রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ঈদের আগে চাঁদাবাজদের খপ্পরে ব্যবসায়ীরা

ঈদের আগে চাঁদাবাজদের হাতে জিম্মি হতে শুরু করেছে বিভিন্ন শ্রেণির ব্যবসায়ীরা। ফুটপাতের ব্যবসায়ী থেকে উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ী সবাইকে গুনতে হচ্ছে চাঁদা। চাঁদাবাজরা এখন মোবাইল ফোনে চাঁদা চায়না। এক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, ভাইবার, টেলিগ্রামসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে তারা। যার কারণে চাঁদা দেওয়ার তথ্য প্রমাণ থাকছে না ব্যবসায়ীদের কাছে।

বনানীতে কথা হয় রিয়েল এস্টেট কম্পানি 'শরীফ প্রপার্টিজ' এর ডিরেক্টর শরীফ আহমেদের সঙ্গে। এসময় শরীফ আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, 'আমার অফিস বনানী হাওয়া ভবনের অপজিটে। রমজানের শুরু থেকেই আশেপাশের অনেক পাতি নেতা থেকে শুরু করে স্থানীয় কলেজ ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা কৌশলে ইফতার পার্টি, সেহরী পার্টিসহ নানা কথা বলে সাহায্য সহযোগিতা চাচ্ছে। বাধ্য হয়ে যা পারছি সেটাই তাদের দিচ্ছি।'

কথা হয় মিরপুরের রাজধানী ফার্নিচার ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, 'রোজা আর ঈদ আসলে স্থানীয় নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজি বেড়ে যায়। রমজানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত কয়েকটি ইফতার পার্টিতে অংশগ্রহণের জন্য স্থানীয় লোকজন আমার কাছ থেকে বেশ কিছু টাকা নিয়েছে। মোটকথা এটাকে চাঁদা বলা যায়, তবে রমজান মাসের জন্য আমি ওই টাকাটা দান করেছি।'

মিরপুর পল্লবী ট্রাভেলস কোম্পানির মালিক ফয়সাল আহমেদ বলেন, 'স্থানীয় কিছু পাতিনেতা প্রায় প্রতিদিন আমার অফিসে আসে এবং বলে আমরা অসহায়দের মাঝে ইফতার বিতরণ করব, কেউ আবার বলে সেহরি বিতরণ করব এ উপলক্ষে আপনি আমাদের সঙ্গে কিছু শরিক হতে পারেন। কৌশলে তারা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে।'

কথা হয় রাজধানীর কাফরুলের বাসিন্দা মোরশেদ আলমের সঙ্গে। তিনি একজন খুচরা কাপড় বিক্রেতা। রাস্তার পাশে তিনি কাপড় বিক্রি করেন, ছাত্রলীগের এক নেতার সহযোগিতায় ব্যবসা করছেন। যা রোজগার করেন তার কিছু টাকা তাকে ভাগ দেন।

মিরপুর ১০ নম্বর এলাকায় ভ্যানগাড়িতে কাপড় বিক্রেতা কিবরিয়া বলেন, পথে-ঘাটে বেপরোয়া চাঁদাবাজি ব্যবসা কঠিন করে তুলেছে তারা।

কাওরান বাজারের সবজি বিক্রেতা মাহমুদ বলেন, চাঁদাবাজির কারণে বাড়ছে সবজির দাম। যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে ক্রেতার ওপর। এতে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়ও অস্বাভাবিক মাত্রায় ঊর্ধ্বমুখী।

সবজি বিক্রেতা হানিফ বলেন, কাওরান বাজার পাইকারি মার্কেট থেকে সবজি কিনে আগারগাঁও সঙ্গীত কলেজের সামনে ‘ভোরের বাজারে’ তুলতে পথেই তিন স্পটে গুনতে হয় চাঁদার টাকা। এরপর বাজারে বিক্রি শেষে লাইনম্যানদের দিতে হয় চাঁদা। চাঁদাবাজদের এমন দৌরাত্ম্য রাজধানীর সর্বত্র।

এসব পেশাদার চক্রের বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ অটোরিকশা, ভ্যানগাড়ি, ফুটপাতের হকার থেকে শুরু করে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। পুলিশ ও স্থানীয় ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের বলয়ে থাকা কতিপয় ব্যক্তিই এই চাঁদাবাজিতে জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্থানীয় পুলিশ ও পেশাদার চাঁদাবাজ চক্রের সদস্যরা এখন অতিমাত্রায় সক্রিয়। তবে কিছু পুলিশ চাঁদাবাজির কৌশল পরিবর্তন করেছে তারা স্থানীয় নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহার করছে। এরা এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন খাত থেকে নিত্যদিন চাঁদা তুলছে। এসব খাতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-অস্থায়ী কাঁচাবাজার, অস্থায়ী খাবার দোকান, বিভিন্ন ধরনের নিষিদ্ধ যানবাহন, রাস্তা ও ফুটপাত দখলে নিয়ে বসানো দোকানপাট। ঈদ সামনে রেখে এলাকাভিত্তিক প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে অনেক জায়গায় চাঁদাবাজ চক্রের সদস্যরা মুখোমুখি অবস্থান করছে। গোয়েন্দাদের কাছেও এমন তথ্য রয়েছে।

আজিমপুরে সবজি বিক্রেতা হানিফ বলেন, আমি অস্থায়ীভাবে তিন বৎসর ধরে ব্যবসা করছি। ছাত্রলীগের এক নেতাকে নিয়মিত টাকা দিয়ে আসছি। এক কনস্টেবল এসে প্রতিদিন থানা খরচ নিয়ে যায়।

এদিকে জানা গেছে, প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল নয়টা পর্যন্ত চলে শান্তিনগর ভোরের বাজার। শান্তিনগর মোড় থেকে মালিবাগ মোড় যেতে মূল সড়কের একাংশ ও ফুটপাত দখল করে বসে কাঁচাবাজার। এই বাজারে মাছ, মাংস, ডিম থেকে শুরু করে সব ধরনের শাকসবজি পাওয়া যায়। দুই ঘণ্টার এই বাজারে কয়েক লাখ টাকার বেচাকেনা হয়। এ বাজারে পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসতে প্রতি দোকানদারকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা চাঁদা দিতে হয়। এই বাজার থেকে প্রতিদিন মোটা টাকা চাঁদা তোলা হয়। চাঁদার টাকা কতিপয় পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় কয়েক ব্যক্তির মধ্যে ভাগাভাগি হয়।

তবে চাঁদাবাজির বিষয় নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ অনেক ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীদের দাবি, ঈদের আগে ব্যবসায়ে অনেক লাভ হয় আর এই সময়ে মিডিয়ার সামনে এসব বললে চাঁদাবাজরা তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে দিতে পারে এজন্য তারা কিছুই বলতে চান না।

শান্তিনগর বাজারের আশেপাশে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অস্থায়ী ব্যবসায়ীদের থেকে চাঁদা তোলার বেশকিছু চক্র রয়েছে। তারা পুলিশকে ম্যানেজ করেই মূলত এসব কাজ করছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, থানার খরচ বাবদ কয়েকজন কনস্টেবল এসে টাকা নিয়ে যায়। তারা স্থানীয় চাঁদাবাজ নেতাদের কাছ থেকে এসব টাকা সংগ্রহ করে ‌।

যাত্রাবাড়ী থানার সামনে ও পেছনে মহাসড়ক দখল করে কাঁচাবাজার বসে প্রতিদিন। আছে অবৈধ লেগুনা, ট্রাক ও পিকআপ স্ট্যান্ড। এখান থেকে দৈনিক কয়েক লাখ টাকা চাঁদা তোলা হয়। এছাড়া যাত্রাবাড়ী মাছ, ফল ও কাঁচাবাজারে ট্রাক-পিকআপে মাছ নিয়ে এলেই বেপারিদের গুনতে হচ্ছে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা। বিভিন্ন নামে-বেনামে এসব চাঁদা আদায় করা হয়।

এছাড়া যাত্রাবাড়ী মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ দোকান ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী মোড় থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত শনির আখড়া, রায়েরবাগ, মাতুয়াইল, তুষারধারা, সাদ্দাম মার্কেট, মহাসড়কের ওপর ফুটপাত দখল করে অবৈধ সিএনজি, ইজিবাইক ও অটোরিকশা, প্রাইভেট কার স্ট্যান্ড এবং সড়কের দুইপাশে দোকান বসিয়ে চলছে বেপরায়া চাঁদাবাজি।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ-কতিপয় পুলিশ সদস্যের যোগসাজশে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা নামধারীরা এখান থেকে চাঁদা তোলে।

সরেজমিনে দেখা যায়, যাত্রাবাড়ী থানার সামনে ও পেছনে হিউম্যান হলার ও লেগুনা পরিবহণ স্ট্যান্ড রয়েছে। মহাসড়কে লেগুনা পরিবহণ নিষিদ্ধ হলেও ২ শতাধিক লেগুনা মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়ায়। প্রতি লেগুনা পরিবহণ থেকে জিপির নামে দৈনিক ৫৫০ টাকা, লাইনম্যানের নামে ২০ টাকা করে আদায় করা হয়। যাত্রাবাড়ী ট্রাফিক পুলিশ বক্স থেকে সুফিয়া প্লাজা পর্যন্ত সড়ক ও ফুটপাতে ৩০টি দোকান বসিয়ে প্রতি দোকান থেকে দৈনিক ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা করে আদায় করেন জনৈক সোনামিয়া।

৫০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাসুম মোল্লার কথা বলে যাত্রাবাড়ী মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে শতাধিক তরকারি, মাছ কাটার বডি, বরফের দোকানসহ হরেকরকমের দোকান বসানো হয়েছে। এসব দোকান থেকে দৈনিক ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে আদায় করেন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নামধারী কয়েক নেতা। এছাড়া যাত্রাবাড়ী টিএন্ডটি অফিসের সামনে বাস কাউন্টার, সিএনজি স্ট্যান্ড ও দোকান থেকে দৈনিক ২-৩শ টাকা করে চাঁদা তোলা হয়। এছাড়া কুতুবখালী বউবাজারের সামনে ট্রাক থামলে ২০০ টাকা চাঁদা নেয় ৫০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাসুম মোল্লার ভাগ্নে জামাই। তাছাড়া কুতুবখালী বউবাজারের সামনে দিয়ে রিকশা বা ভ্যানগাড়িতে করে মালামাল নিয়ে যেতে ১০-২০ টাকা করে চাঁদা আদায় করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নামধারী নেতা শাহাদাত হোসেনের লোকজন।

আরও জানা গেছে, শনির আখড়া ফুটওভার ব্রিজের দক্ষিণ পাশে দনিয়া কলেজ থেকে শনির আখড়া ব্রিজের পশ্চিমপাশের ঢাল পর্যন্ত চা, কফি, ফাস্টফুডসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর শতাধিক দোকান রয়েছে। ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা করে নিয়ে প্রতিটি দোকান বসানো হয়েছে। আর প্রতিটি দোকান থেকে প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা করে চাঁদা আদায় করেন যুবলীগের নামধারী কয়েক নেতা। রায়েরবাগ ফুটওভার ব্রিজের উত্তরপাশে ফল, ফুচকা, চা, বাদাম, ডাবসহ হরেকরকমের প্রায় ৮০টি দোকান রয়েছে। প্রতিটি দোকান বসাতে অগ্রিম নেওয়া হয়েছে ৫ থেকে ১৫ হাজার টাকা। দৈনিক ২-৩শ টাকা করে চাঁদা আদায় করেন যুব ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের স্থানীয় দুই নেতা। এই চাঁদার টাকায় ভাগ পান স্থানীয় ট্রাফিক ও থানা পুলিশের কয়েকজন সদস্য।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর উত্তরা, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, মহাখালী, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, মতিঝিল, বাড্ডা, মালিবাগ, মুগদা, ডেমরা-যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা-রামপুরা সড়কের দুপাশ দখল করে অবৈধভাবে বসানো হয়েছে শত শত স্থায়ী-অস্থায়ী দোকানপাট। মূলত ঈদকে সামনে রেখে এসব করা হচ্ছে।

