সিদ্দিকবাজারের কুইন্স টাওয়ারের ধস ঠেকাতে কাজ শুরু
গুলিস্তানের কাছে সিদ্দিকবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ঝুঁকিপূর্ণ কুইন্স টাওয়ারটির ধস ঠেকাতে কাজ শুরু করেছে রাজউক। শুক্রবার (১০ মার্চ) সকালে দেখা যায়, ভবনের সামনের অংশে স্টিলের পাইপ দিয়ে অস্থায়ী সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে। বিস্ফোরণের ঝুঁকিপূর্ণ কুইন্স টাওয়ার শোরিংয়ের মাধ্যমে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
রাজউকের প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে শোরিংয়ের কাজ শুরু করেছে তারা। ভবনের ২৪টি কলামের মধ্যে নয়টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই নয়টি কলামের পাশে তারা শোরিংয়ের মাধ্যমে বিল্ডিংটি আপাতত স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে। পরবর্তী সময়ে ভবনটির ভবিষ্যৎ নিয়ে মূল্যায়ন কমিটি ন্যূনতম ৪৫ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। স্টিলের যে পাইপ দিয়ে সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে, তার একেকটি পাইপের আয়তন ৬ ইঞ্চি। আর লম্বায় ২০ ফুট। প্রয়োজন অনুযায়ী কেটে পাইপ বসানো হয়েছে।
এদিকে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল তাদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে বলেছে, কুইন স্যানিটারি মার্কেট-এর বেজমেন্টে ছিল রান্নাঘর, আর নিচতলায় ছিল খাবারের হোটেল। এ রান্নাঘরে কমার্শিয়াল গ্যাসের বড় লাইন ছিল। ২০০১ সালে গ্যাস সরবরাহের সংযোগস্থল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তিতাস। তবে সংযোগ লাইন অপসারণ করা হয়নি।
এ ছাড়া ওই ভবনের অন্যান্য ফ্লোরের ডমেস্টিক লাইন এখনো চলমান। ফলে এ লাইন সম্পূর্ণ বন্ধ না হয়ে সেখান দিয়ে গ্যাস লিক হয়ে বেজমেন্টের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোনো একটি কক্ষে জমে ছিল। সেখান থেকেই স্পার্কের মাধ্যমে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে। তারা আলামত সংগ্রহ করছে। তদন্তের পর জানাতে পারবে কেন এবং কীভাবে ঘটেছে বিস্ফোরণ।
এদিকে বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিস, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, ঢাকা মহানগরীর সিটিটিসির বোম্ব ডিসপোজাল টিম আলাদা আলাদাভাবে তদন্ত করছে। বিভিন্ন দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেই আসল কারণ জানা যাবে। তবে এখন পর্যন্ত বিস্ফোরক বা স্যাবটাজের কোনো আলামত সেখানে পাওয়া যায়নি বলেও পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করে সিটিটিসি।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) রাত পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩। ঘটনার পর থেকে দুদিন ধরে বন্ধ রয়েছে বিধ্বস্ত ভবনটির আশপাশের সব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। গুলিস্তান থেকে বংশালগামী দুটি লেনের মধ্যে একটি লেন দিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।
কেএম/এসএন