কুড়িয়ে পাওয়া ৭ লাখ টাকা ফিরিয়ে দিয়ে নজির গড়লেন কাইয়ুম
হারানো টাকা ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে প্রকৃত মালিককে। ছবি: সংগৃহীত
কুড়িয়ে পাওয়া সাত লাখ টাকা প্রকৃত মালিককে ফিরিয়ে দিয়ে নজির স্থাপন করেছেন আব্দুল কাইয়ুম নামের দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক পাম্প অপারেটর। রাজধানীর হানিফ ফ্লাইওভারে তিনি এই টাকা কুড়ে পেয়েছিলেন। আগেও এমন কুড়িয়ে পাওয়া টাকা মালিককে ফেরত দেয়ার নজির রয়েছে তার।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) ডিএমপিতে গিয়ে কুড়িয়ে পাওয়া টাকা জমা দেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ নভেম্বর টাকার প্রকৃত মালিক বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটে তার দোকান থেকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য সাত লাখ টাকা নিয়ে রওনা হন। পরে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মোটরসাইকেলে করে তিনি হানিফ ফ্লাইওভারের কুতুবখালী প্রান্তের টোল প্লাজা অতিক্রম করা সময় হঠাৎ তার মনে হয় পেছনে থাকা টাকার ব্যাগটি নেই। পরে তিনি মোটরসাইকেল ঘুরিয়ে টাকার সন্ধানে উল্টো দিকে আসছিলেন। উল্টো দিকে যাওয়ার নিয়ম না থাকায় টোল প্লাজার দায়িত্বে থাকা লোকজন তাকে বাধা দেন। এরপর অনেক খুঁজে টাকার ব্যাগ না পেয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
ওইদিন একই ফ্লাইওভারের যাত্রাবাড়ী থানার ওপরের অংশে টাকাসহ ব্যাগটি কুড়িয়ে পান কাইয়ুম নামে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একজন পাম্প অপারেটর। তিনি মোটরসাইকেলে করে ফ্লাইওভার পার হচ্ছিলেন। টাকার ব্যাগ পাওয়ার পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে টোল প্লাজার দায়িত্বে থাকা লোকজনের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে সাত লাখ টাকা হারানোর বিষয়ে জানতে পারেন তিনি।
এ বিষয়ে কাইয়ুম বলেন, টাকাটা পাওয়ার পর অনেকে পরামর্শ দিয়েছেন যে পুলিশ ছাড়া এতগুলো টাকা কাউকে দেওয়া উচিত হবে না। কারণ, টাকাটা ফেরত দেওয়ার পর যদি অন্য কেউ এসে দাবি করেন তখন বিপদে পড়তে হবে। তাই পুলিশ বিষয়টি সমাধান করলে দায়বদ্ধতা আমার আর থাকবে না। এ জন্য টাকাটা পরদিন ২৯ নভেম্বর ডিএমপিতে গিয়ে জমা দিই।
তিনি আরও বলেন, আমার ১০ হাজার হারালে তো আমি ঘুমাতেই পারতাম না! এতগুলো টাকা হারিয়ে প্রকৃত মালিক বিপদগ্রস্ত হতে পারেন। বিষয়টি চিন্তা করেছি। এ ছাড়া আমি আরও ভেবেছি, টাকাটা খরচ করা আমার জন্য ঠিক হবে না।
পুলিশ জানায়, সব শোনার পর টাকা হারিয়ে যাওয়ার সাধারণ ডায়েরির সঙ্গে মিলিয়ে ডাকা হয় প্রকৃত মালিককে। পরে তার হাতে তুলে দেওয়া হয় টাকাগুলো। পুলিশের মধ্যস্থতায় হারানো টাকা ফেরত পেয়ে আপ্লুত মালিক। ভবিষ্যতের জন্য এ ঘটনা একটি সুন্দর দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, প্রতারণা, চুরি এবং ডাকাতির ঊর্ধ্বে উঠে সবাই যেন সত্যিকারের মানুষ হয়ে উঠতে পারেন, সেটাই চাওয়া। মানুষের মধ্যে যেন কারও টাকা মেরে না খাওয়ার মানসিকতার বিকাশ ঘটে এটিই প্রত্যাশা।