শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৮ বছরে পদার্পণ

ছবি সংগৃহিত

‘বিশ্ববিদ্যালয় হবে শহর থেকে দূরে, নির্জন, কোলাহলমুক্ত, মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে, যেখানে প্রকৃতির মধ্যে শিক্ষার্থীরা বেড়ে উঠবে, প্রকৃতিই হবে তাদের শিক্ষক।’ জগদ্বিখ্যাত দার্শনিক রুশোর এই অভিব্যক্তির অপূর্ব নিদর্শন নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব লীলাভূমিখ্যাত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে প্রকৃতির কোল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আয়তনে দেশের সর্ববৃহতৎ ক্যাম্পাস।

পাহাড়ে ঘেরা অপরূপ সৌন্দর্যের ক্যাম্পাস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। বিশ্বের একমাত্র শাটলের ক্যাম্পাস হিসেবেও পরিচিত। চট্টগ্রাম শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে গাছগাছালি আর পাহাড়ের কোলে ১৯৬৬ সালের ১৮ নভেম্বর হাটহাজারী উপজেলার জোবরা গ্রামে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করা এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। আয়তনের দিক থেকে এখন পর্যন্ত দেশের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয়। প্রায় ২৩০০ একরের বৃহৎ পাহাড়ি ও সমতল ভূমি নিয়ে যা বিস্তৃত। আজ ৫৭ বছর শেষ করে ৫৮ বছরে পদার্পণ করেছে সবুজঘেরা এ ক্যাম্পাস। গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের সাথে আছে কিছু কালো অধ্যায়ও।

১৯৬৬ সাল বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস ও অর্থনীতি—এ চারটি বিভাগ, ৭ জন শিক্ষক ও ২০০ শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হয়েছিলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা। চবির প্রথম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান মল্লিক। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯টি অনুষদের অধীনে বিভাগ আছে ৫২টি। শিক্ষক কর্মচারী আছে প্রায় ১ হাজার। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৮ হাজার।

শুরু থেকেই দেশের অন্যতম এ বিদ্যাপীঠ জন্ম দিয়েছে বহু গুণীজনের। উপমহাদেশের খ্যাতিমান ভৌতবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. জামাল নজরুল ইসলাম, নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অনুপম সেন, অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক আবুল ফজল, আলাউদ্দিন আল আজাদ, সৈয়দ আলী আহসান, মুর্তজা বশীর, ঢালী আল মামুন, সাবেক ইউজিসি চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মান্নানসহ বহু কীর্তিমান মনীষী জ্ঞানের আলো ছড়িয়েছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার পেছনে রয়েছে এক অনবদ্য ইতিহাস। বিশ শতাব্দীর শুরুর দিকে চট্টগ্রাম বিভাগে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় না থাকায় চট্টগ্রামের অধিবাসিরা স্থানীয়ভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন অনুভব করে। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ ডিসেম্বর, কলকাতায় অনুষ্ঠিত জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সর্বভারতীয় সম্মেলনে মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী সভাপতির ভাষণে চট্টগ্রাম অঞ্চলে একটি ‘ইসলামিক ইউনিভার্সিটি’ নির্মাণের কথা উপস্থাপন করেন এবং একই লক্ষ্যে তিনি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার দেয়াঙ পাহাড়ে বিশ্ববিদ্যালয় নির্মানের জন্য ভূমি ক্রয় করেন। দুই বছর পর, ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ ফেব্রুয়ারি নূর আহমদ চেয়ারম্যান বঙ্গীয় আইন পরিষদে চট্টগ্রামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আনুষ্ঠানিক দাবি উত্থাপন করেন।

ষাটের দশকে তৎকালীন পাকিস্তানের দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (১৯৬০-১৯৬৫) প্রণয়নকালে চট্টগ্রামে একটি ‘বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মানের স্থান হিসেবে শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত চট্টগ্রাম সরকারি কলেজকে সম্ভাব্য ক্যাম্পাস হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।

চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের স্থানে এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত পরিবর্তিত হওয়ার পর, ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ মে চট্টগ্রামবাসীর উদ্যোগে স্থানীয় মুসলিম হলে এক প্রতিবাদসভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ প্রধান অতিথির ভাষণে চট্টগ্রামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পক্ষে মত প্রকাশ করেন এবং তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন।

১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ নভেম্বর, ফজলুল কাদের চৌধুরী পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পীকার মনোনীত হন। প্রথমদিকে এ বিশ্ববিদ্যালয় সিলেট, কুমিল্লা ও নোয়াখালিতে স্থাপনের পরিকল্পনা করা হলেও ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দের ১২ ডিসেম্বর, রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খানের অনুপস্থিতিতে মন্ত্রীসভার এক বৈঠকে সভাপতিত্বকালে ফজলুল কাদের চৌধুরী কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী এটিএম মোস্তফাকে বিশ্ববিদ্যালয়টি কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রামে স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর এম ওসমান গণিকে চেয়ারম্যান এবং ডক্টর কুদরাত-এ-খুদা, ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, এম ফেরদৌস খান ও ডক্টর মফিজউদ্দীন আহমদকে সদস্য নির্বাচন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্থান নির্বাচন কমিশন’ গঠিত হয়। এই কমিশন সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করে হাটহাজারী উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের জঙ্গল পশ্চিম-পট্টি মৌজার নির্জন পাহাড়ি ভূমিকে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান হিসেবে সুপারিশ করে। ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ আগস্ট পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩ ডিসেম্বর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরের প্রাক্তন কিউরেটর ড. আজিজুর রহমান মল্লিককে (এআর মল্লিক) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প-পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। ড. আজিজুর রহমান মল্লিক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ছিলেন। ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ ডিসেম্বর, এক সরকারি প্রজ্ঞাপন বলে তৎকালীন পাকিস্তান শিক্ষা পরিদপ্তরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প অফিসে বদলি করা হয়। স্থপতি মাজহারুল ইসলামের ‘বাস্তকলা’ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মাষ্টারপ্ল্যান তৈরি করা হয়। প্রাথমিকভাবে ১টি দ্বিতল প্রশাসনিক ভবন, বিভাগীয় অফিস, শ্রেণিকক্ষ ও গ্রন্থাগারের জন্য একতলা ভবন তৈরি করার পাশাপাশি শিক্ষক ও ছাত্রদের আবাসনের ব্যবস্থাও করা হয়। অবশেষে ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। ১৮ নভেম্বর তাই 'বিশ্ববিদ্যালয় দিবস' পালিত হয়ে থাকে।

শাটল ট্রেনের ক্যাম্পাস

শাটল ট্রেনের ক্যাম্পাস বললে মনে আসবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। চবির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ এই শাটল ট্রেন। বিশ্বের একমাত্র শাটল ট্রেনের ক্যাম্পাস এখন চবি। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য ১৯৮০ সালে চালু করা এটি। শিক্ষার্থীর তুলনায় ট্রেন কম হওয়ায় বেশিরভাগ সময় ভোগান্তিতে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। বর্তমানে ২টি শাটল ট্রেন প্রতিদিন মোট ১৪ বার শহর-ক্যাম্পাস-শহর আসা যাওয়া করে। প্রতিটি শাটলে দশটি করে বগি আছে। ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর যাতায়াতে যা খুবই সামান্য। প্রতি বছর জ্যামিতিক হারে শিক্ষার্থী বাড়লেও বাড়েনি শাটলের শিডিউল। বরং লোকবলের সংকটে করোনা-পরবর্তী বন্ধ করে দেওয়া হয় নিয়মিত শিডিউলের ডেমু ট্রেন। প্রতিদিন প্রায় ১৪- ১৬ হাজার শিক্ষার্থী নিয়মিত যাতায়াত করে।

আবাসিক হল

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ১৫টি আবাসিক হল, এর মধ্যে ছাত্রদের জন্য চবির আলাওল হলে আসন রয়েছে ২৬০টি, এ এফ রহমান হলে ২৫৭টি, শাহজালাল হলে ৪৭৫টি, শাহ আমানত হলে ৬৩২টি, সোহরাওয়ার্দী হলে ৩৭৫টি, শহীদ আব্দুর রব হলে ৫০৯টি ও মাস্টারদা সূর্যসেন হলে ১৭৬টি আসন রয়েছে। এছাড়া দীর্ঘদিন পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হল আংশিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে।

