শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

বেড়েছে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডসহ খুনের ঘটনা

সম্প্রতি রাজধানীসহ সারা দেশেই বেড়ে গেছে খুনের ঘটনা। ব্যক্তিগত বিরোধ, পারিবারিক কলহ, আধিপত্য বিস্তার, মাদক বাণিজ্য ও চুরি-ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় ঘটছে এসব হত্যাকাণ্ড। পাশাপাশি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও বেড়েছে ভয়াবহভাবে।

২৪ মার্চ রাত ১০ টার দিকে শাহজাহানপুরে ব্যস্ত সড়কে মাইক্রোবাসে করে বাসায় ফেরার পথে গুলি করে হত্যা করা হয় আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে। এ ঘটনায় গুলিতে প্রীতি নামে রিকশাযাত্রী এক কলেজছাত্রীও নিহত হন। 

২৭ মার্চ ভোরে নোয়াখালী যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন দন্ত্য চিকিৎসক আহমেদ মাহী বুলবুল। পরে রাজধানীর শেওড়াপাড়ার বাসা থেকে বের হয়ে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে খুন হন তিনি।

২৬ মার্চ বিকালে রাজধানীর সবুজবাগ থানার দক্ষিণগাঁও বেগুনবাড়ি এলাকায় এসি মেরামতের কথা বলে কয়েকজন দুর্বৃত্ত ঘরে ঢুকে ডাকাতির চেষ্টা করে। এতে তানিয়া আফরোজ মুক্তা বাধা দিলে ওই নারীকে নিজ ঘরে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ওই দিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় সবুজবাগ থানা পুলিশ। পরে তারা জানতে পারে স্কচটেপে তার দুই সন্তানের মুখ বেঁধে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে খুন করে দুর্বৃত্তরা।

ডিএমপির সূত্র জানায়, এ বছরের জানুয়ারিতে শুধমাত্র ঢাকাতে হয়েছে ৯ খুন। ফেব্রুয়ারিতে ১২টি খুন। এর মধ্যে ৫ টি খুনের ঘটনাই মিরপুর এলাকায়। চলতি মাসের (২৮ মার্চ) প্রযর্ন্ত আলোচিত একাধিক খুনের ঘটনা ঘটেছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তথ্যমতে, ২০০৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৪ বছরে রাজধানীতে ৩ হাজার ৩৭৫টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। বছরে গড়ে ২৫০টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে এ সময়ে।

আবার পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্যে দেখা যায়, ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সারা দেশে ১৫ হাজার ৩০৫টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। গড়ে প্রতিবছর ৩ হাজার ৮২৬টি হত্যাকাণ্ড ঘটে।

অন্যদিকে বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৬ বছরে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ৬৭৬টি। এ হিসাবে প্রতিবছর গড়ে ১১২টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটে। ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা কমলেও ২০২১ সালে তা আবার কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ওই বছর ১৫৭টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটে, যা পূর্ববর্তী চার বছরের গড় সংখ্যার তিনগুণেরও বেশি।

এদিকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পুলিশ সদর দপ্তরের ওয়েবসাইটে অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য দেওয়া হতো। ২০১৯ সালে আংশিক তথ্য দেওয়া হলেও এর পর থেকে চলতি বছর পর্যন্ত আর কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। এতে কী পরিমাণ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে এবং কতগুলোর বিচার সম্পন্ন হয়েছে সে তথ্য পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এতে অপরাধের প্রকৃত চিত্রও জানা সম্ভব হচ্ছে না। একে এক ধরনের ‘লুকোচুরি’ বলছেন অনেকে। তবে এটি লুকোচুরি নয় দাবি করে তথ্য অধিকার আইনে নিয়ম মেনে আবেদন করলে নির্দিষ্ট সময়ে প্রকাশযোগ্য সব তথ্য পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

এছাড়া, ডিএমপির একটি তথ্য বলছে, চলতি বছরের গত দুই মাস ২৭ দিনে রাজধানীতে ৩৪টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ৯ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১২ জন ও মার্চ মাসের প্রথম ২৭ দিনে ১৩ জন খুন হয়। এর মধ্যে কতগুলো রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড সেটির হিসাব নেই।

তবে আসকের তথ্যে দেখা গেছে, এ বছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে সারা দেশে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ৩৯টি। শুধু জানুয়ারিতেই এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ২৯টি। ২০২১ সালে প্রতিমাসে এই হত্যাকাণ্ডের গড় সংখ্যা ছিল ১৩। এ হিসাবে গত জানুয়ারিতে তিনগুণ বেড়েছে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড।

আসকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০২১ সালে সারা দেশে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটে ১৫৭টি, ২০২০ সালে ৩১টি, ২০১৯ সালে ৩৯টি, ২০১৮ সালে ৬৭টি, ২০১৭ সালে ৫২টি, ২০১৬ সালে ১৭৭টি ও ২০১৫ সালে ১৫৩টি। এতে আরও দেখা যায়, ২০১৬ সালে ১৭৭টি হত্যাকাণ্ড ঘটলেও ২০১৭ সালে হত্যার ঘটনা কমে ৫২টি তে দাঁড়ায়। পরে ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালেও এ সংখ্যা কম ছিল। এই তিন বছর গড়ে ৪৫টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটে। এর মধ্যে হঠাৎ ২০২১ সালে আবারও রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ওই বছর ১৫৭টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটে, যা পূর্ববর্তী তিন বছরের গড় সংখ্যার তিনগুণেরও বেশি।

এ বিষয়ে মানবাধিকার কর্মী এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান লিটন জানান, সারাদেশে হত্যাকাণ্ড বাড়ছে নাকি কমছে সেটা তথ্য নির্ভর সংখ্যাগত একটি বিষয়। তবে বলা যায়, হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সামগ্রিকভাবে আগের মতোই আছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি দেশকে গ্রাস করায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) মো. কামরুজ্জামান বলেন, তথ্য লুকোচুরির কোনো সুযোগ নেই। প্রত্যেকটি ঘটনার পর সেটি স্থানীয় বা জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। তবে পুলিশ সদর দপ্তরের ওয়েবসাইট আপডেট হওয়ায় সেখানে তথ্য দেওয়ার অপশনটি নেই। এ ছাড়া তথ্যগুলো যেখান থেকে একত্রিতভাবে আসত, সেটি না আসায় হয়তো এমনটি হয়েছে। কেউ তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করলে নির্দিষ্ট সময়ে তথ্য পাবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিচালক (মিডিয়া) কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আমরা সব সময় বিভন্ন হত্যাকান্ডের আসামিদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে বহুল আলোচিত এবং চাঞ্চল্যকর মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। তিনি বলেন, সাম্প্রতি রাজধানীর শাহজাহানপুর এলাকায় জাহিদুল ইসলাম টিপু ও সামিয়া আফরান প্রীতি হত্যাকাণ্ডের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড এবং টিপুকে অনুসরণকারীসহ ৪ জনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। এ হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি মুসা টিপু হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করে দেশের বাইরে চলে যায় এবং সেখানে বসে সে এটি বাস্তবায়ন করে। তছাড়া অনেকেই এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে অনেকে জড়িত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হত্যাকাণ্ডের মোটিভ বা উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানিয়েছে। দীর্ঘদিন যাবৎ ভিকটিম ও হত্যার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে বিরোধ বিদ্যমান ছিল। মতিঝিল এলাকার চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, স্কুল-কলেজের ভর্তি বাণিজ্য, বাজার নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিয়ে এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক ভাবে মিল্কী হত্যার প্রতিশোধ নিতে টিপুকে হত্যা করা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তিনি বলেন, মাত্র ১৫ লাখ টাকায় টিপুকে হত্যা করা হয়। তবে এ ঘটনার মূল আসামি দেশের বাইরে থাকায় তাকে ধরতে পারেনি গোয়েন্দারা।

খন্দকার মঈন বলেন, মানুষ যখন বিভিন্ন ধরণের ঝামেলায় পড়ে বা মনে করে তখন তাকে আইনের অনুসারী হওয়া উচিত। অনুসারী এবং সর্তক হলে অনেক ধরণের অপরাধ কমে আসবে।

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক সমাজ ও অপরাধ গবেষক তৌহিদুল হক বলেন, সারাদেশে হঠাৎ করে খুনের ঘটনা বেড়ে গেছে। এগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায় রাজনৈতিক ও পারিবারিক কলহের কারণে এসব ঘটনা ঘটছে। রাজনৈতিক ও স্বার্থগত দ্বন্দ্বের কারণে খুনোখুনিসহ সব ধরনের অপরাধ বেশি হচ্ছে।

তিনি বলেন, নাগরিকদের নিরাপত্তা রাষ্ট্রের নাগরিক বিবেচনায় না হয়ে অবস্থানের ভিত্তিতে হয়ে গেছে। একইভাবে রাজনীতি ‘আদর্শের’ বদলে ‘ক্ষমতাকেন্দ্রিক’ হওয়ায় দেশ অপরাধীর সংখ্যা বাড়ছে। তার মতে, অপরাধের সঠিক তথ্য জানা নাগরিকদের অধিকার। এর ফলে অপরাধের প্রকৃত চিত্র জানাসহ বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ করণীয় ঠিক করা সম্ভব হবে। কিন্তু এটা নিয়ে ‘লুকোচুরি’ করা হলে অপরাধীরাই বেশি সুযোগ পাবে।

এসব অপরাধ দমনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর আরও তৎপর হতে হবে। এবং ভুক্তভোগীদের তথ্য আমলে নিয়ে তাদের কাজ করতে হবে তাহলে এসব অপরাধ অনেকটা কমে আসবে মনে করেন এই অপরাধ বিশেষজ্ঞরা।

কেএম/কেএফ/

 

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি