ঢাবির এফ রহমান হল ক্যান্টিনে ছাত্রলীগ নেতাদের বাকি ১৮ লাখ টাকা
ঢাবির স্যার এ এফ রহমান হল (ইনসটে: হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ ও সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার মুন)। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্যার এ এফ রহমান হলের ক্যান্টিনে ১৭ লাখ টাকা বাকি খেয়েছেন ছাত্রলীগের নেতারা। এর মধ্যে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ ও সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার মুন দুজনেই পৌনে ৬ লাখ টাকার মতো বাকি খেয়েছেন।
আজ শুক্রবার (১৬ আগস্ট) ওই হলের ক্যান্টিনে ছাত্রলীগ নেতাদের বাকির একটি তালিকা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের হাতে আসে। সেখানে দেখা যায়, হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ একই বাকি খেয়েছেন ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা আর সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার মুন খেয়েছেন ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা।
এছাড়াও তালিকায় রয়েছে হল ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী আলী আহসান রিফাতের নাম, তার বাকি ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানেন অনুসারী বলে জানা গেছে। স্যার এ. এফ রহমান হলের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও ফাউ খেয়েছেন আরো ৪৬ জন। তারা প্রত্যেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।
বাকির বিষয়ে ক্যান্টিন মালিক বাবুল বলেন, ছাত্রলীগের নেতারা দীর্ঘদিন যাবত বাকিতে খেতেন। তারা নানা সময়ে আমাকে হুমকি ধামকি দিতেন। এমনকি ছাত্রলীগের নেতাদের জন্য প্রতিদিন ১৫-২০ টি খাবার ‘স্পেশাল ভাবে‘ রান্না করা হতো বলে স্বীকার করেছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, রিয়াজের রুমে প্রতিদিন ৫-১০ টি খাবার যেত। যেহেতু তারা টাকা দিবে না তাই আমি খাতায় লিখেও রাখি নাই। আমি একটি রাউন্ড ফিগার করে হিসাব করেছি। এখন তারা আমাকে পথে বসিয়ে পালিয়েছে। আমি প্রভোস্ট অফিসে এই লিস্ট জমা দিয়েছি। আমি এর বিচার চাই, আমার টাকা ফেরত চাই।
তবে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ক্যান্টিন মালিক বাবুলের বিরুদ্ধেও আছে নানা অভিযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, বাবুলের খাবারের মান খুবই নিম্নমানের। একই সাথে সে সব সময় ছাত্রলীগের নেতাদের তেলবাজি করতেন। অনেক সময়ই তাদের মাধ্যমে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করতেন।
দুপুর দেড়টার পর ক্যান্টিনে উচ্ছিষ্ট ছাড়া কিছুই পাওয়া যেত না। অথচ বাবুল নেতাদের জন্য স্পেশাল খাবার রান্না করতেন বলেও জানান ওই শিক্ষার্থী।
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. রফিক শাহরিয়ার বলেন, আমিও বিষয়টি দেখেছি কিছুক্ষণ আগে। আমার কাছে সে অভিযোগ দেয়নি। এর আগেও আমি ক্যান্টিন ঘুরে তার খাবার মান নিয়ে জিজ্ঞেস করেছি। তার কাছে কেউ বাকি খায় কিনা জানতে চেয়েছি। কিন্তু সে বরাবরই আমাকে বলেছে তার কাছে কেউ বাকি খায় না। আমি তাকে নেতাদের নাম দিতে বলেছিলাম, সে দেয়নি।
তিনি বলেন, এত টাকা বাকি খেলে সে কিভাবে ক্যান্টিন পরিচালনা করেছে আমি জানি না। সে আগের প্রভোস্টের কাছে কোন অভিযোগ দিয়েছিল কিনা সেটাও দেখতে হবে। এত টাকক বাকি থাকার পরেও সে কিভাবে ক্যান্টিন চালিয়েছে সেটাও দেখার বিষয়। এটি তদন্তের বিষয়। তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এ বিষয়ে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের ফোন নম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।