সাংবাদিক পরিচয়ে ছিনতাই ও ডাকাতি!
নুরুল আফছার। নিজেকে পরিচয় দেন দৈনিক ভোরের চেতনার সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী। কিন্তু তিনি একজন পেশাদার ছিনতাইকারী। দীর্ঘদিন সাংবাদিক ও মানবাধিকারের পরিচয় ব্যবহার করেই ছিনতাই ও ডাকাতি করে আসছিলেন আফছার। চালাতেন একটি চক্র। এই চক্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের ধরার পর পুলিশ বলছে-নিজেকে সাংবাদিক-মানবাধিকারকর্মী পরিচয় দিয়ে ছিনতাই ও ডাকাতি করতেন তারা।
আফছার চক্রকে গ্রেপ্তারের পর এমন তথ্যই জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক। আজ শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শ্যামলীতে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
পুলিশ বলছে, সড়কে নিরাপদে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্য ছিনতাই ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত গাড়ির সামনে সাংবাদিক লেখা কাগজ ও পত্রিকার নামে স্টিকার ব্যবহার করতেন আফছার।
জানা যায়- গত ৩০ নভেম্বর একই কায়দায় রাজধানীর শেরেবাংলা নাগর থানার খেজুরবাগান এলাকা থেকে এক ভুক্তভোগীকে বিমানবন্দরে নামিয়ে দেওয়ার কথা বলে গাড়িতে তুলে মারধর ও বিদেশি মুদ্রাসহ কয়েক লাখ টাকা ছিনিয়ে নেন আফছার চক্রের সদস্যরা। পরে এ ঘটনায় দায়ের করা হয় একটি মামলা। সেই মামলাতেই তথ্যপ্রযুক্তি ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলন নুরুল আফছার ও তাঁর সহযোগী আফজাল হোসেন এবং মো. মনিরুজ্জামান।
ডিসি আজিমুল হক বলেন, গত নভেম্বর মাসের ৩০ তারিখ ভোর ৬টার দিকে বিমানবন্দরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকার সংসদ সদস্যদের বাসভবনের ৩ নম্বর ভবনের বাসিন্দা অলিউর রহমান তুষার (২৭) খেজুরবাগান ক্রসিং থেকে একটি প্রাইভেট কারে ওঠেন। এ সময় প্রাইভেট কারে চালকসহ মোট চারজন যাত্রী ছিলেন।
প্রাইভেট কারটি একটু সামনে গিয়ে সংসদ ভবনের ৬ নম্বর গেটে (মণিপুরিপাড়ার বিপরীতে) যাওয়ামাত্রই গাড়িতে থাকা ব্যক্তিরা তুষারের চোখে কালো চশমা দিয়ে হাত বেঁধে ফেলেন। এরপর একটি লাঠি দিয়ে মারধর করেন। পরে ভুক্তভোগীর পকেটে থাকা ৫ হাজার ১০০ কাতারের মুদ্রা, যা বাংলাদেশি প্রায় দেড় লাখ টাকা, নগদ টাকা ও ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নিয়ে নেন।
এরপর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে ভুক্তভোগীকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার থানার বলিয়ারপুর যমুনা ন্যাশনাল পার্কের ফেলে দেন। পরে গত ৬ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী তুষার বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলার দায়ের করেন। ওই মামলায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
কেএম/এএজেড