মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের প্রবেশ, প্রতিবাদে উত্তাল বুয়েট
শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ। ছবি: সংগৃহীত
মধ্যরাতে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশের জেরে আন্দোলনে নেমেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ ও ৩১ মার্চের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাসহ একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা৷
শুক্রবার (২৯ মার্চ) দুপুর ২টা থেকে বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধসহ ৬ দফা দাবি ও কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীরা। দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবিগুলো হলো-
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে ২৮ মার্চ মধ্যরাতে রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক ২১তম ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বিকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার ও হলের সিট বাতিল করতে হবে।
২. ইমতিয়াজের সঙ্গে বুয়েটের বাকি যেসব শিক্ষার্থী জড়িত ছিলেন তাদের বিভিন্ন মেয়াদে হল ও টার্ম বহিষ্কার করতে হবে।
৩. রাজনীতি সংশ্লিষ্ট বহিরাগত যারা ক্যাম্পাসে ঢুকেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, তারা কেন ও কীভাবে প্রবেশের অনুমতি পেলেন- এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট জবাবদিহি দিতে হবে বুয়েট প্রশাসনকে।
৪. ১ ও ২ নম্বর দাবি শনিবার (৩০ মার্চ) সকাল ৯টার মধ্যে বাস্তবায়ন করা না হলে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ) পদত্যাগ চান।
৫. ক্যাম্পাসে মধ্যরাতে বহিরাগতদের প্রবেশের কারণে শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। এর প্রতিবাদ হিসেবে আগামীতাল শনিবার ও পরদিন রোববার টার্ম ফাইনালসহ সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করা হবে।
৬. আন্দোলনরত বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো রকম হয়রানিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না, এই মর্মে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।
লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা বলেন, বুয়েটের নীতিমালা অনুযায়ী এখানে সাংগঠনিক রাজনীতি নিষিদ্ধ। এমন একটি ক্যাম্পাসে রাতের আঁধারে ঘটে যাওয়া এত বড় একটি রাজনৈতিক সমাগম এবং বহিরাগতদের আগমন বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদার প্রতি অপমানজনক।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তর এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়ার দায় এড়িয়ে যেতে পারে না। ঘটনার দেড় দিন পার হলেও ছাত্রলকল্যাণ পরিদপ্তর থেকে ঘটনার কোনো সদুত্তর ও জবাবদিহিতা শিক্ষার্থীদের কাছে আসেনি।
জড়িতদের বহিষ্কারসহ ছয় দফা দাবিতে আগামী ৩০ ও ৩১ মার্চ ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণাও দেন শিক্ষার্থীরা। ৩০ মার্চ সকাল ৮টা থেকে বুয়েটের সব প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন শিক্ষার্থীরা।