এদিকে জানা গেছে, ডেমরার হাজীনগর, সারুলিয়া বাজার, বড়ভাঙ্গা, ডগাইর বাজার, ফার্মের মোড়, কোনাপাড়া, মাতুয়াইল, বাদশা মিয়া রোড, বাঁশেরপুল, রানীমহল, গলাকাটা, আমুলিয়া, ঠুলঠুলিয়া, ধিৎপুরা, তাম্বুরাবাদ, মেন্দিপুর, পাইটি, শূন্যা টেংরা ও ডেমরা বাজার এলাকাসহ সর্বত্রই অবৈধ দোকানপাট বসানো হয়েছে। প্রায় প্রতিটি এলাকায় যানবাহন স্ট্যান্ড ও বাজার বসানো হয়েছে অবৈধভাবে।

এসব এলাকার স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূল সড়কের পাশে স্থাপন করা হচ্ছে অস্থায়ী দোকানপাট। পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে এসব ব্যবসায়ের পরিকল্পনা করা হচ্ছে যার যোগসূত্রে রয়েছে স্থানীয় নেতাকর্মীরা ও পুলিশের কিছু অসাধু সদস্য। তবে এসব বিষয়ে নিয়মিত ব্যবসায়ীরা চাঁদা দিলেও চাঁদাবাজদের নাম বলতে অনেকে ভয় পাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি করোনাভাইরাস এর পরে তারা এই ঈদে ব্যবসা করে অধিক মুনাফা অর্জন করতে চান, এজন্য তারা চুপচাপ যাতে ব্যবসা করতে পারে সেজন্য এসব চাঁদাবাজির বিষয়ে বলতে নারাজ। তবে বেশ কিছু এলাকার চাঁদাবাজদের নাম জানিয়েছেন কিছু ব্যবসায়ীরা।

ঈদকে সামনে রেখে যাত্রাবাড়ী এলাকায় স্থানীয় নেতা ও কিছু অসাধু পুলিশের সদস্য চাঁদাবাজি চক্রে সোচ্চার হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ডেমরা জোন) মো. শাহ ইফতেখার আহম্মেদ বলেন, অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে অবৈধ দখল ও অব্যবস্থাপনা এখন বাস্তবতা। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক মহলের সজাগ দৃষ্টি প্রয়োজন। তবে চাঁদাবাজির সঙ্গে পুলিশের জড়িত থাকার বিষয়টি অনেক সময় লাইনম্যানরা বলে বেড়ায়। তারপরও চাঁদাবাজির সঙ্গে কতিপয় অসাধু পুলিশ, রাজনীতিক ও প্রভাবশালী মহলের সমন্বয় থাকতে পারে। যদি কোনো পুলিশের সম্পৃক্ততা থাকে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাবুবাজার সেতুর নিচে সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে আওয়ামী হকার্স লীগ কোতোয়ালি থানা শাখার কার্যালয়। ওই অফিসে বসে এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছেন সংগঠনটির সভাপতি পিন্সু হাজি ও সাধারণ সম্পাদক আনসার ভূঁইয়া। তারা দুজনে মামাতো-ফুপাতো ভাই। এদের মদদে বাদামতলী ফলের আড়তে ফল নিতে আসা পরিবহণ থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া বাবুবাজার সেতুর নিচে আওয়ামী হকার্স লীগের অফিসের পেছনের সরকারি জায়গার একটি অংশ দখল করে আরেকটি চাঁদাবাজচক্র সেখানে দোকান বসিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পাইকারি ফলের বাজারকে টার্গেট করে গড়ে উঠেছে পেশাদার চাঁদাবাজ চক্র। বাদামতলীর সীমানায় গাড়ির চাকা ঘুরতে হলে বাবুবাজার ব্রিজের নিচে তাদের সিন্ডিকেটকে চাঁদা দিতেই হয়।

জানতে চাইলে পিন্সু হাজি ও আনসার ভূঁইয়া প্রায় একই ধরনের কথা বলেছেন। তারা বলেন, কিছুদিন ধরে তারা বাবুবাজার ব্রিজের নিচে অফিস নিয়ে বসেছেন। মোটা অঙ্কের চাঁদাবাজির কথা অস্বীকার করলেও এখানে চাঁদাবাজির কথা স্বীকার করেছেন দুজনেই।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, চাঁদাবাজির ব্যাপারে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব।

