ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে ছাত্র ফ্রন্টের পোস্টারিং, তুলে ফেলেছে প্রশাসন

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) গত ০৮ আগস্ট ১০০তম সিন্ডিকেটে সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন। সিন্ডিকেটের সেই সিদ্ধান্তের উপেক্ষা কর বামপন্থী ছাত্রসংগঠন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সংগঠনটির চার দশক পূর্তিতে পোস্টারিং করেছে ক্যাম্পাসের ভেতরে। এতে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের দ্বিতীয় তলায় উঠতেই দেয়ালে এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে এই পোস্টার লাগানো হয়েছে।
পরবর্তীতে আজ (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল পাঁচটার দিকে প্রক্টোরিয়াল বডির উপস্থিতিতে সেই পোস্টারগুলো তুলে ফেলা হয়েছে।
জানা যায়, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (বাসদের) উদ্যোগে গত রাতে (১২ ফেব্রুয়ারি) এই পোস্টারিং করা হয়।
এ ব্যাপারে ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈমুর রহমান বলেন, 'জুলাই বিপ্লবে আমাদের অন্যতম দাবি ছিল লেজুড়ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যে জায়গায় সকল রাজনৈতিক দলের ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ সে জায়গায় সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের পোস্টার শিক্ষার্থীদের উদ্বিগ্ন করে তুলবে বলে আমি মনে করছি। তাই কুবি প্রশাসনকে বলবো খুব দ্রুত এর সঠিক তদন্ত করে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করতে।'
ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা নিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন কুমিল্লা জেলার সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (বাসদের) সমন্বয়ক আবদুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, 'কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ কিনা তা আমার জানা নেই, তবে ছাত্ররাই দেশ চালাচ্ছে। ছাত্ররা রাজনীতি না করলে কারা করবে? নিরক্ষররা? ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত অগণতান্ত্রিক। ছাত্রদেরই রাজনীতি করতে হবে। আমাদের দেশে ছাত্র রাজনীতির নামে সন্ত্রাস চলেছে, কিন্তু সন্ত্রাসী আর ছাত্র রাজনীতি এক নয়। গত ৫৩ বছরে ছাত্রদের সন্ত্রাসী শেখানো হয়েছে। ছাত্ররাই আগামীতে দেশ চালাবে, তাই তাদের মধ্যে রাজনীতি থাকা জরুরি। প্রতিটি ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসমুক্ত অবাধ ছাত্র রাজনীতি থাকা উচিত।'
ভবিষ্যতে কুবিতে তাদের এই ধরনের কার্যক্রম চলমান থাকবে কি-না জানতে চাইলে বলেন, 'দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর অনেক ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হয়েছে, যা আমরা অন্যায় মনে করি। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও আমরা এর প্রতিবাদ করব এবং সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানাব।'
এ ব্যাপারে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. নাহিদা বেগম বলেন, 'ওরা পোস্টার লাগিয়েছে, আমরা এটা নিয়ে বসেছি। শহরে যিনি কেন্দ্রীয় দায়িত্বে রয়েছেন তাকে ফোন দেয়া হয়েছে। পোস্টার ওঠানোর জন্য সিকিউরিটি পাঠিয়ে দিয়েছি।'
সামনের দিনে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'এমনিতেই তো ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ, আমাদের জায়গা থেকে আমরা স্ট্রিক্ট থাকার চেষ্টা করব।'
