বেড়েছে ডিম মুরগি খাসির মাংস ও চালের দাম, কমেছে সবজির
এক সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগি ও খাসির মাংসের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। আর ধানের ভরা মৌসুমেও চালের প্রতি কেজিতে বেড়েছে তিন থেকে চার টাকা। তবে মাছ, ভোজ্যতেল, ডাল, চিনি, পেয়াজ, আদা, রসুন আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। দাম কমেছে শীত মৌসুমের বিভিন্ন সবজির।
বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষিমার্কেট, টাউনহলসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমনই তথ্য পাওয়া গেছে।
খাসির মাংসের দাম বেড়েছে ২০ টাকা:
শীত মৌসুমে সাধারণত জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন পিকনিক ও বিয়েসহ বিভিন্ন উৎসব শুরু হয়। সেই সময় এখনো আসেনি। তারপরও ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে গরু ও খাসির মাংসের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। কারওয়ান বাজারের সোহাগ মাংস বিতানের কর্ণধার সোহাগ ঢাকাপ্রকাশকে জানান, গরুর মাংস ৫৬০ থেকে ৫৮০ টাকা কেজি এবং খাসির মাংস ৯৫০ থেকে ৮৮০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। যা আগের সপ্তাহে প্রতি কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত কম ছিলো। তিনি বলেন, মোকামে গরু, খাসি কম। তেমন পাওয়া যায় না। তাই বেশি দামে কিনে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
মুরগির দাম বেশি ১৫ টাকা, ডিমে ৫:
মুরগির দাম বেড়েছে বলে জানা যায় সততা মুরগির আড়ৎ ও জনপ্রিয় পোলিট্রি ব্রয়লার হাউজ। জনপ্রিয় পোলট্রির ইলিয়াছ বলেন, ‘কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি মুরগির দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা কেজি, পাকিস্তানি কক ৩০০ টাকা, সাদা কক ২৭০, লাল লেয়ার ২৪০ ও দেশি মোরগ-মুরগি ৫২০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে কম দামে বিক্রি করা হয়েছে বলে জানান তিনি। আর ডিমের ডজন ১০৫ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ১০০ টাকা বিক্রি করা হয়।
মাছের দাম অপরিবর্তিত:
তবে রুই, কাতল, চিংড়িসহ অন্যান্য মাছ আগের দামই বিক্রি করা হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান। নাজিম উদ্দিন বলেন, রুই ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি, কাতলও ২৫০ থেকে ৩৪০ টাকা কেজি। চিংড়ি আকার ভেদে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। আর দেশি শিং মাছ ৭০০ টাকা কেজি, কই ৫০০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা যায়।
চালে বেড়েছে ৪ টাকা:
রাজধানীর কারওয়ান বাজার কিচেন মার্কেটের আল্লাহর দান স্টোরের নাজিম হোসেন চালের দামের ব্যপারে ঢাকাপ্রকাশকে জানান, ‘মিনিকেট চালের দাম ৬০ থেকে ৬৪ টাকা কেজি। আটাশ চাল ৪৬ থেকে ৫০ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে তিন থেকে চার টাকা।’ চাটখিল রাইস এজেন্সির বেলাল হোসেনও বলেন, বাজারে চালের বাজার চড়া। মিনিকেট ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, আটাশ ৪৮ থেকে ৪৯, নাজির চাল ৬৪ থেকে ৬৮ টাকা কেজি। এই বাজারে মোটা চাল বিক্রি তেমন না হওয়ায় রাখাও হয়না। তিনি আরও বলেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব চালের দাম বেড়েছে। কেজিতে তিন থেকে চার টাকা। একই কথা বলেন বাজারের এমআর টেড্রার্সের আনিছ খানও।
কৃষিমার্কেটের সাপলা রাইস এজেন্সির মাঈনুদ্দিনও বলেন, গত সপ্তাহে মিনিকেট ৫৮ টাকা কেজি বিক্রি করা হলেও আজ তা ৬০ টাকা কেজি, আটাশ ৪৬ টাকার জায়গায় ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, পাইজাম ৪৩ টাকা এবং মোটা স্বর্ণাচাল ৪১ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। উৎসব শুরু হয়নি। তারপরও বাড়ছে চালের দাম। সত্যি অবাক লাগছে বলে জানান তিনি।
পাইকারি বাজারের এই চাল প্রতি কেজিতে খুচরা বাজারে চার থেকে পাঁচ টাকা বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান। তারা আরও বলেন, বাজার ভেদে একই চাল খুচরা বাজারে দুই তিন টাকা কম বেশি বিক্রি করা হয়।
স্থিতিশীল ডাল তেল চিনি আটার দাম:
নিত্যপণ্যের মধ্যে ভোজ্যতেল আগের মতোই রুপচাদা পাঁচ লিটার ৭৩০ টাকা ও বসুন্ধরা ৭০০ টাকা, চিনি ৮৫ টাকা কেজি, দুই কেজি আটা ৯০ টাকা. ডাল ১১০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান কাওরান বাজারের জেনারেল স্টোরের আব্দুল কাদের।
সবজির কেজি ৫০ টাকা:
শীতের ভরা মৌসুমে সবজিতে স্বস্তি এসেছে বলে বিক্রেতারা জানান। তার বলছেন, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, বেগুণ ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, প্রতি ফুলকপি ৩০ থেকে ৫০ টাকা, শিমের কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, শসা ৩০ টাকা কেজি, শাকের আটি ১০ থেকে ১৫ টাকা। প্রায় সবজি ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা যায়।
জেডএ/এএস