সুযোগমত লঞ্চের যাত্রীদের মালামাল চুরি করেন তারা
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকা, লঞ্চের কেবিনে চুরি, অজ্ঞান পার্টি ও ছিনতাই চক্রের মূলহোতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে সদরঘাট নৌ থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. খাইরুল ইসলাম বিশ্বাস (৩০) ও মো. স্বপন হাওলাদার (৪২)। এ সময় তাদের কাছ থেকে কেবিন খোলার কাজে ব্যবহৃত একাধিক নকল চাবি, চুরি, ছিনতাই শেষে মালামাল বহনে ব্যবহৃত একটি কাঁধে ঝোলানে ব্যাগ, কয়েকটি জুসের বোতল, দুইটি মোবাইল, চুরিকৃত নগদ ৮ হাজার ৩০০ টাকা জব্দ করা হয়।
নৌপুলিশ জানায়, গ্রেপ্তাররা সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকা ও লঞ্চের কেবিনসহ লঞ্চে থাকা যাত্রীদের মূল্যবান জিনিস চুরি করে পালিয়ে যায়। সম্প্রতি লঞ্চের একজন যাত্রী ক্যান্টিনে খেতে গেলে চোর-চক্র অভিনব কৌশলে কেবিনের তালা খুলে নগদ টাকা, স্বর্নালংকারসহ আনুমানিক ৫ লাখ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নৌ-পুলিশ সদরদপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন নৌ-পুলিশের ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস।
তিনি বলেন, গত ১৪ সেপ্টেম্বর মো. রেজাউল করিম নামের একজন ভুক্তভোগী তার পরিবারসহ গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সুরভী-৭ লঞ্চের তৃতীয় তলার ৩০৫ নম্বর কেবিনে উঠেন। পরবর্তীতে তার পরিবারসহ খাওয়া-দাওয়ার জন্য লঞ্চের ক্যান্টিনে গেলে সেই সুযোগে চোর-চক্র অভিনব কৌশলে কেবিনের তালা খুলে নগদ, টাকা, স্বর্নালংকারসহ আনুমানিক ৫ লাখ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়।
নৌপুলিশের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস আরও বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় চুরি করে যাত্রীদের নিঃস্ব করে আসছিল। এ চক্রকে ধরার জন্য সদরঘাট নৌ থানা পুলিশ তৎপর হয়। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা তাদের ছবি সংগ্রহ করে শনাক্ত করা হয়। এরপরে তাদেরকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে সদরঘাট টার্মিনালের বিভিন্ন পয়েন্টে সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করাসহ গুপ্তচর নিয়োগ এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সোমবার চক্রের দুজনকে সদরঘাট নৌ থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা লঞ্চে চুরি, অজ্ঞান পার্টিসহ ছিনতাই চক্রের সক্রিয় সদস্য। তাদের আরো একাধিক গ্রুপ রয়েছে।
নৌপুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে অভিনব কৌশলে লঞ্চে চুরি করে আসছিল। চুরি করতে গিয়ে অনেক সময় যাত্রীদের চেতনানাশক ওষুধ, পানি, জুস, চা, বিস্কুটসহ অন্যান্য খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে অজ্ঞান করে যাত্রীদের স্বর্বস্ব লুটে নিত। এছাড়াও ক্ষেত্রবিশেষ তারা যাত্রীদের মালামাল ছিনতাই করে পালিয়ে যেত। গ্রেপ্তার খাইরুল ইসলাম বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ৮টি মামলা রয়েছে।
কেএম/এএস