নতুন রূপে নজর কাড়ছে মহাখালী ফ্লাইওভার
ছবি: সংগৃহীত
সৌন্দর্যের প্রতি মানুষের আকর্ষণ চিরদিনের। বাহ্যিক সৌন্দর্য নিয়ে ব্যতিব্যস্ত সবাই। তবে নগর জীবনে চলাচলের সময় রাস্তাঘাট আর স্থাপত্যগুলোর সৌন্দর্য বিজ্ঞাপনে আড়াল হয়ে যায়। রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি দেশের প্রায় প্রতিটি সড়ক-মহাসড়কের পথ-ঘাটে এখন অগণিত বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণ ও নানা রঙের মনোলোভা ও চিত্তাকর্ষক বিজ্ঞাপনের ছড়াছড়ি।
সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও এসব বিজ্ঞাপনের বাড়াবাড়িতে ত্যক্ত-বিরক্ত। তাই বুঝি কবি বড় আক্ষেপ করে বলেছেন- ‘একলা হয়ে দাঁড়িয়ে আছি/…তোমার জন্যে গলির কোণে/ভাবি আমার মুখ দেখাব/মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে।’
তবে বিজ্ঞাপনের আড়াল থেকে নগরের মূল সৌন্দর্যকে বের করে আনতে শুরু হয়েছে এক নতুন আয়োজন- স্ট্রিট আর্ট। আর এই আয়োজনে ঢাকার মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচের অংশে দৃষ্টিনন্দন চিত্রকর্ম আঁকা হয়েছে। যা শহরে যুক্ত করেছে নতুন এক নান্দনিকতা।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের সহযোগিতায় বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে মহাখালী ফ্লাইওভারে স্ট্রিট আর্ট শুরু হয়। স্বাধীনতার মাস মার্চের মধ্যে পুরো মহাখালী ফ্লাইওভারের স্ট্রিট আর্ট সম্পন্ন করা হবে। শহরকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করতেই গ্রহণ করা হয়েছে এই উদ্যোগ।
ডিএনসিসির পক্ষ থেকে বলা হয়, শহরকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করতেই এই উদ্যোগ। এর পাশাপাশি রাজধানীবাসীকে এসব চিত্রকর্মের মাধ্যমে বিভিন্ন ‘শিক্ষণীয়’ বার্তা দেওয়াও এর লক্ষ্য। এর মধ্যে ‘গাছ লাগাই পরিবেশ বাঁচাই’, ‘হর্ন বাজানো নিষেধ’ এমন নানান স্লোগান রয়েছে।
সৌন্দর্য বর্ধনের পাশাপাশি ফ্লাইওভারের বিভিন্ন পিলারে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে, যাতে কেউ এসব চিত্রকর্ম নষ্ট করতে না পারে। এই দৃষ্টিনন্দন স্ট্রিট আর্টের ওপর পোস্টার লাগালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম।
ডিএনসিসির চিত্রকর্মের কাজ পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, আমরা শহরকে দৃষ্টিনন্দন করার জন্য অনেক কাজই করি। কিন্তু দুঃখের বিষয় সে কাজগুলো কিছু দিন পরেই পোস্টারের আড়ালে ঢেকে যায়। মহাখালীতে যে দৃষ্টিনন্দন স্ট্রিট আর্ট করা হয়েছে তার ওপর আমি কোনও পোস্টার দেখতে চাই না। যে পোস্টার লাগাবে তাকে সবাই মিলে প্রত্যাখ্যান করবো। এত সুন্দর চিত্রকর্মের ওপর পোস্টার লাগালে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবো।
ডিএনসিসির কর্মকর্তারা বলেছন, ঢাকা শহর একটি দ্রুত বর্ধনশীল শহর। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শহরের সৌন্দর্য ও পরিবেশের অবনতি ঘটছে। পোস্টার লাগানো, ময়লা আবর্জনা ফেলে দেওয়া, গাড়ির ধোঁয়া ইত্যাদি কারণে শহর দিন দিন নোংরা ও দূষিত হয়ে উঠছে। এই সমস্যা সমাধানে স্ট্রিট আর্ট একটি কার্যকর উপায় হতে পারে বলেই এই ধরনের কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। আর স্ট্রিট আর্টের মাধ্যমে নান্দনিক চিত্রকর্ম তৈরি করে শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং পরিবেশকে আরও মনোরম করে তোলা হবে।