এবং টেকসই ব্যবহারের জন্য একটি নির্দেশিকা হিসেবে কাজ করবে। তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশ ১৯৮০ সালে স্পারসো প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণায় অংশগ্রহণ করছে এবং আর্টেমিস অ্যাকর্ডস চুক্তিতে যোগদান বাংলাদেশকে আরও শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাবে।"
তিনি বলেন, "এই চুক্তি প্রযুক্তি স্থানান্তর, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণার নতুন সুযোগ তৈরি করবে, যা বাংলাদেশের মহাকাশ কার্যক্রমের উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।" তিনি যোগ করেন, "নাসা এবং অন্যান্য মহাকাশ সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করার মাধ্যমে বাংলাদেশ উন্নত স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রবেশাধিকার পাবে, যা দেশের ভবিষ্যৎ মহাকাশ উদ্যোগগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।"
স্পারসোর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো পৃথিবী পর্যবেক্ষণ এবং জলবায়ু মনিটরিং স্যাটেলাইট তৈরি করার জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা পাবে, যা বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এছাড়া, বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিজ্ঞানীরা বৈশ্বিক মহাকাশ গবেষণায় অংশ নিতে পারবে, এবং শিক্ষার্থীরা নাসার প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম, বৃত্তি ও এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম থেকে উপকৃত হবে।
এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা উইংয়ের মহাপরিচালক ও চিফ অব প্রোটোকল এএফএম জাহিদ-উল-ইসলাম এবং বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন সংস্থা (স্পারসো)-এর চেয়ারম্যান মো. রাশেদুল ইসলাম।