তরুণদের জিহাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করত রাফাত: সিটিটিসি
বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতায় জামায়াতে ইসলামী এর আমিরের ছেলে ও সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয় ডা. রাফাতসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। গ্রেপ্তারকৃত অপর ব্যক্তির নাম আরিফ।
বুধবার (৯ নভেম্বর) সিলেট জালালাবাদ থানার রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) বিকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।
সিটিটিসি জানায়, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হিজরতকারী ৩ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। এরপরে যাত্রাবাড়ী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি হয়। ওই মামালায় জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানায় তারা প্রত্যেকেই ডা. রাফাত এর মাধ্যমে দাওয়াতপ্রাপ্ত হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, গ্রেপ্তারকৃত ডা. রাফাত ধর্মভীরু তরুণদের জিহাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার জন্য দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গি সংগঠনের সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক ডা. রাফাত জানায় ২০২১ সালের জুন মাসে তার ও অপর সহযোগী তাহিয়াতের নেতৃত্বে সিলেট এলাকা থেকে ১১ জন বান্দরবানে হিজরত করে। হিজরতকালীন সময়ে বান্দরবানে গিয়ে জঙ্গি সংগঠনের অন্যান্য নেতাদের সাথে যোগাযোগ করতে না পারায় ৭ দিন পরে তারা সিলেট ফিরে দাওয়াতি কার্যক্রম অব্যাহত রাখে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গি সংগঠনের সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক ডা. রাফাত ও তার অন্যান্য সহযোগীরা তরুণদের দূর্গম পাহাড়ে নিয়ে হিজরতের নামে জঙ্গি প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। ডা. রাফাত ও তাহিয়াত কর্তৃক সশস্ত্র জিহাদে উদ্বুদ্ধ হয় এবং হিজরতের উদ্দেশ্যে বের হয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে। ডা. রাফাত এবং তার সহযোগীরা পুনরায় মসজিদে এবং লেকের পাড়ে বসে জিহাদ সম্পর্কিত আলোচনা অব্যাহত রাখে।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তী সময়ে ডা. রাফাতের নির্দেশনায় তাহিয়াত সহযোগীসহ ঢাকায় হিজরত করার উদ্দেশ্যে বের হয় সিটিটিসি কর্তৃক গ্রেপ্তার হয়। ডা. রাফাত কোরআন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের আড়ালে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে উগ্রবাদী বক্তব্যের মাধ্যমে ধর্মভীরু তরুণদের জঙ্গিবাদের দীক্ষা দেয়। এ সংগঠনের কয়েকজন সদস্যকে বোমা বানানোর প্রশিক্ষণ প্রদান করে এবং পরবর্তীতে উক্ত বোমার শক্তিমত্তা পরীক্ষা করে।
এর পাশাপাশি নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সঙ্গে জামায়াতের কোনো সংযোগ রয়েছে কী-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন সিটিটিসি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এ তথ্য সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক ডা. রাফাত জামায়াত আমিরের ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের বের হয়ে আসবে। পিতার সংগঠনের (জামায়াত) কোনো নির্দেশনা তার কাছে ছিল কী-না বা তাদের দ্বারা নির্দেশিত হয়ে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত হয়েছেন কী-না তা রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করে দেখা হবে।
কেএম/এএস