স্বাভাবিক স্কুলে অস্বাভাবিক যানজট রাজধানীতে
কয়েকদিন ধরেই রাজধানীতে তীব্র যানজট। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কচ্ছপগতিতে চলে যানবাহন। বিশেষ করে স্কুলে ক্লাস আগের মতো স্বাভাবিক নিয়মে শুরুর পর থেকে যানজট আরও বেড়েছে। গত কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় আজ বুধবারও (১৬ মার্চ) সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে শুরু হয়েছে তীব্র যানজট। আর এতে নাকাল রাজধানীবাসী।
‘ঘাটারচর থেকে বাংলামটর যাব বলে বাসে উঠলাম। কারওয়ান বাজার পর্যন্ত পৌঁছাতে লাগল প্রায় ১ ঘণ্টা। অফিসে প্রতিদিনই দেরি হচ্ছে। একবার সতর্কও করেছে। চাকরিটা চলে যায় কি না সেই শঙ্কায় আছি। এ বয়সে তো আর চাকরিও পাব না। এটা কোনো মানুষের জীবন! আসা-যাওয়ায় লাগে প্রায় ৪ ঘণ্টা। ঘরে ফিরে খাওয়া-ঘুম; আবার একই অবস্থা। এ শহরে মানুষ থাকতে পারে না!’ কথাগুলো ফরিদুর রহমানের। বয়স ৫০ এর মতো। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন।
ফরিদুর রহমানের মতো ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ছানোয়ারও উঠেছিলেন স্বাধীন পরিবহনের বাসে। যাবেন পল্টন। জানালেন, ‘গত কিছুদিন ধরে যে জ্যাম চলছে রাজধানীতে, তা আগে দেখিনি। প্রতিদিনই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জ্যাম থাকে প্রধান প্রধান সব রাস্তার। শুধু মেট্রোরেল না, রাস্তায় বিভিন্ন বিভাগের উন্নয়ন কাজ চলছে, আবার স্কুল শুরু হয়েছে।’
স্বাধীন পরিবহনের ড্রাইভার মেহেদী বলেন, ‘এই গরমে জ্যাম বাড়ল। সবার মাথাই গরম। যাত্রীদের ভোগান্তি, আমাদেরও। কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে। জ্যামে ট্রিপের সংখ্যা কমে, আমাদের ইনকামও কমে যায়।’
মোহাম্মদপুরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য তারেক বলেন, ‘এই এলাকায় স্কুল-কলেজের সংখ্যা অনেক বেশি। সকালে যে জ্যাম হয়, এর মূল কারণ এটাই। একেকজন শিক্ষার্থীর জন্য একেকটা প্রাইভেট কার। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট থাকলে জ্যাম কম হতো। এই এলাকায় জ্যাম হওয়ার মূল কারণ কিন্তু প্রাইভেট কার। অনেকে রাস্তায় পার্ক করে রাখে।’
ফার্মগেটে এসে দেখা গেল, এক বাসযাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ওই এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক সদস্য কালাম জানান, ‘গত কিছুদিন ধরে যে যানজট দেখছি, সেটি করোনার আগের চেয়েও বেশি। অনেকে বলছিলেন, মেট্রোরেলের কাজ চলছে, তাই যানজট এমন আকার ধারণ করেছে; কিন্তু রাজধানীতে যানজটের একটা বড় কারণ স্কুলের টাইমিং। আমার ছেলে-মেয়েরাও স্কুলে পড়ে। তাদের প্রায় প্রতিদিনই লেট হয়। সকাল থেকে যে যানজট শুরু হয়, তার প্রভাব সারাদিন ধরে চলে।’
এসএ/