রুয়েটে বিদ্যার দেবী
কীভাবে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) এবার স্বরস্বতী পূজা পালন করলো? কী, কী হলো আয়োজনে? কারা ছিলেন? সেই গল্প
ছাত্র, ছাত্রীরা সবাই এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি, ফলে ফাঁকা রয়ে গিয়েছে হলগুলো। তারপরও রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট)-এ প্রশাসনিকসহ নানা কার্যক্রম চলছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজগুলো করে চলেছেন বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপকরা। রুয়েটে কেন্দ্রীয় মন্দির স্থাপন করা হচ্ছে। রুয়েট মন্দিরটি তৈরি হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠের দক্ষিণ পাশে। এই স্থানটি গেস্ট হাউজের উল্টো দিকে। সেখানেই প্যান্ডেল টানিয়ে অধ্যাপকরা, তাদের পরিবারের সদস্যরা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই এবারের স্বরস্বতী পূজা উদযাপন ও পালন করেছেন।
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট)’-এর ‘বাণী আর্চনা-১৪২৮’ হয়েছে ভালোভাবে।
সার্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক ড. সজল কুমার দাস।
সার্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে তাদের অনুষ্ঠানমালার শুরু হয়েছে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে। ২১ মাঘ ছিল সেদিন, শুক্রবার। প্রতিমা স্থাপন করেছেন তারা সন্ধ্যা ছয়টা ১ মিনিটে। পরদিন ৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার মঙ্গল মট স্থাপন ও পূজারম্ভ হয়েছে সকাল নয়টা ১ মিনিটে। এরপর পূস্পাঞ্জলি অর্পণ হয়েছে সকাল নয়টা ৩১ মিনিটে। গীতাযজ্ঞ হয়েছে সকাল ১০টা ৩১ মিনিটে। মহাপ্রসাদ বিতরণ করেছেন তারা দুপুর ১২টা ৩১ মিনিটে। সন্ধারতি হয়েছে সন্ধ্যা ৫টা ৫১ মিনিটে।
প্রধান অতিথি ছিলেন রুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: রফিকুল ইসলাম সেখ। বিশেষ অতিথি ছিলেন-ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার ড. মো: সেলিম হোসেন, ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো: রবিউল আওয়াল, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন পরিচালক ড. মিয়া মো: জগলুল সাদত। সার্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন ড. নীরেন্দ্র নাথ মুস্তফী।
রুয়েট মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সজল কুমার দাস জানিয়েছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ও ছাত্র, ছাত্রীদের অনুপস্থিতিতে আমাদের খারাপ লেগেছে। তাই এবারের আয়োজন স্বাভাবিকভাবেই আমরা ছোট আকারে করতে চেয়েছি। বিশ্বস্ত থেকেছি সরকারের স্বাস্থ্যগত নিয়মকানুনগুলোর প্রতি।’ এরপর তিনি স্বরস্বতী পূজা কীভাবে আয়োজন করলো রুয়েট, সেই বিবরণে গিয়েছেন-‘ছাত্র, ছাত্রীদের অভাবের সঙ্গে আমাদের মধ্যে আরো কষ্ট নিয়ে এলো আগের দিন থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি। তবে ঈশ্বরের দেওয়া এই বাধাগুলোর মধ্যেও রুয়েট সার্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদ যেভাবে বিদ্যার দেবীর আরাধনাকে সফল করেছেন তাদের সবাইকে এজন্য আমি ধন্যবাদ জানাই। আমাদের উপাচার্য স্যার অধ্যাপক ড. মো: রফিকুল ইসলাম সেখ শুরু থেকে একেবারে শেষক্ষণ পর্যন্ত সবভাবে সাহায্য করে গিয়েছেন, সঙ্গে ছিলেন সবকিছুতে। প্রশাসনের কর্মযজ্ঞে এই বছরের অন্যতম সেরা আয়োজনগুলোর একটি সফল করেছে রুয়েট।’
অনেক কাজ করেছেন ড. সজল কুমার দাসও। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত স্বরস্বতী পূজা ২০২২’র জন্য খেটেছেন। মধ্যমণি হয়ে সবাইকে নিয়ে বাণী আর্চনা, প্রতিমা স্থাপন, মঙ্গল মট স্থাপন, পূজারাম্ভ করেছেন, শেষ পর্যন্ত পূজা করেছেন হিন্দু ও অন্যান্য ধমের সহকর্মী, সহযোগী এবং বন্ধুদের নিয়ে; গীতাযজ্ঞ, মহাপ্রসাদ বিতরণ ও সন্ধারতি করেছেন তারা। তবে তিনি নিজের কথা না বলে অধ্যাপকদের সবার সাহায্যের কথাই বার, বার বললেন।
রুয়েটের এই সুন্দর আয়োজনে প্রধান অতিথি মূল্যবান বক্তব্য প্রদান করেছেন উপাচার্য স্যার। আরো আলোচনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টার, ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক এবং সার্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা।
ও, ড. সজল কুমার দাস জানিয়েছেন এবারের রুয়েট স্বরস্বতী পূজা আয়োজন ও পালনানুষ্ঠানে রাজশাহীতে ভারতীয় দূতাবাসের সহকারী হাই কমিশনের প্রধান-হাই কমিশনার সঞ্জীব কুমার ভাটি এসেছেন। তিনি ধর্মীয় আচারগুলো পালন করেছেন এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাইকে নিজের ও দেশের পক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আরো ছিলেন ধর্মীয় ব্যক্তিরা।
ছাত্র, ছাত্রী ও শিক্ষকরা সবাই রুয়েটের বিদ্যায় উন্নতির আশা পোষণ করেছেন পূজায়। তারা খুব ভালো লেগেছে বলে জানিয়েছেন।
ওএস।