এদিকে সরেজমিন দেখা যায়, ব্যস্ততম মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংকের গলি, দৈনিক বাংলার মোড়, দিলকুশা রোড, আইডিয়াল স্কুলের সামনে শত শত অবৈধ দোকানপাট। এসব দোকানপাট থেকে নিয়মিত চাঁদা তোলা হচ্ছে। এসব দোকানপাটের কারণে তীব্র যানজটে আটকে যায় রাজধানী।

এ বিষয়ে মতিঝিল থানা পুলিশ বলছে, চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেনি। তবে চাঁদাবাজি রোধে আমরা যথেষ্ট সোচ্চার রয়েছি। অভিযোগ পেলে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিব।

এদিকে মহাখালীর একজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা কয়েক বছর ধরে ব্যবসা করছি। নিয়মিত কম বেশি চাঁদা দিলেও রমজান এবং ঈদকে সামনে রেখে চাঁদাবাজরা খুবই ভয়ংকর হয়ে উঠে। তারা আরো বেশি চাঁদা চায়। মহাখালী এলাকায় সবচেয়ে বড় চাঁদাবাজ হলো, যুব মহিলা লীগের নেত্রী তাসলিমা আক্তার, মোস্তফা, সাত্তার, আওয়ামী লীগ নেতা ফারুকসহ বেশ কয়েকজন এই চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা স্থানীয় কাউন্সিলরের নাম বলে সকাল-সন্ধ্যা চাঁদাবাজি করে। প্রায় ১০ বছর ধরে অত্র এলাকায় চাঁদাবাজি করছে তারা।

জানতে চাইলে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, যুব মহিলা লীগের তাসলিমা আক্তার মোস্তফা এবং ছাত্তারের বিরুদ্ধে থানায় কেউ অভিযোগ করে নাই। যদি কেউ অভিযোগ করে তাহলে আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এবিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মো. ফারুক হোসেন বলেন, ঈদের আগে চাঁদাবাজি, চুরি ছিনতাই ঠেকাতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ মাঠে থেকে কাজ করছে। যদি কোন পুলিশের সদস্য এসব চাঁদাবাজদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে এমন তথ্য পাওয়া যায় তাহলে ওই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, আমাদের মেট্রোপলিটন পুলিশ কে নির্দেশনা দেওয়া আছে যদি কোন ব্যবসায়ী হয়রানির শিকার হয় অথবা চাঁদাবাজদের খপ্পরে পড়ে তাহলে সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করলেই চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে থানা পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ঈদের আগে চাঁদাবাজদের ধরতে মাঠে কাজ করছে পুলিশ। কোন ব্যবসায়ীকে হয়রানি করা যাবে না যদি কেউ হয়রানি হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট থানায় তাকে অভিযোগ করতে হবে। থানা পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া আছে সে বিষয়ে তারা আইনগত পদক্ষেপ নিবে। ঈদের আগে রাজধানীতে কোন প্রকার চাঁদাবাজদের আশ্রয় দেওয়া হবে না।

সারাদেশে চাঁদাবাজি রোধে পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এমন তথ্য জানিয়ে অতিরিক্ত আইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) এম খুরশীদ হোসেন বলেন, পবিত্র রমজান ও আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি রোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।

তিনি বলেন, আমাদের নির্দেশনা দেওয়া আছে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ বা তথ্য ছাড়া মহাসড়ক অথবা সড়কে চলাচলকারী পণ্যবাহী কোন গাড়ি থামানো যাবে না। ঈদকে কেন্দ্র করে শপিং মল, মার্কেটের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার বা গুজব ছড়িয়ে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যাতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে সে ব্যাপারে তৎপর পুলিশ। পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া আছে কোন ব্যবসায়ী যেন হয়রানির শিকার না হয়। যদি কোন ব্যবসায়ী চাঁদাবাজদের দ্বারা হয়রানির শিকার হয় তাহলে ওই চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কেএম/কেএফ/

 

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি