টিপু হত্যা: দেশে পরিকল্পনা, দুবাই গিয়ে বাস্তবায়ন

মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে হত্যার জন্য ১৫ লাখ টাকা বাজেট করে আন্ডার-ওয়ার্ল্ড ডন মুসা। মুসা দেশ থেকে খুনি ভাড়া করে খুনের আগেই দুবাই চলে যায় এবং সেখানে বসে সে সেটাকে বাস্তাবায়ন করে। এ ঘটনার শুরু থেকে হত্যার সব পরিকল্পনায় ছিল মুসার।
র্যাব জানায়, মুুসার সঙ্গে এ হত্যায় জড়িত রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী টিপু খুন হয়।
এ ঘটনার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ওমর ফারুক (৫২), আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ (৩৮), মো. নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির (৩৮), মো. মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশকে (৫১) গ্রেপ্তার করার পর র্যাব বলছে, মুসা মূলত এ হত্যার মূল আসামি। সে ১৫ লাখ ঢাকায় খুনি ভাড়া করে টিপুকে হত্যা করায়।
র্যাব বলছে, তবে, এ হত্যাকাণ্ডটি রাজনৈতিক কারণে ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। তবে, সেগুলো তদন্তের স্বার্থে বলছে না র্যাব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, টিপুকে হত্যার জন্য ১৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী আন্ডার-ওয়ার্ল্ড ডন মুসার ওপর দায়িত্ব আসে টিপুকে হত্যার।
তিনি বলেন, এ ঘটনার ১২ দিন আগে পরিকল্পনা করে মুসা দুবাই চলে যায়। সেখানে বসে সে খুনি নিয়োগ করে। শুরু থেকে এ হত্যার পরিকল্পনাকারী মুসা।
র্যাব জানায়, মতিঝিল এলাকার চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, স্কুল-কলেজের ভর্তি বাণিজ্য, বাজার নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই টিপুর সঙ্গে খুনিদের বিরোধ চলছিল। এ ছাড়া, ২০১৩ সালে রাজধানীর গুলশান শপার্স ওয়ার্ল্ডের সামনে খুন হওয়া যুবলীগ নেতা মিল্কীর সহযোগী ছিল গ্রেপ্তারকৃতরা। মিল্কী হত্যায় টিপু জড়িত ছিল বলে সন্দেহ করত গ্রেপ্তারকৃতরা। এসব বিভিন্ন দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করেই টিপুকে মূলত হত্যার পরিকল্পনা করে তারা।
গত ২৪ মার্চ রাতে শাহজানপুর এলাকার ব্যস্ত সড়কে গুলি করে হত্যা করা হয় জাহিদুল ইসলাম টিপুকে। খুনিদের এলাপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন রিকশা আরোহী সামিয়া আফরান প্রীতি নামে এক কলেজছাত্রী।
ঘটনার পরদিন টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে শাহজাহানপুর থানায় একটি মামলা করেন। পরে এ ঘটনার আসামিদের ধরতে নড়েচড়ে বসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। অবশেষে এ মামলার বেশ কয়েকজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তবে এ ঘটনার মূল আসামি দেশের বাইরে থাকায় তাকে ধরতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
কেএম/এমএমএ/
