অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যা: ৬ মাস পর গ্রেপ্তার স্বামী

যৌতুকের জন্য আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার ঘটনার ছয় মাস পর স্বামী সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
শনিবার (১৬ এপ্রিল) র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ভোরে চট্টগ্রাম নগরীর বায়োজিদ বোস্তামি থানার চন্দন নগর এলাকা থেকে মো. সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, সুমন এ পর্যন্ত তিনটি বিয়ে করেছেন। প্রায় ৮ বছর আগে প্রথম বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রীকে নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন সুমন। এর পাঁচ বছর পর তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এই স্ত্রীকেও প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এসব তথ্য গোপন করে দেড় বছর আগে মোবাইল ফোনে মনি আক্তার নামে একজনের সঙ্গে পরিচিত হন। এরপর বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে মনিকে বিয়ে করেন।
বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য মনি আক্তারকে শারীরিক নির্যাতন করতেন সুমন। ভিকটিম শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ও সংসার টিকিয়ে রাখতে সুমনকে একটি মোটরসাইকেল কিনে দেন এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা দেন।
তিনি বলেন, এরপরও যৌতুকের টাকার জন্য প্রতিনিয়ত মনিকে চাপ দিতেন সুমন। গত বছরের ৩১ অক্টোবর মনির বাবার বাড়ি ভুজপুর আসেন সুমন। সঙ্গে মনিকে নিয়ে আসেন। মনি তখন আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। মনির পরিবারের কাছে যৌতুকের টাকা চান সুমন। কিন্তু মনির দরিদ্র বাবা টাকা দিতে না পারায় সুমন ক্ষিপ্ত হয়ে মনিকে নিয়ে চলে আসেন। মোটরসাইকেলে আসার পথে মনির সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক হয়, সুমন তাকে গালিগালাজও করেন।
একপর্যায়ে ভুজপুর থানার কালিকুঞ্জ এলাকায় সুমন চলন্ত মোটরসাইকেলে বসা মনিকে থাপ্পড় দিয়ে মাটিতে ফেলে মারধর শুরু করেন। বাম চোখ নষ্ট ও হাত পা ভাঙ্গা অবস্থায় মনিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে রেখে পালিয়ে যান সুমন। পরে ২৬ দিন চিকিৎসাধীন থেকে গত ২৫ নভেম্বর আট মাসের গর্ভাবস্থায় মনি মারা যান।
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনায় ভুজপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। এরপর তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রেখে র্যাবের একটি দল আজ বায়োজিদ বোস্তামি থানার চন্দন নগর এলাকা থেকে মো. সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাকে ভুজপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা চলমান রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
কেএম/এএস
