সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলা
অভিযোগপত্র দেওয়ার পর লাপাত্তা ছিলেন আশিষ চৌধুরী

চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়ার পর থেকেই লাপাত্তা ছিলেন এক নম্বর আসামি আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী। প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে অভিযানের পর গুলশানের একটি বাড়ি থেকে মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) দিবাগত রাতে আশিষকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ সময় তার ফ্ল্যাট থেকে জব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ মদ ও বিয়ার।
র্যাব জানায়, চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত হওয়ার পরই ১ নম্বর আসামি আশিষ রায় চৌধুরী লাপাত্তা হয়েছে যান। এসময় আটক হন দুই নারী। এদের মধ্যে একজন মডেল। দুই নারীর সঙ্গে আশিষের কী সম্পর্ক তা এখনো জানা যায়নি।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, আশিষ রায় চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর অনেক তথ্য বের হয়ে আসছে। মাদক উদ্ধারের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। দুই বছর পর মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। ওই সময় এক আসামি হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। হাইকোর্ট বিভাগের তৎকালীন বিচারপতি এমএ মতিন ও সৈয়দ রিফাত আহমদের বেঞ্চ ২০০৩ সালের ১৯ নভেম্বর ওই রিট আবেদনে প্রথমে তিন মাসের জন্য নিম্ন আদালতে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত করেন। এরপর ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রিটের রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মামলাটির নিম্ন আদালতের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় গত ২০ মার্চ ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-২। পরোয়ানাভুক্ত অন্য দুই আসামি হলেন- ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও সেলিম খান।
এরপর গত ২০ মার্চ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জাকির হোসেন ওই মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ২০ মার্চ দিন ধার্য করেন। ওই দিন শুনানি শেষে আদালত তিনজনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন।
সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত ১ নম্বর আসামি আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী। আশিষ রিজেন্ট এয়ারওয়েজের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিইও) বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবেদীন টাওয়ারে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারা যান সোহেল চৌধুরী। ওই ঘটনায় সোহেল চৌধুরীর ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে রাজধানীর গুলশান থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী এ মামলায় ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন— আদনান সিদ্দিকী, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, তারেক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, ফারুক আব্বাসী, শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী।
কেএম/এসএন
