‘পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সহযোগীদের ছিনিয়ে নিতে আসে জঙ্গিরা’
আদালত থেকে আসামি ছিনতাইয়ের আগে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী কয়েকদিন রেকি করে তাদের জঙ্গি বন্ধুদের ছিনিয়ে নিতে আসে আনসার আল ইসলামের জঙ্গিরা। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার বেশ কয়েকটি তথ্য এ সব কথা বলছে।
পুলিশ বলছে, ঘটনাস্থল থেকে হাতকড়া কাটার অ্যান্টিকাটার, চাবি ও পিপার স্প্রে উদ্ধার করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, জঙ্গিরা আগে থেকেই সতর্ক ছিল পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা আসামি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের কর্মকর্তারা বলছেন, আনসার আল ইসলাম কখনো রেকি ছাড়া, পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়া কিছু করে না। এখানেও তারা রেকি করেছে বলেই মনে হচ্ছে। যেখান থেকে দুই আসামি ছিনতাই করা হয়েছে, সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না, এটা হয়ত তারা জানত।
জানতে চাইলে সিটিটিসি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ছিনিয়ে নেওয়া দুই জঙ্গিসহ জড়িতদের খুব দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। এ লক্ষ্যে একযোগে কাজ করছে ডিএমপি, ডিবি, সিটিটিসিসহ বাংলাদেশ পুলিশের অন্যান্য সব ইউনিট।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের এক কর্মকর্তা বলেন, জঙ্গি সংগঠনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সশস্ত্র হামলায় বিশ্বাসী আনসার আল ইসলাম। একটি সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় আজ ১২ আসামীকে কোর্টে তোলা হয়। তাদের মধ্যে চার জঙ্গি ছিলেন আনসার আল ইসলামের সশস্ত্র টিমের সদস্য। যারা প্রকাশক দীপন ও লেখক অভিজিৎকে কুপিয়ে হত্যায় সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, চার জন করে আসামিদের কোর্ট থেকে গারদে নেওয়া হচ্ছিল। প্রথম চারজনের মধ্যে ছিল জঙ্গি সদস্য আরাফাত, সবুর, মইনুল হাসান শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব। পরে অপরাধীরা পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে হামলা করে তাদের জঙ্গির সহযোগীদের তুলে নিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, রবিবার (২০ নভেম্বর) দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটের দিকে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রধান ফটকের সামনে থেকে মোটরসাইকেলে করে আসা জঙ্গিরা দুই আসামিকে ছিনিয়ে নেয়। ছিনিয়ে নেওয়া আসামিরা হলো- সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার মাধবপুরের মইনুল হাসান শামীম এবং লালমনিরহাটের আদিতমারি উপজেলার ভেটেশ্বর গ্রামের আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব। তারা জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য। দুই জঙ্গিকে গ্রেফতারে রাজধানীতে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। রাজধানীর প্রতিটি থানা ও অন্যান্য ইউনিটকে চেকপোস্ট বসানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সারাদেশের আদালতগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
কেএম/আরএ/