কর্নেল পরিচয়ে প্রতারণা, অবশেষে গ্রেপ্তার
গণভবন ও বঙ্গভবনের কর্নেল মেজর পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন দোকানে দোকানে ফোন দিয়ে বাকিতে নেন দামি পণ্য। পরে কম দামে বিক্রি করেন অন্য দোকানে। এমন প্রতারণার মূলহোতা ও তার সহযোগীসহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রবিবার (১৮ ডিসেম্বর) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি প্রধান) হারুন অর রশীদ এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তাদের ধরার পর পুলিশ বলছে, দিন দিন নতুন নতুন কৌশল আবিষ্কার করছেন প্রতারকরা।
ডিবি প্রধান বলেন, এ সব প্রতারক প্রতারণা শেষে বন্ধ করে রাখেন মোবাইল ফোন। নতুন নম্বর সচল করে আবারও শুরু করেন প্রতারণা।
তিনি বলেন, কাওসার আহমেদ নামে এক ব্যক্তি তার গ্রামের বাড়ি কক্সবাজার হলেও দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় থাকেন প্রতারণার কাজ চালিয়ে নেওয়ার জন্য। গত কয়েক বছর ধরে প্রতারণাই তার একমাত্র পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি। প্রতারণার নতুন নতুন কৌশলের মধ্যে তার ধরনটি কিছুটা আলাদা বটে, বলছে পুলিশ।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা রেকি করে হার্ডওয়্যারের দোকান টার্গেট করেন তিনি। কৌশলে মালিকের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করেন। পরে ফোন দিয়ে নিজেকে কখনো বঙ্গভবনের কখনো গণভবনের মেজর বা কর্নেল পরিচয় দিয়ে পণ্যসামগ্রী অর্ডার করেন। ডিউটি শেষে টাকা পরিশোধ করবেন এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজেই যান ওই টার্গেটকৃত দোকানে। এবার নিজেকে কথিত মেজর বা কর্নেলের ছেলে পরিচয় দিয়ে নিয়ে আসেন হার্ডওয়্যারসামগ্রী।
মিরপুরে এক মার্কেটে নূর আলম নামে এক দোকানির কাছ থেকে প্রতারণা করে আনা পণ্যসামগ্রী নিয়ে আসেন, পরে অন্য দোকানে অর্ধেক দামে বিক্রি করে দেন কাওসার।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ আরও বলেন, একটি মোবাইল ফোন নম্বর একবারের বেশি ব্যবহার করেন না কাওসার। এক দোকানে একবার গেলে ওই দোকানে দ্বিতীয়বার যায় না।
তিনি আরও বলেন, দোকানদারকে জানান যে, সে গণভবন বা বঙ্গভবনে মালামাল দেন। মূলত রাজধানীর সব দোকান মালিক তো আর তাদের চেনেন না কারা এসব জায়গাতে মালামাল দেন, তাই তারা এ সব প্রতারককে সহজে বিশ্বাস করেন।
পুলিশ জানায়, এ সুযোগটা কাজে লাগায় এ প্রতারকচক্র। এমনভাবে কথা বলেন, যেন আগে অনেকবার মাল নিয়েছেন এবং টাকা পাঠানোর কথা বলে সেটা নেয়। এরপর মোবাইল ফোনের সিমটা বন্ধ করে দেয়। এভাবে তারা প্রতারণা করে আসছিল।
প্রতারণার মামলায় জামিন পাওয়া যায় খুব সহজেই। কোটি টাকা প্রতারণা করে লাখ টাকা খরচ করে জামিনে বেরিয়ে আবারও একই অপরাধে জড়ায় প্রতারকরা এমন পর্যবেক্ষণ পুলিশের।
এ সব প্রতারণা থেকে মানুষকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে ডিবি পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে পুলিশের তদন্ত চলছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
কেএম/আরএ/