ঢাকার সব এলাকায় হবে পাড়া উৎসব: ডিএনসিসি মেয়র
ঢাকা শহরের সব এলাকায় পাড়া উৎসব করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর গুলশানের ৬০, ৬১ ও ৬২ নম্বর সড়কে পাড়া উৎসব উদ্বোধনকালে মেয়র এসব কথা বলেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, শহরে দেখা যায় প্রতিবেশীরা এক ভবনে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করেও কেউ কাউকে সেভাবে চেনেন না। নিজেদের মধ্যে কোনো যোগাযোগ নেই। তাই সবার সঙ্গে পরিচিত হতে এবং সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে এই পাড়া উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। পাড়া উৎসব প্রতিবেশীদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন ও সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাড়া উৎসবকে ছড়িয়ে দিতে চাই পুরো ঢাকা শহরে। পর্যায়ক্রমে ঢাকা শহরের সব এলাকাতেই পাড়া উৎসব আয়োজন করা হবে।
ডিএনসিসির সহযোগিতায় দ্বিতীয়বার এই পাড়া উৎসবের আয়োজন করে গুলশান সোসাইটি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিরোস ফর অল। শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এ উৎসবে ছিল দেশীয় পিঠার স্টল, বায়োস্কোপ, পুতুল নাচ, ম্যাজিক শো, স্বাস্থ্যসেবা স্টল, পাটের তৈরি পণ্য। এ ছাড়া আরও ছিল উইশ বোর্ড, শিশুদের ছবি আঁকার ক্যানভাস ও রং তুলি, ক্যারাম বোর্ড, দাবাসহ নানা ধরনের খেলার সামগ্রী। রাত ৮টা পর্যন্ত এ উৎসব চলবে।
বাসিন্দাদের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে অংশ নেয় বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত।
ডিএনসিসি মেয়র এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বিভিন্ন প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন ও বাসিন্দাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এসময় ডিএনসিসি মেয়র বিভিন্ন খেলায় অংশ নেন এবং গান গেয়ে নগরবাসীর সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।
মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, আজকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে গুলশানের সবার বাসায় বসে থাকার কথা ছিল। কিন্ত আজ সবাই বাসা হতে বেরিয়ে এসে এ উৎসবে যোগ দিয়েছে। তারা একে অন্যকে জিজ্ঞেস করছে তুমি কই থাকো। এই মিলনমেলার মাধ্যমে একটি বন্ধন তৈরি হয়েছে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আমরা চাই একটা সুন্দর সামাজিক বন্ধন ও একটি সুন্দর সমাজ। আমরা চাই সুস্থ সামাজিক চর্চা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ। কিন্তু আমরা পারছি না। আমরা ঠিকই জাতীয় সংগীত গাই আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। অথচ ময়লাটা রাস্তায় ফেলে দেই, লালবাতি জ্বলার পরেও আমরা রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে দেই। এ বিষয়গুলো মাথায় রেখেই এ পাড়া উৎসব।
নগরবাসীকে উদ্দেশ্য করে মেয়র বলেন, আসুন সবাই শহরকে ভালোবাসি। শহরের পরিবেশ রক্ষায় হর্ন বাজানো বন্ধ করি। গুলশান থেকেই হর্ন না বাজানোর চর্চা শুরু হোক।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, উন্নত বিশ্বের মতো ঢাকায়ও সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এই আয়োজনটি গ্রামের উৎসব ঢাকা শহরে ফিরে নিয়ে এসেছে। এখানে কোনো প্রতিযোগিতা নেই আছে শুধু হৃদ্যতা। প্রতিবেশীদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে বসবাস করতে এ ধরনের উৎসব আয়োজন ভূমিকা রাখবে।
বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম উৎসবে আসা বাসিন্দাদের উদ্দেশ্য খোলা ট্রাকে এডিস মশার উৎসস্থলের প্রদশর্নীর মাধ্যমে ডেঙ্গু সচেতনতা কার্যক্রমে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. মো. জোবায়দুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মফিজুর রহমান প্রমুখ।
আরইউ/এসজি