ফ্রি ফায়ার গেম নিয়ে দ্বন্দ্বে খুন, গ্রেপ্তার ২

মোবাইলে ফ্রি ফায়ার গেমে আসক্ত হয়ে পড়ছেন আমাদের দেশের অনেক তরুণ। এ নিয়ে সচেতন মহল উদ্বেগের কথা জানিয়েছে বিভিন্ন মাধ্যমে। এবার সেই ফ্রি ফায়ার গেম নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে রাজধানীর কদমতলীতে রাকিবুল ইসলাম নামে এক তরুণ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দুই সহোদরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) শাহ ইফতেখার আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে রোববার (১৭ এপ্রিল) রাতে কদমতলী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সজীব দে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান। এ ঘটনার তিনদিনের মধ্যেই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে কদমতলী থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. রবিন ও মো. রাসেল। তারা দুজন আপন ভাই। রবিন কদমতলী এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগকারী একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মী।
শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) একটি ময়লার ভাগাড় থেকে রাকিবুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত রাকিবুল শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।
ওসি সজীব দে বলেন, কদমতলী থানার মিনাবাগ ২ নম্বর গলির পরিত্যক্ত ময়লার ভাগাড়ে অজ্ঞাত তরুণের মরদেহ পাওয়া যায়। কদমতলী থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে পরিচয় শনাক্ত করে। পরে নিহতের বাবা কদমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
সজীব দে আরও বলেন, মামলাটির তদন্তকালে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করা হয়।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, অভিযুক্ত রবিন ইন্টারনেট সংযোগকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। রবিন ও নিহত রাকিবুল মোবাইলে ফ্রি ফায়ার গেমে আসক্ত ছিলেন। রবিনের স্মার্টফোন না থাকায় তার আইডি নিহত রকিবুলকে আট হাজার টাকায় বিক্রি করে দিতে বলেন। নিহত রাকিবুল আইডি বিক্রি না করে রবিনের আইডি ব্যবহার করে নিজেই খেলতে থাকেন। গেল বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে নিহত রাকিবুল কদমতলী থানার মিনাবাগ এলাকায় রবিনদের বাসায় যান। এ সময় রবিন জানতে পারেন রাকিবুল তার আইডি ব্যবহার করে ফ্রি ফায়ার গেম খেলছেন। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে রবিন উত্তেজিত হয়ে ড্রয়ার থেকে ইন্টারনেটের তার বের করে রাকিবুলকে পেছন থেকে আচমকা গলায় পেঁচিয়ে টান দেন। এতে রাকিবুল খাটের ওপর পড়ে যান। এরপর রবিন রাকিবুলের পিঠের উপরে বসে তার গলায় তার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে রাকিবুলের মরদেহ রবিনের ঘরের ওয়্যারড্রোবে লুকিয়ে রাখেন। ওইদিন দিনগত রাত আনুমানিক ২টা থেকে ৩টার দিকে অভিযুক্ত রবিন তার ছোট ভাই রাসেলকে ঘটনাটি জানান। পরে দুই ভাই মিলে রাকিবুলের মরদেহ ওয়্যারড্রোব থেকে বের করে বাসার ছাদে উঠান এবং উত্তর পাশের টিনশেড বাড়ির চালের ওপর দিয়ে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেন। এরপর ঢাকা ছেড়ে রবিন শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ এলাকায় আত্মগোপন করেন। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আর তার দেওয়া তথ্যমতে কদমতলী থানা এলাকা থেকে তার ছোট ভাই রাসেলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কেএম/আরএ/