ছাত্রী হলগুলোর মধ্যে শামসুন নাহার হলে ৪৮১টি, প্রীতিলতা হলে ৫৩১টি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলে ৫০৮টি, জননেত্রী শেখ হাসিনা হলে ৭৫০টি (আংশিক নির্মাণাধীন), মাস্টারদা সূর্যসেন হলে (আংশিক) ৩৯টি আসন রয়েছে। এদিকে ছাত্রীদের জন্য বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল চালু করা হয়েছে।

বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগসমূহ:

কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ—
বাংলা বিভাগ, ইংরেজি বিভাগ, ইতিহাস বিভাগ, দর্শন বিভাগ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, আরবি বিভাগ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, নাট্যকলা বিভাগ, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, পালি বিভাগ, সংস্কৃত বিভাগ, সংগীত বিভাগ, বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগ।

বিজ্ঞান অনুষদ—
পদার্থবিদ্যা বিভাগ, রসায়ন বিভাগ, গণিত বিভাগ, পরিসংখ্যান বিভাগ, ফলিত ও পরিবেশ রসায়ন।

ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ—
একাউন্টিং বিভাগ, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ, ফাইন্যান্স বিভাগ, মার্কেটিং বিভাগ, হিউম্যান রিসোর্স এন্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগ ও ব্যাংকিং এন্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগ।

সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ—
অর্থনীতি বিভাগ, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, সমাজতত্ত্ব বিভাগ, লোকপ্রশাসন বিভাগ, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগ ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ।

জীববিজ্ঞান অনুষদ—
প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগ, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগ, মনোবিজ্ঞান বিভাগ ও ফার্মেসি বিভাগ।

ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ—
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ইলেকট্রনিকস ও কমিউনিকেশন
ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ।

মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদ—
ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস, ওশানোগ্রাফি বিভাগ ও ফিশারিজ বিভাগ। ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেসের অন্তর্ভুক্ত বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ।

এছাড়া চারুকলা ইন্সটিটিউটের আওতাধীন চারুকলা বিভাগ, আধুনিক ভাষাবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট আওতাধীন ভাষা ও ভাষাতত্ত্ব, ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন রিসার্চের আওতাধীন শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগ এবং আইন অনুষদের আওতাধীন রয়েছে আইন বিভাগ।

কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চট্টগ্রামের সর্ববৃহৎ গ্রন্থাগার, যা দেশের সবচেয়ে সমৃদ্ধ গ্রন্থাগারগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই গ্রন্থাগারে বর্তমান সংগ্রহ সংখ্যা প্রায় ৩.৫ লাখ, যার মধ্যে রয়েছে বিরল বই, জার্নাল, অডিও-ভিজ্যুয়াল উপাদান, পাণ্ডুলিপি এবং অন্ধদের জন্য ব্রেইল বই।

৫৮ বছরে ৪ সমাবর্তন

৫৭ শেষ করে ৫৮ তে পদার্পণ করলেও চবির ইতিহাসে সমাবর্তন হয়েছে মাত্র ৪টি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ২৮ বছর পর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম দায়িত্ব থাকাকালীন ১৯৯৪ সালে প্রথম সমাবর্তন হয়। এরপর ১৯৯৯ সালে দ্বিতীয়, ২০০৮ সালে তৃতীয় এবং সর্বশেষ ২০১৬ সালে ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় চতুর্থ সমাবর্তন। বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার কয়েকবার সমাবর্তনের ঘোষণা দিয়েও ব্যর্থ।

কর্মসূচি

দিবসটি উদযাপনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সেজেছে বর্ণিল সাজে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও স্থাপনাগুলোতে করা হয়েছে আলোকসজ্জা। সাবেক ও বর্তমানদের নিয়ে উদযাপনে নেয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি।

শনিবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে আনন্দ শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিবসের কার্যক্রম। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অপর্ণের পর সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে হবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন চবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে।

কেক কাটার পর বেলা ১১টার দিকে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব ও চবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. মো. আবদুল করিম।

 

 

 

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত