বঙ্গবাজারের নিখোঁজ ব্যবসায়ী রাজীবকে খুঁজছে মা ও স্ত্রী!
বঙ্গবাজাররের নিচ তলায় আদর্শ মার্কেটের এক নম্বর গলিতে দেওয়ান গার্মেন্টসের কর্ণধার মোঃ রাজীব দেওয়ান। বাড়ি বিক্রমপুরে। সেখান থেকে সকালে দোকানের উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথিমধ্যে জানতে পারেন বঙ্গবাজার মার্কেটে আগুনের ঘটনার কথা। এসময় তিনি স্ত্রীকে আগুন লাগার ঘটনা ফোনে জানান। তারপর থেকেই তার ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। রাজীবের কোন খোঁজ না পেয়ে তার মা এবং স্ত্রী উপস্থিত হয়েছেন বঙ্গবাজার মার্কেটে। মা খুঁজছেন নাড়ি ছেঁড়া ধনকে আর স্ত্রী খুঁজছেন বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন স্বামীকে।
রাজীবের স্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, আমার স্বামীর নাম রাজীব দেওয়ান। বঙ্গবাজার মার্কেটেই তার দোকান। আজ সকাল ৭টা ২৫ মিনিটেও কথা হয়েছে আমার সঙ্গে। মোবাইলে ফোন দিয়ে আমাকে জানায় মার্কেটে আগুন লাগার কথা। বাসার সবাইকে জানাতেও বলে সে। কোথায় আছে জিজ্ঞেস করাতে জানায়, আমি বাবুবাজার ব্রিজের নিচে আছি, সেখান থেকেই জানতে পারলাম, সব শেষ। আমি সেখানে যেতে না করায় বলে, না আমি যাই, দেখি। তারপর থেকেই ফোনে তাকে আর পাচ্ছি না। ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে।
রাজীবের মা আহাজারি করে বলেন, আমার ছেলেকে তো পাচ্ছি না। তার নিজের দোকান রয়েছে। আমাদের বাসা বিক্রমপুরে, সেখান থেকেই সকালে সে এখানে আসে।
রাজধানীর বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে বাতাসে ছড়াচ্ছে পোড়া মালের উৎকট গন্ধ, সঙ্গে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতি হওয়া ব্যবসায়ীদের চাপা কান্না। এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও মালামাল সরাতে ব্যস্ত রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। অসংখ্য ব্যবসায়ী নিরাশ হয়ে চাপা কান্না কাঁদছেন। কেউবা এক নাগারে ভবনের দিকে উন্মুখ হয়ে তাকিয়ে রয়েছেন।
দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা পর দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস। এ সময় বঙ্গবাজার থেকে আশপাশের আরও চারটি মার্কেটে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৫১টি ইউনিট কাজ করে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রিমা খানম গণমাধ্যমকে বলেন, বঙ্গবাজারের আগুন ১২টা ৩৬ মিনিটে নিয়ন্ত্রণে আসে। এখন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নির্বাপণ ও ডাম্পিংয়ের কাজ করছেন।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা ১০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ একযোগে কাজ করে।
এদিকে, ঢাকার বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের তিন সদস্যসহ ৮ জন আহত ও অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছেন।
কেএম/এএস